কক্সবাজার: দুইদিনের টানা ভারী বর্ষণে কক্সবাজার শহরের ৯০ শতাংশ এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। শহরের প্রধান সড়ক, হোটেল মোটেল জোন, সৈকত সড়কসহ প্রায় ৩০টি উপ-সড়ক বৃষ্টির পানিতে ডুবে গেছে।
শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৪টা পর্যন্ত অন্তত ২৫ হাজার পর্যটক আটকা পড়েছেন হোটেলকক্ষে। এতে ভ্রমণে ভোগান্তিতে পড়েন সৈকত আসা পর্যটকেরা।
এর আগে বৃহস্পতিবার থেকে ভারী বর্ষণ শুরু হলে শহরের হোটেল-মোটেল জোনসহ সৈকত এলাকার অধিকাংশ এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দেয়।
বিশেষ করে বেশ কিছু খাবার হোটেল, রিসোর্ট ও কটেজে পানি ঢুকে পড়ায় অনেকেই খাবার-দাবার নিয়েও দুর্ভোগে পড়েছেন। তবে অনেক পর্যটককে হাঁটু পানি মাড়িয়ে সৈকতে নামতেও দেখা গেছে। তারা বৃষ্টিকেও উপভোগ করছেন।
পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা বলছেন, জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পর গত সপ্তাহ থেকে কক্সবাজারে পর্যটক আসা শুরু হয়েছিল। শুক্রবার ও শনিবার দুই দিন সাপ্তাহিক ছুটিতে অর্ধলক্ষাধিক পর্যটক কক্সবাজার আসার কথা। কিন্তু বৈরী আবহাওয়ার কারণে অনেকে বুকিং বাতিল করেছেন। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার রাতে ও শুক্রবার সকালে অন্তত ৩০ হাজার পর্যটক কক্সবাজারে ভ্রমণে আসেন।
কিন্তু টানা প্রবল বর্ষণে পর্যটন জোনের রাস্তাঘাট ডুবে থাকায় কলাতলী এলাকার হোটেল-মোটেল, রিসোর্ট ও কটেজের কক্ষে বন্দী হয়ে পড়েছেন পর্যটকেরা।
বৈরী আবহাওয়ায় সমুদ্র উত্তাল থাকায় জেলা প্রশাসন সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে লাল নিশানা উড়িয়ে পর্যটকদের সমুদ্রে নামতে সতর্কতা জারি করছে বলে জানান জেলা প্রশাসনের বিচকর্মী বেলাল হোসেন। তিনি বলেন, এর পরেও শতশত পর্যটক রাস্তাঘাটে হাঁটু পানি মাড়িয়ে সৈকতে নামছেন। এমনকি তাদের বড় একটি অংশ সমুদ্রস্নানে নেমে পড়ছেন।
হোটেল ও রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির সহ সভাপতি মো. আলী জানান, দুই বছর ধরে বৃষ্টি নামলেই কলাতলী পর্যটন জোনে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। এতে বেড়াতে আসা পর্যটকেরা দুর্ভোগে পড়ছেন।
কক্সবাজার হোটেল-মোটেল, রিসোর্ট ও গেস্টহাউস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার বলেন, পাহাড়ের পাদদেশে গড়ে উঠা পর্যটন জোনে অপরিকল্পিত উন্নয়ন, নালা-নর্দমা পরিষ্কার না হওয়ায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। এছাড়া নির্বিচারে পাহাড় কাটার কারণে পাহাড় ধুয়ে মাটি ও বালি এসে নালা ভরে যাওয়ার কারণেও এমন জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে।
এদিকে গত বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে শুরু হওয়া টানা ভারী বর্ষণ ও ঝোড়ো হাওয়া অব্যাহত আছে। এতে শহরের প্রধান সড়কসহ অধিকাংশ উপসড়ক ডুবে গেছে। ফলে যানবাহন চলাচলও বিঘ্ন হচ্ছে।
কক্সবাজার আবহাওয়া কার্যালয়ের সহকারী আবহাওয়াবিদ আবদুল হান্নান বলেন, বৃহস্পতিবার বেলা ৩টা থেকে শুক্রবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বেলা ৩টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় কক্সবাজারে ৫০১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। চলতি মৌসুমে এটিই এক দিনে সর্বোচ্চ বৃষ্টির রেকর্ড।
বাংলাদেশ সময়: ০১২১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২৪
এসবি/এসএম