ঢাকা: গরিব পরিবারের সন্তান হলেও হঠাৎ করেই বিত্তশালী হয়ে ওঠা মাহমুদুল হাসান মামুন ওরফে জামাই মামুমন এখন রাজধানী জুরাইনের আলোচিত নাম।
এলাকাবাসীর অভিযোগ ভূমি ও বাড়ি দখল এবং চাঁদাবাজি করেই এ রমরমা অবস্থা এখন তার।
কয়েক বছর আগে পূর্ব জুরাইন মিষ্টির দোকান সংলগ্ন একটি বাড়ি রাজনৈতিক ক্ষমতা দেখিয়ে জোর করে কেনার চেষ্টার অভিযোগ ওঠে মৃত মো. মহসীন মিয়া ও মৃত লিলি বেগম দম্পতির সন্তান মামুনের ওপর। পরে এ ঘটনায় ভয়-ভীতি ও হুমকি দেওয়ার অভিযোগ এনে ভুক্তভোগী বাড়ির মালিক খায়রুন আক্তার মুক্তি কদমতলী থানায় জিডি করেন। শুধু তাই নয়, দেয়াল নিয়ে মারাপিটের ঘটনায় একই থানায় তার নামে আরেকটি জিডি করেন সৈয়দা বুশরা তাবাসসুম নামে অপর এক নারী।
গত ১৮ আগস্ট ভয়-ভীতি ও হুমকি দেখানোর অভিযোগে কদমতলী থানাতেই জিডি করেন মারুফা আক্তার নামে অপর এক নারী। শুধু তাই নয় কোটাবিরোধী আন্দোলনের সময় গত ১৯ জুলাই মো. মাসুদ নামে এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা করা হয়। পরে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর ভুক্তভোগীর স্ত্রী হেনা বেগম বাদী হয়ে গত ৪ সেপ্টেম্বর কদতলী থানায় মামলা করেন। এ মামলার ৯৭ নাম্বার আসামি করা হয় মামুন ওরফে জামাই মামুনকে। অভিযোগ রয়েছে মামুনের সব অপকর্মের সহায়ক ছিলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৫৩ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তারই শ্বশুর নূর হোসেন।
ভুক্তভোগী খায়রুন আক্তার মুক্তি অভিযোগ করে জানান, কদমতলী থানাধীন রাজধানীর পূর্ব জুরাইন মিষ্টি দোকান সংলগ্ন একটি বাড়ির মালিক তিনি। প্রতিবেশী মামুন তার বাড়ি কেনার প্রস্তাব করেন। তাতে রাজি না হওয়ায় তিনি বিভিন্ন লোক মারফত মুক্তিকে ফোনে ভয়ভীতি দেখানোসহ হুমকি দেয়।
গোলাম মোস্তফা নামে অপর এক ভুক্তভোগী অভিযোগ করে জানান, পূর্ব জুরাইনের ১৮০১ নং বাড়ির আড়াই কাঠা জমির মালিক তার আত্মীয় সেলিমা কাশেম। ওই জায়গায় বাড়ি নির্মাণের সময় সেলিমাসহ অন্যান্যদের প্রাণনাশের হুমকি দেয় ও বাড়িটি তার বলে দাবি করেন মামুন। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী সেলিমার পক্ষে তিনি বাদী হয়ে মামলা করেন। এরপর আদালত শান্তি ও শৃঙ্খলা বজায় রেখে বাড়ি নির্মাণের আদেশ দিলেও এ আদেশ না মেনে বিভিন্নভাবে বাধার সৃষ্টি করে মামুন। শুধু তাই নয় অভিযোগ রয়েছে মামুন রাজধানী কদমতলী থানাধীন বউ বাজার এলাকার দেলোয়ার ও আরিফকে নিয়ে বাহিনী গড়ে এলাকায় মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি, জুয়াবাণিজ্য, সন্ত্রাসী, ছিনতাই, হত্যা ও অপহরণসহ বিভিন্ন অপরাধ কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছিল। তবে আওয়ামী লীগের রাজনীতির ছত্রছায়ায় থাকায় কেউ মুখ খুলতে সাহস করেনি।
যেহেতু সরকারের পতন হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে দেশ সুশাসনের পথে হাঁটছে। এখন এলাকাবাসীর দাবি, বিগত সরকারের দোসরকে আইনের আওতায় এনে বিচার করা হোক। এ বিষয়ে অভিযুক্ত মামুনের মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।
কদমতলী থানার ইন্সপেক্টর তদন্ত সাফায়েত হোসেন এ প্রতিবেদককে জানান, ওসি সাহেব ছুটিতে আছেন। এমন নামের ব্যক্তির গ্রেপ্তার হয়েছেন এমন বিষয়ে জানা নেই। তবে অভিযোগের বিষয়ে সবসময়ই তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়ে থাকে। এ ক্ষেত্রে কারোর ছাড় পাওয়ার সুযোগ নেই।
বাংলাদেশ সময়: ১২৪৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২৪
টিএ/জেএইচ