ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

চোখ রাঙাচ্ছে তিস্তা, বন্যার শঙ্কা বাম তীরে 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৩২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২৪
চোখ রাঙাচ্ছে তিস্তা, বন্যার শঙ্কা বাম তীরে 

লালমনিরহাট: উজানের পাহাড়ি ঢল আর কয়েকদিনের টানা ভারী বৃষ্টিতে তিস্তা নদীর পানি প্রবাহ বেড়ে বিপৎসীমার কাছাকাছি প্রবাহিত হওয়ায় বন্যার শঙ্কা দেখা দিয়েছে লালমনিরহাটে।  

শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টায় হাতীবান্ধা উপজেলার দোয়ানীতে দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ মিটার।

যা বিপৎসীমার (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ১৫ মিটার) ১৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।  

বন্যা সতর্কীকরণ কেন্দ্র ও চরবাসী জানান, ভারতের সিকিমে উৎপত্তিস্থল থেকে পানি প্রবাহিত হয়ে বাংলাদেশে তিস্তা নদীতে প্রবেশ করছে। নদীর বাংলাদেশ অংশের উজানে ফারাক্কা বাঁধ নির্মাণ করে তিস্তা পানি নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করছে প্রতিবেশী দেশ ভারত। বর্ষাকালে অতিরিক্ত পানি ফারাক্কা গেট খুলে বাংলাদেশ অংশে ছেড়ে দেওয়া হয়। একইভাবে শুষ্ক মৌসুমে গেট বন্ধ করে বাংলাদেশকে মরুভূমি করে তিস্তার পানি একক ব্যবহার করছে ভারত সরকার।  

বর্ষাকাল শুরু হওয়ায় উজানে ভারতে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়। এ কারণে ভারত তাদের অতিরিক্ত পানি বাংলাদেশ অংশে ছেড়ে দেয়। এই উজানের ঢল ও ভারী বর্ষণে তিস্তার পানি ব্যাপকভাবে বেড়ে যায়। টানা কয়েকদিনের ভারী বৃষ্টিতে তিস্তা নদীর পানি প্রবাহ বেড়ে গেছে। এতে তিস্তা নদীর ডালিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার কাছাকাছি দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। শনিবার সকাল ৯টায় পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ মিটার। যা বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে লালমনিরহাটের নিম্নাঞ্চল ডুবে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে কয়েক হাজার মানুষ।

তিস্তা নদীর বাম তীরের জেলা লালমনিরহাটের ৫টি উপজেলার বেশ কিছু গ্রামে বন্যার পানি ঢুকে পড়েছে। বড় বন্যার শঙ্কায় রয়েছে তিস্তাপাড়ের মানুষ। এ অবস্থায় আমন ধান ও বিভিন্ন সবজির ক্ষতির শঙ্কা করছেন চাষিরা। একই সঙ্গে বন্যার পানির তোড়ে পুকুরে মাছ ভেসে যাওয়ার শঙ্কাও করছেন মৎস্য চাষিরা।  

গোবর্দ্ধন গ্রামের কৃষক মজিদুল ইসলাম বলেন, গেল রাত থেকে তিস্তা নদীতে পানি বাড়ছে। আমাদের গ্রামের কিছু বাড়িতে পানি প্রবেশ করেছে। নৌকা দিয়ে এক বাড়ি থেকে অন্য বাড়ির যোগাযোগ করতে হচ্ছে। পানি আরও বাড়লে বড় ধরনের বন্যা হবে। এমন হলে আমন ধানের ব্যাপক ক্ষতি হতে পারে। এ নিয়ে চিন্তায় পড়েছি।  

হলদিবাড়ি চরের আব্দুল মজিদ বলেন, বন্যা হলেই চিন্তা বাড়ে নদীপাড়ের মানুষের। বন্যার সময় শিশু, বৃদ্ধ আর গবাদি পশুপাখি নিয়ে বড় বিপদে পড়তে হয়। বন্যা হলেই নির্ঘুম রাত কাটাতে হয় তিস্তাপাড়ের মানুষদের। আমরা ত্রাণ নয়, চাই তিস্তার মহাপরিকল্পনা দ্রুত বাস্তবায়ন।  

তিস্তা ব্যারাজ পানি উন্নয়ন বোর্ড ডালিয়া শাখার নির্বাহী প্রকৌশলী আসফা উদ দৌলা বলেন, ডালিয়া পয়েন্টে পানি প্রবাহ বেড়ে বিপৎসীমার কাছাকাছি প্রবাহিত হচ্ছে। সকাল ৯টায় বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে আপাতত বড় বন্যার শঙ্কা নেই।  

বাংলাদেশ সময়: ১১৩০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২৪
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।