ফরিদপুর: ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার ঢেউখালি ইউনিয়নের চরডুবাইল খালে মাছ ধরতে আড়াআড়িভাবে দেওয়া হয়েছে বাঁশের বেড়া। এর সঙ্গে ব্যবহার করা হচ্ছে জাল।
চরডুবাইল গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, গ্রামের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে একটি খাল। পাঁচ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এ খালের প্রায় দুই কিলোমিটারে বাঁশের বেড়া-জাল বসিয়ে মাছ শিকার করা হচ্ছে। স্থানীয়দের কাছে সরকারি খালটি চরডুবাইল খাল নামে পরিচিত।
স্থানীয় বাসিন্দা আবুল হোসেন বেপারী, ইদ্রিস বেপারী, দবির উদ্দিন কয়ালসহ কয়েকজন কৃষকের অভিযোগ, কয়েক মাস ধরে কিছু মানুষ খাল দখল করে মাছ শিকার করছে। সরকারি নিয়ম-নীতি না মেনে বাঁশের বেড়াসহ বিভিন্ন জাল ব্যবহার করে পানির গতিরোধ করছে। এতে সেখানকার কৃষকেরা ভোগান্তিতে পড়েছেন।
তারা আরও জানান, খালের পানি কৃষকের ফসল উৎপাদনে ভূমিকা রাখে। ওইসব খালে বেড়া দিয়ে মাছ শিকার করায় একদিকে ফসল আবাদে পানির সংকট হচ্ছে। অন্যদিকে কোথাও কোথাও জমিতে জলাবদ্ধতা দেখা দিচ্ছে। সরকারি খালের এসব বেড়া কেটে খালগুলোর পানি প্রবাহ স্বাভাবিক করার দাবি জানান তারা।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, কয়েক মাস ধরে ঢেউখালি ইউনিয়নের কিছু প্রভাবশালী মানুষ খালে বেড়া দিয়ে পানি প্রবাহে বিঘ্ন ঘটাচ্ছে। ফলে উপজেলার চরডুবাইল, উত্তর চরডুবাইল, সুরেশ্বরীর মোড়, এগারো ঘর, মৃধা কান্দি, সরদার ডাঙ্গীসহ কয়েকটি গ্রামের সাধারণ মানুষ ভোগান্তিতে পড়ছে।
এ ছাড়া নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল ব্যবহারের ফলে মাছের পোনা নিধন হচ্ছে। এসব কারণে কৃষিজীবী ও খালনির্ভর শতাধিক পরিবারের জীবিকা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। একাধিকবার আপত্তি জানিয়েও কোনো কাজ হয়নি।
ঢেউখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মিজানুর রহমান বলেন, বেড়া দেওয়ায় কিছু স্থানে খালের পানির উচ্চতা ফসলি জমির চেয়ে উঁচু হয়ে গেছে। খালে যারা বেড়া দিয়েছে, তাদের দ্রুত বেড়া অপসারণ করতে বলেছি। এমনিতেই চরডুবাইল গ্রামে একটি সেতু অপরিকল্পিতভাবে নির্মাণ করায় পানি প্রবাহ স্বাভাবিক থাকছে না।
সদরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ নিটুল রায় বলেন, বেড়া দেওয়ার কারণে পানির স্বাভাবিক গতিপথ রোধ করা হয়। এতে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়। কৃষি কাজের সুবিধার্থে সরকারি খাল উন্মুক্ত রাখা প্রয়োজন।
সদরপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রুবানা তানজিন বলেন, চরডুবাইল খালের বেড়া সরিয়ে উন্মুক্ত করে দেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ১১, ২০২৪
আরএইচ