ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ১৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

রাজশাহীতে খাদ্যবন্ধন, সব জাতি-গোষ্ঠীর পছন্দের খাদ্য সুরক্ষার দাবি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৬, ২০২৪
রাজশাহীতে খাদ্যবন্ধন, সব জাতি-গোষ্ঠীর পছন্দের খাদ্য সুরক্ষার দাবি

রাজশাহী: সব জাতি-গোষ্ঠীর পছন্দের খাদ্য সুরক্ষার দাবিতে রাজশাহীর বরেন্দ্র অঞ্চল খ্যাত তানোর উপজেলায় ব্যতিক্রমী ‘খাদ্যবন্ধন’ (খাদ্যের জন্য মানববন্ধন) কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।  

বুধবার (১৬ অক্টোবর) বিশ্ব খাদ্য দিবস উপলক্ষে উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিক এবং বরেন্দ্র অঞ্চল জনসংগঠন ফোরামের পক্ষ থেকে রাজশাহীর তানোর উপজেলার হরিদেবপুরে এই কর্মসূচি হয়।

খাদ্যবন্ধনে বরেন্দ্র অঞ্চলের সাঁওতাল, মুন্ডা, পাহান, মাহালী, কড়া, রবিদাস, কর্মকার, মাল পাহাড়িয়া, তুড়ি, কোল, বাঁশফোড়, বর্মণ, পাহাড়িয়া, মুসলিম, হিন্দু, খ্রিস্টানসহ বিভিন্ন ধর্ম ও জাতিগোষ্ঠী তাদের নিজস্ব সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যবাহী পছন্দের খাদ্য প্রদর্শন করে খাদ্য অধিকার রক্ষার দাবি জানান।

অংশগ্রহণকারীরা তাদের এলাকার নিজে চাষকৃত এবং অচাষকৃত খাদ্যবৈচিত্র্যসহ বিভিন্ন শাকসবজির ও তৈরি করা খাদ্য হাতে নিয়ে খাদ্যবন্ধনে অংশ নেন।  

অংশগ্রহণকারীরা বলেন, আমাদের নিজেদের এবং প্রত্যোক জাতি, ধর্মের এবং সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের পছন্দের খাবার আছে। কিন্তু সেগুলো দিনে দিনে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। রাসায়নিক কীটনাশকের প্রভাব এবং একমুখি শস্যবৈচিত্র্য ফসল ফলানোর কারণে দিনে দিনে বৈচিত্র্যময়য় পছন্দের খাদ্যগুলো ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন দেশি জাতের শস্য ফসল। কিন্তু আমাদের খাদ্য, আমাদের বীজ; আমাদেরই সুরক্ষা করা উচিত। বীজের নিয়ন্ত্রণ, খাদ্যের নিয়ন্ত্রণ অন্য মানুষের কাছে গেলে আমাদের পছন্দের খাবারের সংকট হবে।

বারসিক’র গবেষক ও আঞ্চলিক সমন্বয়কারী শহিদুল ইসলাম বলেন- খাদ্য অধিকার, খাদ্য সার্বভৌমত্বের সাথে খাদ্য উৎপাদন, বন্টন, নিয়ন্ত্রণ ইত্যাদি দিকগুলো যুক্ত। আমাদের শস্য ফসলের নিজস্ব জাত, বীজ, উৎপাদন কৌশল, নিয়ন্ত্রণ যতোই হাত ছাড়া হবে ততোই আমরা খাদ্যে নিজস্ব নিয়ন্ত্রণ হারাবো। তিনি আরো বলেন- প্রতিটি জাতি মানুষের নিজস্ব সাংস্কৃতিক ঐতহ্যিবাহী পছন্দের খাদ্য আছে, সেগুলো সুরক্ষা করাও রাষ্ট্রের দায়িত্ব।

অংশগ্রহণকারী তানোর মন্ডুমালার মাহালী সম্প্রদায়ের মনিকা মাহালি বলেন- আমরা মাহালি জাতি, আমারা শামুক, ঝিনুক, কুইচা পছন্দ করি। কিন্তু দিনে দিনে বিষের কারণে পুকুর নদী দুষণের কারনে এগুলো আর পাইনা। আমাদের খাদ্য স্বাধীনতা হরণ করা হচ্ছে।

তানোর উপজেলার চাপড়ার মাল পাহাড়িয়া সম্প্রদায়ের জয়ন্তী বালা বলেন, এক সময় বাড়ির আশপাশে কত পছন্দের অচাষকৃত শাকসবজি পাওয়া যেত। কিন্তু এখন আর সেসব পাওয়া য়ায় না। এগুলো হারিয়েই গেছে। পরিবেশ নষ্টের কারণে দিনে দিনে জাতগুলো ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে।

উল্লেখ্য যে, এ বছর বিশ্ব খাদ্য দিবসের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল, ‘টেকসই জীবন ও ভবিষ্যতের জন্য খাদ্য অধিকার নিশ্চিত করি। ’

বাংলাদেশ সময়: ২০৫৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৬, ২০২৪
এসএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।