ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ফরিদপুরে ইউপি চেয়ারম্যানের বাড়িতে হামলা-অগ্নিসংযোগ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০২ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৮, ২০২৪
ফরিদপুরে ইউপি চেয়ারম্যানের বাড়িতে হামলা-অগ্নিসংযোগ

ফরিদপুর: ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার পরমেশ্বরদী ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান ও তার ভাই-ভাতিজাদের বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। হামলায় পাশের সালথা উপজেলার যদুনন্দী ইউনিয়নের বড় খারদিয়া গ্রামের সহস্রাধিক লোকজন অংশ নেয় বলে জানা গেছে।

গত বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) সকালে পরমেশ্বরদী ইউনিয়নের ময়েনদিয়া বাজার সংলগ্ন ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান মাতুব্বর ও তার ভাইয়ের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) সকালে ফরিদপুরের সহকারী পুলিশ সুপার (নগরকান্দা সার্কেল) মো. আসাদুজ্জামান শাকিল এ তথ্য জানান।  

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, জেলার সালথা উপজেলার বড় খারদিয়া গ্রামের সহস্রাধিক লোক এ হামলায় অংশ নেয়। হামলাকারীরা ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মান্নান মাতুব্বর, তার তিন ছেলে হারেজ মাতুব্বর, মজনু মাতুব্বর ও মাসুদ মাতুব্বর এবং ইউপি চেয়ারম্যানের ভাই ইউপি ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি সিদ্দিক মাতুব্বরের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর-লুটপাট করে বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়।

এরপর হামলাকারীরা সালথা উপজেলার খারদিয়া গ্রামের কালাম মোল্লা, ইব্রাহিম মোল্লা, হাসেম মোল্লা, জালাল মোল্লা ও হবি মোল্লার বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে। তারা সবাই চেয়ারম্যান মান্নান মাতুব্বরের সমর্থক।  

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, পূর্বশত্রুতার জের ধরে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। বিগত দিনে ময়েনদিয়া বাজারে মান্নান চেয়ারম্যান ও তার পরিবারের লোকজন একক রাজত্ব কায়েম করে আসছিলেন। তিনি ইতোপূর্বে একটি হত্যা মামলার এক নম্বর আসামি ছিলেন। মূলত দীর্ঘদিনের এসব পুঞ্জীভূত ক্ষোভ থেকেই খারদিয়া গ্রামের বিক্ষুব্ধ জনতা চেয়ারম্যানের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট চালিয়েছেন। হামলার সময় মান্নান মাতুব্বর পালিয়ে গেলেও হামলাকারীদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে মান্নান মাতুব্বরের ছেলে মাসুদ মিয়া ও সিদ্দিক মাতুব্বরের ছেলে শাকিল মিয়া মারাত্মক আহত হন। তাদের প্রথমে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

ইউপি চেয়ারম্যান মান্নান মাতুব্বরের ভাই মো. সিদ্দিক মাতুব্বর জানান, পাশের সালথা উপজেলার খারদিয়া গ্রামের লোকজনের সঙ্গে পরমেশ্বরদী, ময়েনদিয়া এলাকার প্রায় দুই হাজার লোকজন এক হয়ে বৃহস্পতিবার সকালের দিকে তাদের বাড়িতে ঢুকে ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে। তাদের তিনটা বাড়িতে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। পরে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস এসে আগুন নিয়ন্ত্রণ করে।  

বোয়ালমারী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মজিবুর রহমান বলেন, বোয়ালমারী উপজেলার পরমেশ্বরদী ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যানের বাড়িসহ কয়েকটি বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। তবে বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। ঘটনাস্থলে পর্যাপ্ত পরিমাণ পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।  

ফরিদপুরে সহকারী পুলিশ সুপার (নগরকান্দা সার্কেল) মো. আসাদুজ্জামান শাকিল বলেন, মান্নান মাতুব্বর আবুল কালাম আজাদের মামলার সাক্ষী ছিলেন বলে জেনেছি। তবে এ হামলার পেছনে ওই ঘটনা কাজ করেছে বলে আমার মনে হয়নি। ময়েনদিয়া বাজার এ এলাকার একটি বড় বাজার। এ বাজারের নিয়ন্ত্রণ এতদিন ইউপি চেয়ারম্যান মান্নান মাতুব্বর ও বড় খারদিয়া গ্রামের ইব্রাহিম মোল্লা ও তার ভাই জালাল মোল্লা নেতৃত্ব দিতেন। এ নিয়ে এ ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার ইউপি চেয়ারম্যানের বাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগের পর বেলা ১১টার দিকে বড় খারদিয়া গ্রামের ইব্রাহিম ও জালালের বাড়িতেও ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, সালথা এলাকার ইব্রাহিম ও জালালের বাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় কাউকে আটক করা যায়নি। এ ব্যাপারে মামলার প্রস্তুতি চলছে। ওই এলাকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সালথা ও বোয়ালমারীতে দ্রুত পুলিশের সম্মিলিত অভিযান শুরু করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২১০১ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৮, ২০২৪
আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।