ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

প্লাস্টিক জমা দিলেই মিলছে চাল-ডাল-মুরগি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৩১ ঘণ্টা, অক্টোবর ২১, ২০২৪
প্লাস্টিক জমা দিলেই মিলছে চাল-ডাল-মুরগি

ঠাকুরগাঁও: ঠাকুরগাঁওয়ে প্লাস্টিক জমা দিলেই মিলছে চাল, ডাল, চিনি ও মুরগিসহ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য। এমন খবর ছড়িয়ে পড়লে কেউ দুই কেজি, কেউ ১০ কেজি আবার কেউ নিয়ে এসেছেন ২০ কেজি প্লাস্টিক।

প্লাস্টিক জমা দিয়ে কিনছেন নিজের পছন্দমতো বাজার।  

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে প্লাস্টিক দিয়ে ব্যাগ ভর্তি বাজার নিয়ে পরিবার নিয়ে একবেলা পেট ভরে খাওয়ার কথা জানান উপকার ভোগীরা।  

এমনি একজন ঠাকুরগাঁও পৌরশহরের মুন্সিপাড়ার বাসিন্দা আফসানা বেগম। নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের চড়া দামে পাঁচ সদস্যের পরিবার চালাতে প্রতিনিয়ত হিমশিম খাচ্ছেন তিনি। প্লাস্টিক দিলে মিলবে চাল, ডাল, চিনি ও মুরগিসহ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য। এমন খবরে তিন কেজি প্লাস্টিক নিয়ে আসেন তিনি। প্লাস্টিক দিয়ে পেয়েছেন ব্যাগ ভর্তি বাজার। এমন বাজার করতে পেরে খুশি আফসানা বেগম।

সোমবার (২১ অক্টোবর) ঠাকুরগাঁও পৌর কমিউনিটি সেন্টারে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন আয়োজিত প্লাস্টিক এক্সচেঞ্জ স্টোরে প্লাস্টিক দিলেই মিলবে ১৬ প্রকারের নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য। প্লাস্টিকের ব্যবহার রোধে ভিন্নধর্মী বাজারের আয়োজন করে ফাউন্ডেশনটি।

ব্যাগ ভর্তি বাজার পেয়ে আফসানা বেগম বলেন, অভাবের সংসারে নুন আন্তে পান্তা শেষ হয়ে যায়। আজকে প্লাস্টিক নিয়ে এসে চিনি, মুরগি পেলাম। এটা আমাদের মতো নিম্নবিত্ত পরিবারের জন্য উপকার হলো। দুবেলা পেট ভরে তৃপ্তি করে খাওয়া যাবে। যারা আয়োজন করেছে আল্লাহ তাদের ভালো করুক।  

প্লাস্টিক দিয়ে পণ্য নিতে আসা জুলেখা বেগম বলেন, বর্তমান সময়ে সব জিনিসের দাম অনেক বেশি সেই তুলনায় এই অল্প পরিমাণ প্লাস্টিক দিয়ে আমাদের যেই পরিমাণ খাদ্য সামগ্রী দেওয়া হয়েছে তাতে আমি খুব খুশি। কিছুদিন পরপর যদি এমন আয়োজন করা হয় তাহলে আমাদের জন্য খুব ভালো হয়।

আলামিন নামে আরেকজন রিকশাচালক বলেন, আমি ১৫ কেজি প্লাস্টিক নিয়ে এসেছিলাম সেটা দিয়ে আজকে আমি ব্যাগ ভর্তি বাজার নিয়েছি মুরগি, মাছসহ বিভিন্ন ধরনের বাজার নিয়েছি। অনেকদিন পরে আমরা এরকম একটা বাজার করতে পেরেছি খুশি লাগতেছে। আমার পরিবার অনেক খুশি হবে। আজ খাওয়া দাওয়া ভালো হবে।  

বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের সেচ্ছাসেবক শিহাব মিয়া বলেন, প্লাস্টিক ব্যবহার রোধে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য প্লাস্টিক এক্সচেঞ্জ স্টোরের আয়োজন করা হয়েছে। জেলার তিন শতাধিক পরিবারের মধ্যে আমরা ১৬ প্রকার নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য দিচ্ছি। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে স্বস্তির পাশাপাশি প্লাস্টিক ব্যবহারে অনুৎসাহী করা হচ্ছে৷ 

ঠাকুরগাঁওয়ের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তফা সরদার শাহীন বলেন, প্লাস্টিকের ব্যবহারে প্রতিনিয়ত দূষিত হচ্ছে পরিবেশ। এতে ভয়াবহ হুমকির মুখোমুখি হচ্ছে চারপাশ। বিদ্যানন্দের ব্যতিক্রমী এ উদ্যোগ প্রশংসার দাবিদার। এতে সচেতনতার পাশাপাশি স্বস্তি পাচ্ছেন উপকারভোগীরা। এমন আয়োজন অব্যাহত থাকুক।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩১ ঘণ্টা, অক্টোবর ২১, ২০২৪
এসএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।