ঢাকা, বুধবার, ১০ পৌষ ১৪৩১, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

যাত্রাবাড়ীতে অভ্যুত্থানের শহীদদের স্মরণে ‘শহীদী ঐক্য চত্বর’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬১২ ঘণ্টা, অক্টোবর ২১, ২০২৪
যাত্রাবাড়ীতে অভ্যুত্থানের শহীদদের স্মরণে ‘শহীদী ঐক্য চত্বর’

ঢাকা: জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের আন্দোলনে যারা জীবন দিয়েছেন তাদের শ্রদ্ধা ও স্মরণে ৫৮ শহীদের নামফলক দিয়ে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তায় নির্মিত হচ্ছে ‘শহীদী ঐক্য চত্বর’।

সোমবার (২১ অক্টোবর) বিকেল ৩টায় যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তায় এর নির্মাণকাজের উদ্বোধন করে জুলাই আন্দোলনের সক্রিয় সংগঠন ‘জুলাই বিপ্লব পরিষদ’।

সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ২০২৪ সালের জুলাই মাসে বাংলাদেশে সংঘটিত আন্দোলনটি ইতিহাসে একটি উল্লেখযোগ্য অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। ছাত্র-জনতার নেতৃত্বে সংগঠিত এই আন্দোলন হাসিনা সরকারের পতনের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। যাত্রাবাড়ী, শনির আখড়া, ডেমরা, কদমতলী ও রায়েরবাগে সংগঠিত এই বিপ্লবে ৫৮ জন শহীদকে স্মরণ করে নির্মিত হচ্ছে শহীদী ঐক্য চত্বর। এটি দেশের জনগণের সাহসিকতা ও প্রতিরোধের প্রতীক হয়ে উঠবে।

প্রাপ্ত তথ্য উপাত্তের ভিত্তিতে বর্তমানে শুধু ৫৮ শহীদের স্মৃতিকে অমলিন রাখতে তাদের নামফলক করা হয়েছে। পরবর্তীতে এটি আরও বাড়ানো হবে।

জুলাই বিপ্লব পরিষদের ভূমিকা নিয়ে সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয়, জুলাই বিপ্লব পরিষদ শহীদী চত্বর নির্মাণের কাজে নিজেদের সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে। তারা আন্দোলনকে সংগঠিত করতে এবং শহীদদের স্মৃতি সংরক্ষণে নিরলস চেষ্টা করছে। এই পরিষদ গণ অভ্যুত্থানকে সফলতার দিকে নিয়ে যেতে এবং জনগণের অধিকারের প্রতি সচেতনতা বৃদ্ধিতে কাজ করছে।

উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, শহীদী চত্বর নির্মাণের কাজ শেষ হলে এটি শুধু শহীদদের স্মৃতি রক্ষা করবে না, বরং দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবেও বিবেচিত হবে। আশা করা হচ্ছে, এটি একটি জনমানুষের মিলনস্থলে পরিণত হবে, যেখানে গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রামের ইতিহাস নিয়ে আলোচনা হবে।

চত্বর উদ্বোধনীতে বলা হয়, শহীদী ঐক্য চত্বর নির্মাণের উদ্দেশ্য হলো ২০২৪ সালের এই আন্দোলনে যারা জীবন দিয়েছেন, তাদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা। এই শহীদদের আত্মত্যাগ বর্তমানের তরুণ সমাজের জন্য একটি শক্তিশালী অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করেছে। তাদের স্মৃতি দেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে থাকবে।

বক্তারা আরও বলেন, হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার এই আন্দোলন বাংলাদেশে নতুন একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। ছাত্র-জনতার সমন্বয়ে গঠিত এই আন্দোলন জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সংঘটিত হয়েছে। আন্দোলনকারীরা একত্রিত হয়ে সরকারের স্বৈরাচারী নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন এবং তাদের দাবি প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করেছেন। এই আন্দোলন জনসমর্থন ও সংগঠনের মাধ্যমে হাসিনা সরকারের পতন ঘটাতে সক্ষম হয়েছে। সরকার আন্দোলন দমাতে বিভিন্ন চেষ্টা করলেও জনগণের ঐক্য ও দৃঢ়তা তা প্রতিহত করেছে। আন্দোলনকারীরা তাদের দাবি আদায় করতে সক্ষম হয়েছে, যা দেশের রাজনৈতিক দৃশ্যে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে।

হাসিনা সরকারের পতনের পর নতুন সরকার গঠনের জন্য রাজনৈতিক দলের মধ্যে আলোচনা ও সমঝোতার প্রয়োজন হবে। এই আন্দোলনের ফলে তরুণ সমাজের মধ্যে নতুন রাজনৈতিক চেতনা ও নেতৃত্ব তৈরি হবে, যা দেশের ভবিষ্যৎ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে বলেও উল্লেখ করেন বক্তারা।

অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন জুলাই বিপ্লব পরিষদের স্থায়ী কমিটির সদস্য শাহনেওয়াজ ফাহাদ। সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সদস্য স্বাধীন। উপস্থিত ছিলেন তন্নি হাসান, লাবণ্য, রাকিবসহ কমিটির অন্যান্য সদস্য ও শহীদ পরিবারের সদস্যরা।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২১, ২০২৪
ইএসএস/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।