ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

১৫ বছরে সাংবাদিকতা কোথায় ব্যর্থ, গণমাধ্যমেরই খতিয়ে দেখা প্রয়োজন: শফিকুল

ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩১৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৬, ২০২৪
১৫ বছরে সাংবাদিকতা কোথায় ব্যর্থ, গণমাধ্যমেরই খতিয়ে দেখা প্রয়োজন: শফিকুল

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি): বাংলাদেশে গত ১৫ বছরে সাংবাদিকতা কোথায় ব্যর্থ হয়েছে, তা নিয়ে গণমাধ্যমের আত্ম-অনুসন্ধান প্রয়োজন বলে মনে করেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

শনিবার (২৬ অক্টোবর) বিকেল ৪ টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর সি মজুমদার মিলনায়তনে ‘জুলাই পরিসর’ নামক প্লাটফর্ম আয়োজিত ‘ফ্যাসিবাদের বয়ান বনাম গণমানুষের গণমাধ্যম’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন।

সেমিনারে বক্তব্য দেন প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের পরিচালক ফারুক ওয়াসিফ, নিউ এজ পত্রিকার সম্পাদক নূরুল কবীর, ডেইলি স্টার বাংলার সম্পাদক গোলাম মোর্তজা, প্রথম আলোর ইংরেজি বিভাগের প্রধান আয়েশা কবির ও বাংলাদেশ টেলিভিশনের মহাপরিচালক মাহবুবুল আলম। সেমিনারে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক খোরশেদ আলম।

শফিকুল আলম বলেন, বাংলাদেশে ফ্যাসিজম আসার একটি মূল কারণ আমাদের সাংবাদিকতা ব্যর্থ হয়েছে। আমরা কখনো ভালো সাংবাদিকতা করেছি বলে আমার মনে হয় না। মুক্তিযুদ্ধের প্রথম ছয় মাসের রিপোর্টগুলো পড়ুন। দেখবেন, ভয়ংকর রকমের দুর্বল সাংবাদিকতা। কেউ হয়তো রিপোর্ট করেছে, ১০ হাজার খুলি পাওয়া গেছে কিন্তু কে বলেছে, কোনো হদিস নাই। আমাদের এত বুদ্ধিজীবীকে মেরে ফেলা হলো, এত মা-বোন সম্ভ্রম হারা হলেন, কোনো ভালো রিপোর্ট নাই।

তিনি বলেন, গত ১৫ বছরের ফ্যাসিজম নিয়ে খুব ভালো আলোচনা হচ্ছে না। অথচ, বড় একটা ব্যাপার হচ্ছে এটা বেসরকারি খাত দিয়ে ফ্যাসিজম। যেটা সরকার বাস্তবায়ন করলেও সেখানে সরকার নেই। এখানে একটা ইচ্ছাকৃত বাস্তবায়ন আছে। বেসরকারি খাতগুলো তাদের ব্যবসায়িক স্বার্থেই করেছে।

গত ১৫ বছরেও বাংলাদেশে ভালো সাংবাদিকতা হয়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের গত ১৫ বছরের লিগ্যাল হিস্টোরি খুব বাজে রকমের ইতিহাস। আমাদের প্রধান ঘটনাগুলো নিয়ে কোনো ভালো রিপোর্ট নাই। তত্ত্বাবধায়ক সরকার সাংবাদিকদের সবচেয়ে বড় সহায়ক ছিল। কারণ সবার ভয় ছিল, একসময় তারা কোনো কিছু করলে পরে তত্ত্বাবধায়ক সরকার আসবে এবং অন্যদলের ক্ষমতা চলে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। কিন্তু সেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে ভালো কোনো রিপোর্ট নাই। বিডিআর হত্যাকাণ্ড, প্রধান বিচারপতিকে ডিজিএফআই চড় মেরে বিমানে তুলে দিয়েছিল, কোনো ভালো রিপোর্ট নাই।

গত ১৫ বছরে সাংবাদিকতা কোথায় ব্যর্থ হয়েছে তা নিয়ে গণমাধ্যমকে আত্মানুসন্ধান করার আহ্বান জানান তিনি। শফিকুল বলেন, এমন ইতিহাসও আছে। ইরাক যুদ্ধের পর নিউ ইয়র্ক টাইমস এরকম একটি আত্ম-অনুসন্ধান করেছিল। আপনারা এজন্য করবেন যেন এটির পুনরাবৃত্তি না হয়। তাছাড়া সমাজের কাছে আপনাদের দায় আছে।

প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের পরিচালক ফারুক ওয়াসিফ বলেন, সকল জাতীয়তাবাদের বন্ধু থাকে দেশে। কিন্তু বাঙালি জাতীয়তাবাদ এমন একটি জাতীয়তাবাদ, যার দেশে শত্রু বেশি, বাইরে বন্ধু বেশি। দিল্লি থেকে দেখলে তো বাংলাদেশে বেশি শত্রু দেখতে পাবে। ফ্যাসিবাদ সবসময় একটি সংকট দেখাতে চায়। এখানে জঙ্গিবাদের সংকট, সংখ্যালঘুদের ওপর আক্রমণ, ইসলামিস্টদের উত্থানসহ একটি সংকট প্রবণতা সে জারি রাখে। এবং ফ্যাসিজমের এই অনন্তকালের ভীতিকে গণমাধ্যম জারি রেখেছে। মিডিয়াগুলো তা বিপনণ করেছে।

নিউ এজ পত্রিকার সম্পাদক নূরুল কবীর বলেন, ফ্যাসিবাদের একটি কাজ হচ্ছে ইতিহাস দখল করা। কারণ, অতীতকে রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে বর্তমান সম্পর্কে একটি ন্যয্যতা তৈরি করা যায়।  

বাংলাদেশ সময়: ২৩১২ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৬, ২০২৪
এফএইচ/এমজে

 
 

 

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।