ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৫ কার্তিক ১৪৩১, ৩১ অক্টোবর ২০২৪, ২৭ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

আন্দোলনে শহীদ ও আহতদের আমরা যেন ভুলে না যাই: নাহিদ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট   | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১০৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩০, ২০২৪
আন্দোলনে শহীদ ও আহতদের আমরা যেন ভুলে না যাই: নাহিদ

ঢাকা: ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম বলেছেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহীদ ও আহতদের আমরা যেন ভুলে না যাই। তাদের পাশে দাঁড়ানো আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।

মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) বিকেলে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহিদ নাসিব হাসান রিয়ানের স্মরণে অনুষ্ঠিত দোয়া ও আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহীদ ও আহতদের স্মরণ করে তিনি বলেন, শিক্ষার্থীরা মৃত্যুর জন্য প্রস্তুতি নিয়েই আন্দোলনে অংশ নেন। একটি নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্য আমরা লড়াই করেছি, রক্ত দিয়েছি। আমরা এমনভাবে রাষ্ট্রকাঠামো পুনর্গঠন করতে চাই, যেন ফ্যাসিবাদ আর ফিরে আসতে না পারে।

শহিদ নাসিব হাসান রিয়ান প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, সে ফেসবুকে ঘোষণা দিয়ে রাজপথে নেমেছিল। মৃত্যুভয়কে তুচ্ছ করে সে আন্দোলনে অংশ নেয়।  

এ আন্দোলনে শহিদ নাসিবের পিতার অবদানের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, নাসিব যখন লাঠি হাতে আন্দোলনে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল, তার বাবা ছেলের হাতের লাঠি পাল্টে শক্ত লাঠি তুলে দেন। নাসিবের বাবার মতো অনেক অভিভাবক এভাবে আন্দোলনে উৎসাহ জুগিয়েছেন।  

আন্দোলনে নিজের অংশগ্রহণের কথা উল্লেখ করে উপদেষ্টা নাহিদ বলেন, আমিও পরিবারের বাধা উপেক্ষা করে আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলাম।

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের প্রমাণাদি সংরক্ষণের ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, এসব প্রমাণ বারবার প্রচার করতে হবে। তা না হলে অনেকে আন্দোলনের ইতিহাস ভুলে যাবেন।

উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহীদদের পরিবার ও আহতদের দায়িত্ব নেবে সরকার। এ আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন, তাদের পরিবার ও আহতদের প্রতি সবার কৃতজ্ঞ থাকা উচিত।  

তিনি শহীদ পরিবার ও আহতদের পাশে থাকার জন্য সরকারি কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহ্বান জানান।   

আলোচনা সভায় আমন্ত্রিত অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন শহিদ নাসিব হাসান রিয়ানের বাবা ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা মো. গোলাম রাজ্জাক। সভায় তিনি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহিদ নাসিব হাসানের অবদানের কথা তুলে ধরেন।  

তিনি বলেন, আমার ছেলে নাসিব হাসান রিয়ান দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে অংশ নেয়। মৃত্যুভয় তাকে আন্দোলনে যাওয়া থেকে বিরত রাখতে পারেনি। শহীদ নাসিবের স্বপ্ন ছিল পাইলট হওয়া। কিন্তু সেই স্বপ্ন আর বাস্তবায়ন হলো না। সে দেশের জন্য জীবন দিয়েছে।  

শহীদ নাসিবের বাবার বক্তব্যের সময় সভাস্থলে এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়।  

বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক ও সিনিয়র সহকারী সচিব মো. আব্দুল খালেকের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য দেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোখলেস উর রহমান, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সিনিয়র সচিব এম এ আকমল হোসেন আজাদ ও বাংলাদেশ হাউজ বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশনের চেয়ারম্যান এ এস এম আব্দুল হালিম।  

সভায় সরকারি কর্মকর্তা, সুধীজন ও সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন। আলোচনা শেষে শহীদ নাসিব হাসান রিয়ানসহ বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সব শহীদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।  

গত ৫ আগস্ট ঢাকায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে শহীদ হন নাসিব হাসান রিয়ান। তিনি ঢাকার মিরপুরের বিসিআইসি কলেজের একাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ০০৫৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩০, ২০২৪
এমআইএইচ/আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।