ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

মগাছড়ি গ্রামে ঋতুপর্ণার জয়জয়কার

মঈন উদ্দীন বাপ্পী, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২০৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩, ২০২৪
মগাছড়ি গ্রামে ঋতুপর্ণার জয়জয়কার

রাঙামাটি: জাতীয় বা বয়স ভিত্তিক, দেশিয় বা আন্তর্জাতিক যেকোনো বড় ফুটবল টুর্নামেন্টে পার্বত্য অঞ্চলের মেয়েরা বেশ সফল। দুইবারের সাফ ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপে সে প্রমাণ দিয়েছে তারা।

তারা থাকলে যেন মাঠ হাসে, বিজয়ের লাল-সবুজ পতাকা ওড়ে আকাশে।  

সম্প্রতি সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ টুর্নামেন্টে অংশ নেওয়া রাঙামাটির কাউখালী উপজেলার ঘাগড়া ইউনিয়নের মগাছড়ি গ্রামের ঋতুপর্ণা চাকমা তাদেরই একজন। বাংলাদেশের এ বাঘিনী জয়জয়কার এখন চারদিকে। বিশেষ করে তার গ্রামে। কারণ, বাংলাদেশের টানা দ্বিতীয় সাফ ট্রফিটা এসেছিল তার পায়ের শটেই।  

দুর্গম পাহাড়ের পাদদেশে বেড়ে উঠা ঋতুপর্ণা চাকমা নাকি ছোটবেলা থেকে ডানপিটে ছিলেন। মা-বাবার কাছ থেকেও পেয়েছেন অগাধ স্বাধীনতা। এ স্বাধীনতা তার চলার পথ আরও মসৃণ করেছে।

মাত্র ১১ বছর বয়সে বাবা হারান ঋতুপর্ণা। মায়ের পরামর্শে বাকি পথ পাড়ি দিয়েছেন অনায়াসে। রাঙামাটির ঘাগড়া বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়ার সুবাদে হাতেখড়ি হয় ফুটবলের সঙ্গে। কোচ শান্তি মণি চাকমা তার এ শিষ্যকে গড়েছেন নিজের মতো করে।  

ঋতুপর্ণা কীর্তিতে তার স্বজনরা খুশি। কিন্তু দুঃখও আছে। দীর্ঘদিনের কয়েকটি দাবি পূরণ না হওয়ায় তারা হতাশ।

ঋতুপর্ণার মা ভূজপতি চাকমা বাংলানিউজকে বলেন, আমার মেয়েকে জায়গা, ঘর দেওয়ার কথা ছিল। সড়ক করে দেওয়ার কথা থাকলেও কোনো কিছু পাওয়া হয়নি। তবে মেয়ের সাফল্যে তিনি বেজায় খুশি।

বড় বোন পুতুলি চাকমা ঋতুপর্ণাকে নিয়ে খুশি ও গর্বিত। তবে কর্তৃপক্ষের প্রতিশ্রুত দাবিগুলো পূরণ করে দিলে তিনি ও তার পরিবার দ্বিগুণ খুশি হবে বলেও জানান তিনি।

ঋতুপর্ণার চাচা চইক্যা চাকমা বলছেন, আমার ভাতিজির এমন অর্জনে আমাদের পরিবার এবং গ্রামে আনন্দের জোয়ার বইছে। আমরা চাই আমাদের মেয়ে আরও সফল হোক, আরও এগিয়ে যাক। আমাদের মুখ উজ্জ্বল করুক।

বাংলাদেশ নারী দলের এ খেলোয়াড়ের কোচ শান্তি মণি বলছেন, ঋতুর ফাইনাল খেলা দেখে আমি খুশিতে আত্মহারা। পাহাড়ে খেলাধুলার সুযোগ বাড়লে ঋতুর মতো আরও প্রতিভাবান খেলোয়াড় তৈরি হবে। পাহাড়ের খেলাধুলার উন্নয়নে সরকারের কাছে সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।

ঘাগড়া বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক চন্দ্রা দেওয়ান বলছেন, আমাদের ছাত্রীর এমন বিজয়ে আমি ভীষণ খুশি। আমাদের স্কুলে আরও প্রতিভাবান খেলোয়াড় আছে। যত্ন নিতে পারলে ঋতুর মতো আরও প্রতিভাবান খেলোয়াড় বের হয়ে আসতে পারবে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঋতু, রূপনা, মণিকা একেকজন পাহাড় এবং বাংলার অহংকার। বাংলাদেশের বিজয় এগিয়ে নিতে পাহাড়ের খেলাধুলায় আরও সুযোগ বাড়াতে কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি প্রয়োজন।

বাংলাদেশ সময়: ১২০২ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩, ২০২৪
এসএম/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।