ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

পর্নোগ্রাফি ও জুয়ার সাইট-লিংক বন্ধের দাবি

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২০ ঘণ্টা, নভেম্বর ৪, ২০২৪
পর্নোগ্রাফি ও জুয়ার সাইট-লিংক বন্ধের দাবি

ঢাকা: দেশে অনলাইন জুয়া খেলা বাড়ছে, বাড়ছে সাইবার অপরাধ সেই সাথে তরুণ প্রজন্ম পর্নোগ্রাফিতে আসক্ত হয়ে পড়েছে। যার ফলে বাড়ছে ইন্টারনেটের অপব্যবহার বা ইন্টারনেট আসক্তি, পর্নোগ্রাফি আসক্তি, আর এর মাধ্যমে বাড়ছে বিষন্নতা, মানসিক চাপ, উদ্যেগ।

যা অত্যন্ত ভয়াবহ দেশের আগামী প্রজন্ম হুমকির মুখে। এ থেকে মুক্তি পেতে গ্রাহক অধিকার নিয়ে সোচ্চার নাগরিক সংগঠন বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে পর্নোগ্রাফি ও জুয়ার সকল সাইট লিংক বন্ধের দাবি জানানো হয়েছে।

সোমবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে সংগঠনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন,  ২০২২ সালের অক্টোবর থেকে গত বছর ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত বিটিআরসি ১২ হাজার তিনটি অনলাইন ব্যাটিং সাইট বন্ধ করেছিল। এমনকি পর্নোগ্রাফির বহু সংখ্যক সাইট বন্ধ করেছিল। কিন্তু সামগ্রিকভাবে বন্ধ করা যায়নি এবং কার্যক্রম চলমান রাখতে পারেননি নিয়ন্ত্রক কমিশন এমনকি টেলিকমিউনিকেশন নিরাপত্তার সাথে যুক্ত এনটিএমসি। যার ফলে সাম্প্রতিক সময়ে এক গবেষণায় দেখা গেছ দেশে কিশোর কিশোরীদের ৬৩ শতাংশ ইন্টারনেটে আসক্ত। বিষন্নতায় ভুগছে ৭৬ দশমিক ৬ শতাংশ। গবেষণাটিতে সবচাইতে ভয়াবহ তথ্য হচ্ছে কিশোর কিশোরীদের মধ্যে ৬২.৯ শতাংশ পর্নোগ্রাফিতে আসক্ত।

অন্যদিকে আমাদের নিজস্ব পরিসংখ্যানে লক্ষ্য করা যায় যে, দেশের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় দুই কোটি ইন্টারনেট ব্যবহারকারী জুয়ায় আসক্ত। পাড়া মহল্লায় একটি ডিভাইস ব্যবহার করে দুই বা চারজন এমনকি দর্শক হিসেবে আরো ৪-৫ জন মিলে জুয়া খেলায় লিপ্ত হচ্ছে। এ সকল জুয়া খেলায় প্রথমে কিছু অর্থ প্রাপ্তি হলেও ৯৯% ক্ষেত্রেই প্রতারিত হয়। আর এ সকল জুয়ার বিজ্ঞাপন ও লিংক অনলাইনে হাজার হাজার। পর্নোগ্রাফি সাইটে ঢুকলেই জুয়ার বিজ্ঞাপন। এমনকি সকল জুয়ার বিজ্ঞাপনে দেশি-বিদেশি নামকরা সেলিব্রেটি অংশ নিচ্ছে দেখা যায়। ফায়ারফক্স, মজিলা, অপেরা মিনি, ব্যাটা, এমনকি ক্রোম ব্রাউজে অবাধে সার্চ দিলেই মিলছে পর্নোগ্রাফির লিংক। এর পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পেজ খুলে যৌন ব্যবসা বিজ্ঞাপন দেওয়া হচ্ছে। যে বিজ্ঞাপনে স্পর্শ করার সাথে সাথে গ্রাহকের হোয়াটসঅ্যাপে সংযুক্ত হয়ে যাচ্ছে। গ্রাহকের তথ্য হাতিয়ে নিচ্ছে ওই সকল অপরাধী যৌন ব্যবসায়ী। পর্নো এবং জুয়া এ দুটি ওতপ্রোতভাবে যুক্ত। যারা ইন্টারনেটে আসক্ত হয়ে পড়ছেন বিশেষ করে যাদের জুয়া এবং পর্নোগ্রাফিতে আসক্তি বেশি তারাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, জুয়া বা পর্নোগ্রাফি সাইট লিংক এমনকি অ্যাপগুলি বন্ধ করা না গেলে আগামী প্রজন্ম ধ্বংস হয়ে যাবে। এর সাথে যুক্ত হচ্ছে নানা শ্রেণির বয়সের লোকজন।
সরকারের এ ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছি। সেই সাথে গণমাধ্যম, অপারেটর, নিয়ন্ত্রক সংস্থা, সরকার এবং বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অনলাইন নিরাপত্তায় জনসচেতনতা তৈরি করতে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছি। কেবলমাত্র নিরাপদ ইন্টারনেট ব্যবহারেই দেশের সমৃদ্ধি বয়ে আনতে পারে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫১৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ৪, ২০২৪ 
এমআইএইচ/এমএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।