ঢাকা: প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ থাইল্যান্ডের সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ও প্রেসিডেন্ট চানাকর্ন থেরাভেচপোলকুলের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। তাদের এই বৈঠকটি বাংলাদেশ এবং থাইল্যান্ডের মধ্যে সর্বোচ্চ আদালতের সঙ্গে সম্ভাব্য বিচারিক সহযোগিতার জন্য একটি যুগান্তকারী সূচনা।
মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) থাইল্যান্ডের বাংলাদেশ দূতাবাস এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
এতে উল্লেখ করা হয়, বৈঠকে বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি দুই দেশের বিচার বিভাগের জন্য একে অপরের সেরা অনুশীলনের ক্ষেত্রগুলো বিনিময় এবং শেখার সম্ভাবনার ওপর জোর দেন। বাংলাদেশে জুলাই বিপ্লবের প্রেক্ষাপটে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে তিনি যে কয়েকটি বিচার বিভাগীয় সংস্কার উদ্যোগ নিয়েছেন সে সম্পর্কে তিনি অবহিত করেন।
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত মামলার ব্যাকলগ হ্রাস, স্বচ্ছতা বৃদ্ধি এবং ডিজিটাইজেশনের মাধ্যমে ন্যায়বিচারের অধিকার উন্নত করার বিষয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। তিনি সালিসি, মধ্যস্থতা, পুনর্মিলন এবং ডিজিটাল সমাধানে দক্ষতা ভাগাভাগি করে নেওয়ার সম্ভাবনাকে চিহ্নিত করেছেন।
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত সম্প্রতি থাই সুপ্রিম কোর্টের তৃতীয় মহিলা সভাপতি নিযুক্ত হওয়ায় বিচারপতি চানাকর্নকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। তিনি থাইল্যান্ডের বিচার বিভাগের মধ্যে লিঙ্গ সমতা অর্জনের প্রশংসা করেন। তিনি জানান, দায়িত্ব গ্রহণের পর তিনি হাইকোর্ট বিভাগের তিনটি সাংবিধানিক বেঞ্চের প্রধান হিসেবে তিনজন নারী বিচারপতিকে নিয়োগ দেন। থাই প্রধান বিচারপতি উল্লেখ করেন যে বিচারিক প্রতিষ্ঠানের প্রতি জনগণের আস্থা জোরদার করার জন্য সুপ্রিম কোর্টে টেকসই উন্নতি অপরিহার্য। তিনি বার এবং বেঞ্চ উভয়কে সম্পৃক্ত করে একটি দ্বিপাক্ষিক বিচারবিভাগীয় বিনিময় কর্মসূচি প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনাকে স্বীকার করেছেন।
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত থাই প্রধান বিচারপতিকে সুবিধাজনক সময়ে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান। সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে পৌঁছানোর পর প্রধান বিচারপতিকে আদালতের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাগত জানান। তিনি এ সময় ভিজিটরস বুকে স্বাক্ষর করেন।
এর আগে বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি থাইল্যান্ডের বিচার বিষয়ক মন্ত্রী তাবি সোডসংয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তারা বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ডের মধ্যে সহযোগিতার সম্ভাব্য ক্ষেত্রগুলোর জন্য একটি ব্লুপ্রিন্ট তুলে ধরেন। তারা বিচার বিভাগীয় প্রশিক্ষণে সহযোগিতা ও বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য সক্ষমতা বৃদ্ধি নিয়ে আলোচনা করেন।
মিনিস্টার সোডসং বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতিকে থাই বিশ্ববিদ্যালয়ে বক্তৃতা দেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানান, যার মধ্যে রয়েছে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ প্রদেশের দক্ষিণ থাইল্যান্ডের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো।
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত ব্যাংককের জাতিসংঘ সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত বিচার বিষয়ক এক সম্মেলনে মূল বক্তব্য দিতে থাইল্যান্ড সফর করেন। পরে বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি বিচার বিভাগের স্বাধীনতা বিষয়ক প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন। সফরকালে তিনি ব্যাংকক-ভিত্তিক বেশ কয়েকজন আইনজীবী, শিক্ষাবিদ ও কূটনীতিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। থাইল্যান্ডে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ফাইয়াজ মুর্শিদ কাজী বিভিন্ন দাপ্তরিক বৈঠকে তার সঙ্গে ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ১২,২০২৪
টিআর/এমএম