ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

জলাবদ্ধ ভবদহে স্যানিটেশন সুবিধায় ‘ভাসমান টয়লেট’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩১ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৪, ২০২৪
জলাবদ্ধ ভবদহে স্যানিটেশন সুবিধায় ‘ভাসমান টয়লেট’

যশোর: জলাবদ্ধ ভবদহ অঞ্চলের স্যানিটেশন সুবিধার জন্য ‘ভাসমান টয়লেট’ উদ্ভাবন করেছেন মণিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। এটি ফলপ্রসূ হলে জলাবদ্ধ এ অঞ্চলের কয়েক লাখ মানুষের পয়োনিষ্কাশন সমস্যার একটি সমাধান মিলবে বলে সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন।

মণিরামপুরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিশাত তামান্নার পরিকল্পনা ও আর্থিক সহায়তায় উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল দপ্তর এ ‘ভাসমান টয়লেট’ তৈরি করেছে। পাইলট আকারে এ টয়লেট স্থাপনের পর জলাবদ্ধ জনগোষ্ঠী উপকৃত হলে এটি প্রকল্প আকারে নেওয়া হবে।

দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের দুঃখ ‘ভবদহ’র জলাবদ্ধতায় আক্রান্ত তিনটি জেলা। যশোরের মণিরামপুর, কেশবপুর ও অভয়নগর, খুলনার ফুলতলা ও ডুমুরিয়া এবং সাতক্ষীরার তালা উপজেলার পাঁচ শতাধিক গ্রাম জলাবদ্ধতায় পড়ে।

বর্ষা মৌসুমের ভারী বর্ষণ এবং উজানের নেমে আসা পানিতে এসব গ্রামের প্রায় পাঁচ লাখ মানুষ প্রতিবছর কম-বেশি জলাবদ্ধতায় ভোগেন। এ বছর নাজুক পরিস্থিতিতে এখনও কয়েক লাখ মানুষ পানিবন্দি জীবনযাপন করছেন। বাড়ি-ঘর পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় মানবেতর জীবন-যাপন তাদের।  

বিশুদ্ধ খাবার পানি সংকটের পাশাপাশি স্যানিটেশনেও চরম ভোগান্তি পোহাতে হয় বাসিন্দাদের। কখনো পানির মধ্যেই, আবার কখনো উঁচু সড়কের পাশে কোনো রকমে টয়লেট তৈরি করা হয়। জলাবদ্ধ মানুষের এ দুর্দশা দেখে ‘ভাসমান টয়লেট’ তৈরির পরিকল্পনা করেন মণিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিশাত তামান্না।

তিনি বলেন, ভবদহ এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে আমি দেখি জলাবদ্ধতার কারণে স্যানিটেশনে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে এ জনপদের বাসিন্দাদের। বিশেষ করে নারীদের এই দুর্দশা অবর্ণনীয়। তখনই আমি চিন্তা করি, তাদের টয়লেটের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। তখন আমার মাথায় আসে ঝাপা বাওড়ের ভাসমান সেতুর প্রযুক্তির কথা। পরে সেটির কাজে লাগিয়ে সম্পূর্ণ উপজেলা প্রশাসনের নিজ পরিকল্পনায় ভাসমান টয়লেট তৈরি করতে সক্ষম হয়েছি।  

‘ভাসমান টয়লেট’ তৈরি প্রসঙ্গে উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী জয়দেব দত্ত জানান, মূলত ঝাপা বাওড়ে ভাসমান সেতুর প্রযুক্তি ব্যবহারে এই ভাসমান টয়লেট তৈরি করা হয়েছে। এতে পাঁচটি প্লাস্টিকের ড্রাম, কাঠ ও লোহার ফ্রেম ও টিন ব্যবহার করা হয়েছে। সব মিলিয়ে প্রতিটি ভাসমান টয়লেট তৈরিতে ৩৫ হাজার টাকা ব্যয় হচ্ছে।  

তিনি বলেন, ভাসমান টয়লেটের প্রধান সুবিধা হলো এটি পানির ওপর সহজেই ভাসতে পারবে। এ টয়লেটে একটি ড্রাম এমনভাবে স্থাপন করা হয়েছে, যাতে পয়োবর্জ্য পানিতে পড়ে পরিবেশ দূষিত না হয়। ড্রাম ভর্তি হয়ে গেলে সহজেই খুলে ফের স্থাপন করা যাবে।

মণিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিশাত তামান্না আরও বলেম্ন, প্রাথমিকভাবে একটি ‘ভাসমান টয়লেট’ তৈরি করা হয়েছে। দ্রুতই এটি হস্তান্তর করা হবে। আরও আটটি ‘ভাসমান টয়লেট’ তৈরির কাজ চলছে। পাইলট আকারে এ টয়লেট স্থাপনের পর জলাবদ্ধ জনগোষ্ঠী উপকৃত হলে এটি প্রকল্প আকারে নেওয়া হবে। তখন মণিরামপুরের জলাবদ্ধ অঞ্চলের মানুষের মাঝে তা বিনামূল্যে বিতরণ করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২০২২ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৪, ২০২৪
ইউজি/আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।