ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

রাবিতে শিবির-ছাত্রলীগ সংঘর্ষ, গুলি, আহত ২০, আটক ৫

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, রাবি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৪১ ঘণ্টা, অক্টোবর ২, ২০১২
রাবিতে শিবির-ছাত্রলীগ সংঘর্ষ, গুলি, আহত ২০, আটক ৫

রাজশাহী: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে শিবির ও ছাত্রলীগের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় প্রায় ৫০ রাউন্ড গুলির শব্দ শোনা গেছে।



এ ঘটনায় শিবিরের দুই কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। আহত হয়েছেন উভয় পক্ষের প্রায় ২০ জন। এদের মধ্যে ৬ জনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের নাম পাওয়া যায়নি।

এদিকে, পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে প্রক্টরসহ প্রক্টরিয়াল বডির ৬ সদস্য আহত হয়েছেন।

ক্যাম্পাসে পুলিশের পাশাপাশি ৠাব ও বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। হলে হলে তল্লাশি চলছে। পুলিশ ৫ শিবিরকর্মীকে আটক করেছে।

মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শহীদুল্লাহ কলাভবনের সামনে থেকে এ সংঘর্ষ শুরু হয়। পরে পুরো ক্যাম্পাসে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার এসএম মনিরুজ্জামান জানান, পরিস্থিতি বর্তমানে শান্ত আছে। তবে এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে যাতে সহিংসতা না ছড়াতে পারে সে জন্য বিজিবি ও ৠাব- ৫ এর সদস্যরা পুলিশের সঙ্গে কাজ করছে। ক্যাম্পাসে বর্তমানে ৬ প্লাটুন প‍ুলিশ অবস্থান করছে।

তিনি বলে, “সামনে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা। এই পরীক্ষার সময় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে প্রতিবছরই এ ধরনের সংঘর্ষ হয়। গত কয়েকদিন ধরে শিবির ও ছাত্রলীগ শো ডাউন করছে। তবে এবার তাদের মাথাচাঁড়া দিয়ে উঠতে দেওয়া হবে না। ”

তিনি জানান, ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের ধরতে এবং অস্ত্র উদ্ধার করতে বিভিন্ন হলে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। এরই মধ্যে শিবিরের ৫ জনকে আটক করা হয়েছে। তিনি ক্যাম্পাসে অভিযান পরিচালনা করছেন।

শিবিরের আহত দু’জনের নাম পাওয়া গেছে। এরা হলেন— শিবিরের রাবি সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন ইয়াহিয়া, কর্মী নিপুন।

অপরদিকে, ছাত্রলীগ দাবি করেছে, তাদের এক কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তার নাম আখিরুজ্জামান তাকিন। তাকেও রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

আখিরুজ্জামান রাবি ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সহসভাপতি। এছাড়া আহত সাধারণ শিক্ষার্থীর নাম আল আমিন।

এদিকে, ঘটনার পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে প্রক্টরসহ প্রক্টরিয়াল বডির ৬ সদস্য আহত হয়েছেন। এ বিষয়ে প্রক্টর চৌধুরী মো. জাকারিয়া সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করি। এ সময় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়েছে। "

অপরদিকে, রাবি ছাত্রলীগের সভাপতি আহমেদ আলী বলেন, "প্রশাসন ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। ছাত্রশিবির ভর্তি পরীক্ষা বানচাল করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করার চেষ্টা করলে আমরা প্রতিহত করি। "

তবে তাদের পক্ষ থেকে গুলি করা হয়নি বলে দাবি করেন তিনি।

প্রসঙ্গত, সোমবার দুপুর ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন পুলের কাছে গুলির শব্দের ঘটনায় রাতে ছাত্রলীগ মতিহার থানায় শিবিরের অজ্ঞাতনামা অর্ধশতাধিক নেতাকর্মীকে দায়ী করে একটি মামলা দায়ের করে।

এ ঘটনারই জের ধরে ইসলামী ছাত্রশিবিরের কর্মীরা মঙ্গলবার সকালে ক্যাম্পাসে অবস্থান নিয়ে মহড়া দেওয়ার চেষ্টা করলে ছাত্রলীগ তাদের ধাওয়া দেয়। এ সময় গুলির শব্দ শোনা যায়।

এ বিষয়ে মতিহার থানার ওসি আনিসুর রহমান বলেন, “এখনই এ বিষয়ে কিছু বলতে পারছি না। ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও গোলাগুলি হয়েছে। আমাদের পুলিশ সদস্যরা সতর্ক অবস্থানে আছে। ”

ক্যাম্পাস সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় শিবির কর্মীরা বিশ্ববিদ্যারয়ের শহীদুল্লাহ কলা ভবনের সামনে অবস্থান নেয়। এদিকে ছাত্রলীগ কর্মীরা ক্যম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় অস্ত্রসহ অবস্থান নেয়।

একপর্যায়ে শিবির কর্মীরা বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ক্যাম্পাসে মিছিল করার চেষ্টা করলে ছাত্রলীগ তাদের ধাওয়া দেয়। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া ও পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে এবং গুলির শব্দও শোনা যায়।

এতে শিক্ষার্থীরা দিগ্বিদিক ছোটাছুটি করেন। এ ঘটনায় ক্যাম্পাসে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে ক্যাম্পাস পরিস্থিতি শান্ত।

বাংলাদেশ সময়: ১৪২৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ০২, ২০১২
সম্পাদনা: বেনু সূত্রধর, নিউজরুম এডিটর/এজে/এবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।