ঢাকা: ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। জনরোষের ভয়ে ওই দিনই গণভবন ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
গত ৫ আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত ঘটনাবহুল সময় পার করছে দেশের মানুষ। একের পর এক ইস্যু সামাল দিতে হচ্ছে নতুন সরকারকে। গণঅভ্যুত্থানের পর থেকে আলোচিত-সমালোচিত আন্দোলন, কর্মকাণ্ড ও উল্লেখযোগ্য ঘটনাগুলো তুলে ধরা হলো।
পুলিশ সদস্যদের কর্মবিরতি
অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের আগেই প্রথম ধাক্কাটা আসে পুলিশ বাহিনী থেকে। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরদিন ৬ আগস্ট থেকে অনির্দিষ্ট কালের জন্য কর্মবিরতির ঘোষণা দেয় বাংলাদেশ পুলিশ কর্মচারী সংগঠন। ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর বিভিন্ন উদ্যোগ ও আলোচনার পর ১১ আগস্ট কর্মবিরতির কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন আন্দোলনরত পুলিশ সদস্যরা।
এই সময়টাতে দেশের মানুষ পুলিশি সেবা পায়নি। থানাসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা পাহারার পাশাপাশি রাস্তায় ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের কাজে নেমে আসেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা। পুলিশের অনুপস্থিতিতে কাজ করেন সেনাবাহিনী, আনসারসহ অন্যান্য বাহিনীর সদস্যরা।
সনাতন ধর্মালম্বীদের ব্যানারে শাহবাগ অবরোধ
পুলিশ বাহিনীর কর্মবিরতির মধ্যেই অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পরদিন ৯ আগস্ট সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন দাবিতে শাহবাগে অবরোধ করেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে সন্ধ্যা সোয়া ৭টা পর্যন্ত প্রায় চার ঘণ্টা শাহবাগ মোড় অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন তারা। এরপর থেকে বিভিন্ন সময় অবরোধ ও বিক্ষোভসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছেন সনাতন ধর্মালম্বীরা।
ইসকনের সংগঠক অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে গ্রেপ্তারের ইস্যুটি সামনে আসার আগের আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় সবশেষ ১৩ সেপ্টেম্বর কয়েকটি প্ল্যাটফর্মের উদ্যোগে শাহবাগ অবরোধ করেন সনাতন ধর্মালম্বীরা।
অন্তর্বর্তী সরকার সনাতন ধর্মালম্বীদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা এবং বিভিন্ন উদ্যোগের মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ উপায়ে এ সংকট পার করার চেষ্টা করে। পাশাপাশি ৫ আগস্টের পর থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীরা ছাড়াও জামায়াত-শিবির, বিএনপি, হেফাজতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠন সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর-মন্দির পাহারা দেয়, তাদের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করে। সংখ্যালঘুদের ওপর পরিকল্পিত হামলার ঘটনা ঘটিয়ে যাতে কেউ এটিকে রাজনৈতিক কার্ড হিসেবে ব্যবহার করতে না পারে, সে ব্যাপারে সর্বোচ্চ সতর্ক ছিল সেনাবাহিনীসহ সবগুলো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
চিন্ময় অনুসারীদের সহিংস বিক্ষোভ
জাতীয় পতাকার ওপর সাম্প্রদায়িক ধর্মীয় গোষ্ঠী ইসকনের গেরুয়া রঙের ধর্মীয় পতাকা উত্তোলন করে রাষ্ট্রের অখণ্ডতাকে অস্বীকার এবং জাতীয় পতাকা অবমাননা, বিভিন্ন সভা-সমাবেশে সাম্প্রদায়িক উসকানিমূলক বক্তব্য ও কর্মকাণ্ডের অভিযোগে সনাতন ধর্মবিশ্বাসী সংগঠন আন্তর্জাতিক শ্রীকৃষ্ণ ভাবনামৃত সংঘের (ইসকন) আলোচিত সংগঠক চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর গ্রেপ্তারকে কেন্দ্র করে মর্মান্তিক সংঘাত সৃষ্টি হয়।
চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের অনুসারীরা বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ করেন। সবচেয়ে বড় ঘটনা ঘটে চট্টগ্রাম আদালত এলাকায়। সেখানে গত ২৬ নভেম্বর সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন শুনানির পর আদালত এলাকায় সংঘাতে জড়ান চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের অনুসারীরা। এ সংঘাতের সময় সহকারী সরকারি কৌঁসুলি (এপিপি) অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফ (৩৫) নামে এক আইনজীবীকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন মিছিল সমাবেশ করে। এদিকে সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ও অনৈতিকতার দায়ে চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে অনেক আগে ইসকন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে বলে জানায় সংগঠনটি। চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের কোনো কর্মকাণ্ডের দায় ইসকন নেবে না বলেও সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়।
সংঘাতে রূপ নেয় আনসার ইস্যু
গণঅভ্যুত্থানের পর পুলিশ বাহিনী যখন মোটামুটি স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে, সনাতন ধর্মালম্বীরাও থেমে থেমে কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছে। এসবের মধ্যে চাকরি জাতীয়করণসহ বিভিন্ন দাবিতে ২৩ আগস্ট মাঠে নামেন আনসার বাহিনীর সদস্যরা। সংঘাতের মধ্যে দিয়ে শেষ হওয়া আনসার ইস্যুটি সারা দেশে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে। শাহবাগ, বিমানবন্দর, প্রেসক্লাবে বিক্ষোভ-অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন তারা। এর মধ্যে অন্তর্বর্তী সরকার এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা তাদের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যান। বেশ কিছু দাবি মানার পাশাপাশি যৌক্তিক সব দাবি মেনে নিতে কিছুটা সময় চায় সরকারপক্ষ।
এর মধ্যে ২৫ আগস্ট সচিবালয় ঘেরাও করেন আনসার সদস্যরা। একই সময়ে সচিবালয়ের ভেতরে আনসার আন্দোলনের সমন্বয়কদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাসহ কয়েকজন উপদেষ্টা ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহসহ কয়েকজন নেতা। আনসারের রেস্ট প্রথা বাতিলসহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দাবি মেনে নেওয়া হয়। বাকি দাবিগুলো দ্রুততম সময়ে পর্যায়ক্রমে মেনে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। দাবি মানার পর আনসার আন্দোলনের সমন্বয়করা আন্দোলন কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন। কিন্তু কয়েকজন আনসার সদস্যের নেতৃত্বে সচিবালয়ের নিরাপত্তা বলয় ভেঙে ভেতরে ঢুকে পড়ে শত শত আনসার সদস্য, হাসনাত আবদুল্লাহসহ কয়েকজন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকে মারধর করেন।
পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীরা ছুটে আসেন সচিবালয়ে। আনসার সদস্যরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ান। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী এসে আনসার সদস্যদের ছত্রভঙ্গ করে দেন। এ ঘটনায় জড়িত আনসার সদস্যদের সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। পরে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের খবরে দেখা যায় সচিবালয়ে হামলায় জড়িত আনসার সদস্য যুবলীগ নেতা।
প্রধান বিচারপতির ফুল কোর্ট সভা, শিক্ষার্থীদের আদালত ঘেরাও
সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগের সব বিচারপতিকে নিয়ে একটি জরুরি ফুল কোর্ট সভা ডাকেন আওয়ামী লীগ ঘনিষ্ঠ সাবেক প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। এ সভার প্রতিবাদে ১০ আগস্ট আদালত চত্বরে অবস্থান নিয়েছিলেন কয়েক হাজার শিক্ষার্থী। পরে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানসহ আপিল বিভাগের ৬ বিচারক পদত্যাগ করেন। অন্য পাঁচ বিচারপতি হলেন এম ইনায়েতুর রহিম, মো. আবু জাফর সিদ্দিকী, জাহাঙ্গীর হোসেন, মো. শাহিনুর ইসলাম ও কাশেফা হোসেন। একই দিন সৈয়দ রেফাত আহমেদকে নতুন প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।
চাকরির ন্যূনতম বয়স ৩৫ করার দাবিতে আন্দোলন
চাকরির ন্যূনতম বয়সসীমা ৩৫ বছর করার দাবি নতুন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পরই আবার মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। ৭ সেপ্টেম্বর সরকারি চাকরিতে প্রবেশের ন্যূনতম বয়স ৩৫ বছর করার দাবিতে ঢাকার শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন আন্দোলনকারীরা। দাবি আদায়ে পরের দিনগুলোতে দফায় দফায় অবরোধ ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন তারা। পরবর্তীতে সরকার চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২ বছর করে দেয়। সরকারের এ দাবি অনেকে প্রত্যাখ্যান করে থেমে থেমে কর্মসূচি দিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন এখনো।
পোশাক শিল্পে অস্থিরতা, শ্রমিক অসন্তোষ
গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর আওয়ামী লীগের জায়গায় অন্যরা এসে ক্ষমতার শূন্যতা পূরণ ও ঝুট ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিতে শুরু করে। রক্তাক্ত গণঅভ্যুত্থানের পরও একটি দলের নতুন মুখ ও মোড়কে আগের আমলের সংস্কৃতির পুনরাবৃত্তি থেকে শুরু হয় এ সেক্টরের অশান্তি। তার ওপর আওয়ামী লীগ আমলের বিশেষ সুবিধাভোগী কিছু মালিকের পলায়নের কারণে সেসব কারখানা বন্ধের ফলে এ সেক্টরের শ্রমিকরা মাঠে নেমে আসেন। সাভার, আশুলিয়া, আব্দুল্লাহপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় শত শত শ্রমিক রাস্তায় নেমে আসেন। শ্রমিকদের রাস্তায় নামাতে দেশি-বিদেশি চক্র ইন্ধন জোগায়। সেপ্টেম্বর-অক্টোবর এই দুই মাস অস্থিতিশীল ছিল পোশাক শিল্প খাত। শুরু থেকে অন্তর্বর্তী সরকারের সংশ্লিষ্টদের উদ্যোগে ধীরে ধীরে পরিস্তিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। এই মুহূর্ত্বে পোশাক শিল্পের পরিস্থিতি মোটামুটি স্বাভাবিক।
সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
একটি পূর্ণাঙ্গ স্বায়ত্তশাসিত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবিতে রাস্তা বন্ধ করে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। রাস্তা অবরোধ করে তারা আন্দোলন করায় নগরবাসীকে বেশ কিছুদিন তীব্র যানজটের ভোগান্তিতে পড়তে হয়। ২১ অক্টোবর শুরু হওয়া এই আন্দোলন বিরতি দিয়ে চলে নভেম্বরের শেষ পর্যন্ত। এর মধ্যে সবচেয়ে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে মহাখালীতে তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের রেললাইন অবরোধ করার সময়। তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা ট্রেনে ইট-পাটকেল ছুড়লে গত ১৮ নভেম্বর শিশুসহ বেশ কয়েকজন ট্রেনের যাত্রী রক্তাক্ত হন।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিভুক্ত হওয়া সাতটি সরকারি কলেজের শিক্ষা ও প্রশাসনিক সমস্যা নিরসনে একটি কমিটি গঠন করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এই কমিটি সাত কলেজের একাডেমিক ও প্রশাসনিক সমস্যা চিহ্নিত করে সমস্যা নিরসনে প্রয়োজনীয় সুপারিশ প্রণয়ন করবে। আগামী ছয় সপ্তাহের মধ্যে তা করতে বলা হয়েছে।
ঋণের প্রলোভনে শাহবাগে হঠাৎ হাজারো মানুষ
শাহবাগের সমাবেশে যারা উপস্থিত থাকবেন তাদের এক লাখ থেকে দশ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ দেওয়া হবে, এমন প্রলোভন দেখিয়ে গত ২৫ নভেম্বর সারা দেশ থেকে গাড়ি ভর্তি করে লোক আনা হয়েছিল। রোববার রাত থেকে সোমবার সকাল পর্যন্ত এমন প্রায় তিনশোরও বেশি বাস, মাইক্রোবাস আটক করে পুলিশ। ‘অহিংস গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশ’ নামে একটি সংগঠনের আয়োজনে তারা এসেছেন।
ডাকাত আতঙ্ক, প্রতিরোধে মাঠে নামে ছাত্র-জনতা
ছাত্র-জনতার রক্তাক্ত অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন এবং শেখ হাসিনা পলায়নের পর ৬ আগস্ট থেকে রাজধানীসহ সারা দেশে ডাকাত আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ডাকাত ঠেকাতে পাহারায় নামে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থী, সাধারণ জনতা, জামায়াত-শিবির, বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। বেশ কিছুদিন চলে সেই ডাকাত আতঙ্ক।
জামালপুর কারাগারে সহিংসতায় ৬ বন্দি নিহত
অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের দিন জামালপুর জেলা কারাগারে বিক্ষোভ ও সংঘর্ষে ছয় বন্দি নিহত হয়েছিলেন। এ ঘটনায় কারাগারের জেলার, কারারক্ষী ও বন্দিসহ ১৯ জন আহত হয়েছেন। ০৮ আগস্ট দুপুর থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত কারাবন্দিদের মধ্যে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকদের অবরোধ
ঢাকা মহানগর এলাকার সড়কে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার চলাচল তিন দিনের মধ্যে বন্ধ বা বিধিনিষেধ আরোপ করার নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। গত ২০ নভেম্বর আদালতের এমন নির্দেশনার প্রতিবাদে রাস্তায় নামে শত শত অটোরিকশা চালক। তারা রাজধানীর মোহাম্মদপুর, ধানমন্ডি, যাত্রাবাড়ী, জাতীয় প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন এলাকার সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। অটোরিকশা চালকদের দাবির মুখে রাজধানীর সড়কে ব্যাটারিচালিত রিকশা ও অটোরিকশা বন্ধে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ স্থগিত চেয়ে ২৫ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আবেদন করে সরকার।
পাহাড়ি-বাঙালি সংঘাত, উত্তপ্ত হয় পার্বত্য এলাকা
১৮ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়িতে মোটরসাইকেল চুরির ঘটনায় গণপিটুনিতে মো. মামুন নামের এক যুবক মারা যান। প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার দুপুরের পর দীঘিনালা কলেজ থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি দীঘিনালার লারমা স্কয়ার পর্যন্ত গেলে সেখানে হামলা হয় বলে অভিযোগ বাঙালি ছাত্রদের। পরে এ সংঘাত খাগড়াছড়ির বাইরে রাঙামাটিতেও ছড়িয়ে পড়ে এ সংঘাত। নানা রকম গুজবের কারণে সহিংসতা ব্যাপক আকার ধারণ করে। পরিস্তিতি নিয়ন্ত্রণে ১৪৪ ধারা জারি করে সরকার। এ ঘটনায় বেশ কয়েকজনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। সংঘাতময় পরিস্থিতিতে খাগড়াছড়িতে আটকা পড়েন কয়েক হাজার পর্যটক।
ইসলামী ব্যাংক দখলের চেষ্টা, গুলিবিদ্ধ ৬ জন
ইসলামী ব্যাংক পিএলসির প্রধান কার্যালয়ের সামনে আন্দোলনরত কর্মীদের সঙ্গে সংঘাতে জড়ায় এস আলম গ্রুপের পক্ষের লোকজন। এতে ব্যাংকের ছয় জন কর্মকর্তা-কর্মচারী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। ১১ আগস্ট সকাল ১০টার দিকে রাজধানীর মতিঝিলের দিলকুশায় ইসলামী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে। এস আলম গ্রুপের হয়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের সদস্য সচিব রবিউল ইসলাম নয়ন তার অনুসারী নিয়ে এ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন বলে অভিযোগ উঠেছে।
গোপালগঞ্জে সেনাবাহিনীর ওপর হামলা, গাড়িতে আগুন-ভাঙচুর
১০ আগস্ট গোপালগঞ্জে সেনাবাহনীর সদস্যদের ওপর হামলা চালায় স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। গোপালগঞ্জের ভেতর দিয়ে সেনা টহল দল যাওয়ার সময় উত্তেজিত আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা দেশীয় ধারালো অস্ত্র নিয়ে সেনাবাহিনীর দুটি গাড়ি ভাঙচুর করে এবং আরেকটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে পুড়িয়ে দেয়। এ ছাড়া অ্যাম্বুলেন্সসহ দুটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। এ ঘটনায় ৪ সেনাসদস্য, সংবাদকর্মী ও স্থানীয় জনতাসহ অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে দুই শিশু গুলিবিদ্ধ হয়েছে। পরে অতিরিক্ত আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৮০৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৯, ২০২৪
এমইউএম/এমজেএফ