ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

ঘরে মিলল নিখোঁজ শিশুর মরদেহ, গণপিটুনিতে বাড়িওয়ালা নিহত!

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৩১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০২৪
ঘরে মিলল নিখোঁজ শিশুর মরদেহ, গণপিটুনিতে বাড়িওয়ালা নিহত!

ফরিদপুর: ফরিদপুরে নিখোঁজ হওয়ার পরের দিন একটি বাড়ি থেকে তাহিয়া (৭) নামে এক শিশুর বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় ওই বাড়ির মালিক মো. হায়দার মোল্যা ওরফে শাহীন (৫৫) এলাকাবাসীর গণপিটুনিতে নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

 

বুধবার (১১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে ঘটনাটি ঘটেছে জেলার সদর উপজেলার অম্বিকাপুর ইউনিয়নের চর নসিপুর গ্রামে।  

এর আগে একই দিন বিকেল ৫টার দিকে পিটুনিতে নিহত মো. হায়দার মোল্লার ঘরের মাচার নিচ থেকে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। শিশু তাহিয়া সম্পর্কে মো. হায়দার মোল্যার নাতনি হয় বলে জানা যায়।  

শিশু তাহিয়া চর নসিপুর গ্রামের জিয়া মোল্লার মেয়ে এবং চর নশিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী।  

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন অম্বিকাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল আলম। ফরিদপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) আব্দুল জলিল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।  

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, চর নসিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী তাহিয়া মঙ্গলবার বিকেলে নিখোঁজ হয়। শিশুটিকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে বলো ধারণা করেছেন স্থানীয়রা। এ হত্যাকাণ্ড ধামাচাপা দিতে হায়দার তার বসতঘরের বারান্দার একটি কক্ষের মাচার নিচে বস্তাবন্দি অবস্থায় শিশুটির মরদেহ লুকিয়ে রাখে। ঘটনার পরের দিন বুধবার বিকেলে স্থানীয়দের অভিযোগের ভিত্তিতে কোতোয়ালি থানা পুলিশ হায়দারের ঘরের মাচার নিচ থেকে তাহিয়ার মরদেহ উদ্ধার করে।  

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হায়দার মোল্যা এর আগে ধর্ষণের অভিযোগে দীর্ঘদিন জেল খেটেছিলেন। এরপর তিনি মালয়েশিয়া চলে যান। সেখানেও নারী সংক্রান্ত জটিলতায় জেল খাটেন। এরপর মুক্তি পেয়ে গত বছর খানেক আগে বাড়িতে ফিরে আসেন। তিনি ওই শিশুটিকে ধর্ষণ করে হত্যা করে বস্তাবন্দি করে রাখেন বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।

এ ব্যাপারে অম্বিকাপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান নুরুল আলম বলেন, গণপিটুনিতে মারা গেছে হায়দার মোল্লা। পুলিশ গণপিটুনি দেওয়া জনতাকে ঠেকানোর চেষ্টা করলেও বিক্ষুব্ধ জনতা বেশি হওয়ায় পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।

কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদউজ্জামান বলেন, নিখোঁজ মেয়েটির খোঁজে তদন্তে নেমে পাশের বাড়ির হায়দার মোল্লা ওরফে শাহীন (৫৫) নামে এক ব্যক্তিকে সন্দেহ করা হয়। পরে তার ঘরের ভেতর তল্লাশি চালিয়ে একটি বস্তার ভেতরে বিদ্যুতের তার দিয়ে পেঁচানো অবস্থায় তাহিয়ার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

ঘটনাস্থল পরিদর্শনকারী ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) শৈলেন চাকমা বলেন, হত্যার আগে শিশুটিকে ধর্ষণ করা হয়েছিল কিনা তা ময়নাতদন্তের পর জানা যাবে। মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে ফরিদপুরের কোতোয়ালি থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।  

বাংলাদেশ সময়: ০৯২৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০২৪
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।