ঢাকা: রাজধানীর মিরপুরে একটি বাড়িতে গ্যাস লিকেজ থেকে বিস্ফোরণের ঘটনায় দগ্ধ সাতজনের মধ্যে স্বপ্না আক্তার (২২) নামে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে এ ঘটনায় মোট পাঁচজনের মৃত্যু হলো।
শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) বিকেলে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে মারা যান স্বপ্না। এর আগে মারা যান একই পরিবারের আব্দুল্লাহ, তার ভাই মোহাম্মদ, তাদের মা রুমা আক্তার ও বাবা আব্দুল খলিল।
জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. মো. শাওন বিন রহমান মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, স্বপ্নার শরীরের ১৪ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল এবং শ্বাসনালি পুড়ে গিয়েছিল। বিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। এ ঘটনায় ২০ শতাংশ দগ্ধ নিয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ইসমাইল নামে একজন।
জানা যায়- ২৪ নভেম্বর (রোববার) ভোরে মিরপুর-১১, ৫ নম্বর এভিনিউ, সি ব্লকের ১৬ নম্বর রোডের একটি বাসায় একই পরিবারের চারজনসহ মোট সাতজন দগ্ধ হয়।
স্বপ্নার স্বামী মো. শাহজাহান জানান, তাদের বাড়ি শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ি উপজেলায়। স্বপ্নার বাবার নাম আব্দুল মালেক। মিরপুরের ওই বাসাতে ভাড়া থাকেন তারা। তারা স্বামী-স্ত্রী একটি গার্মেন্টে চাকরি করেন। রাতে তারা বাসায় ঘুমিয়ে ছিলেন। ভোর আনুমানিক ৪টার দিকে হঠাৎ বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পান। ঘুম ভাঙতেই দেখেন চারদিকে আগুন জ্বলছে। তাদের শরীরে আগুন লেগে গেছে। তখন নিজেরাই বাসার বাইরে বের হন।
তিনি জানান, তাদের বাসায় কোনো গ্যাস সিলিন্ডার নেই। বাসার সামনে দিয়ে গ্যাস লাইন রয়েছে। দুই দিন আগে রাস্তার পাশে সেই গ্যাস লাইনে হঠাৎ করে আগুন জ্বলে উঠেছিল। পরে স্থানীয়রা সে আগুন নেভান। তার তার ধারণা, সেই লাইন থেকে লিকেজ হয়ে তাদের রুমের ভেতর গ্যাস জমে ছিল। তার জন্য বিস্ফোরণ হয়েছে।
আগুনের ঘটনায় রঙমিস্ত্রী খলিলসহ দগ্ধ হন তার স্ত্রী গৃহিণী রুমা আক্তার (৩২), ছেলে হাফেজ আব্দুল্লাহ (১৩), মাদরাসাছাত্র মোহাম্মদ (১০) ও ইসমাইল (৪)। আর পাশের বাসার ভাড়াটিয়া মো. শাহজাহান (২৫) ও তার স্ত্রী স্বপ্না আক্তার (২২)। তারা দুজনই গার্মেন্টস কর্মী। এদের মধ্যে ইসমাইল এখনো চিকিৎসাধীন আর নিহত স্বপ্নার স্বামী প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
মৃত আব্দুল খলিলের ভাতিজি নাসিমা আক্তার রুপালী জানান, তাদের বাড়ি মুন্সিগঞ্জের সদর উপজেলার চর বাঙলাবাজার গ্রামে। তিন ছেলেসহ তার চাচা-চাচি মিরপুরের ওই বাসায় ভাড়া থাকেন। তাদের পাশের বাসায় ভাড়া থাকেন ওই দম্পতি। রোববার ভোরে তিনি খবর পান, ওই বাসায় গ্যাস লিকেজ থেকে বিস্ফোরণ হয়েছে। তারা সবাই দগ্ধ হয়েছেন। পরে তাদের উদ্ধার করে বার্ন ইনস্টিটিউটে নিয়ে আসা হয়।
খলিলের ভায়রা আব্দুল হালিম জানান, রোববার ভোরে খলিল যখন মশার কয়েল জ্বালানোর জন্য দিয়াশলাই জ্বালান, তখনই জমে থাকা গ্যাসের কারণে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।
আরও পড়ুন>
** মিরপুরে দগ্ধ হয়ে বাবা-মা-ভাইয়ের পর চলে গেল আব্দুল্লাহ
** বাবা-মায়ের পর চলে গেল দগ্ধ শিশু সন্তানও
** স্বামীর পর চলে গেলেন স্ত্রীও
** মিরপুরে দগ্ধ সাতজনের একজনের মৃত্যু
** মিরপুরে লিকেজ থেকে বিস্ফোরণ, শিশুসহ দগ্ধ সাত
বাংলাদেশ সময়: ১০৫০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৫, ২০২৪
এজেডএস/আরএ