ঢাকা, বুধবার, ১৮ পৌষ ১৪৩১, ০১ জানুয়ারি ২০২৫, ০০ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

জামিন পেলেন তিন খুনের আসামি, বাদী পক্ষের শঙ্কা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৯, ২০২৪
জামিন পেলেন তিন খুনের আসামি, বাদী পক্ষের শঙ্কা

সিরাজগঞ্জ: সিরাজগঞ্জের তাড়াশে একই পরিবারের তিনজনকে গলা কেটে হত্যা মামলার একমাত্র আসামি রাজীব কুমার ভৌমিক জামিনে মুক্ত হয়েছে।  

বিচার শুরু না হতেই মামলার একমাত্র আসামির জামিন হওয়ায় তার পালিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছে বাদী ও তার পরিবার।

 

এদিকে ওই আসামির জামিন হওয়া নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই তিন খুনের মামলার আসামির জামিন পাওয়ার প্রতিবাদও জানিয়েছেন। হতাশা ব্যক্ত করে ন্যায় বিচার পাওয়া নিয়েও শঙ্কা প্রকাশ করেছেন অনেকে।  

প্রসঙ্গত, চলতি বছরের জানুয়ারিতে টাকা-পয়সা লেনদেনকে কেন্দ্র করে দ্বন্দ্বের জেরে তাড়াশ পৌর এলাকার বারোয়ারি বটতলা মহল্লার বাসিন্দা বিকাশ সরকার (৪৫), তার স্ত্রী স্বর্ণা রানী সরকার (৪০) ও মেয়ে তাড়াশ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী পারমিতা সরকার তুষিকে (১৫) গলাকেটে হত্যা করেন রাজীব (৩৪)। রাজীব বিকাশ সরকারের আপন ভাগনে ও উপজেলার নওগাঁ ইউনিয়নের তেলিপাড়া গ্রামের মৃত বিশ্বনাথের ছেলে।    

মামলার বাদী সুকোমল সাহা জানান, আগামী জানুয়ারি মাসে মামলাটি ট্রায়ালে ওঠার কথা রয়েছে। এরই মধ্যে গত ৯ ডিসেম্বর হাইকোর্ট থেকে জামিনে মুক্ত হয়েছে আসামি রাজীব কুমার ভৌমিক। প্রথমে আত্মগোপনে থাকলেও এখন প্রকাশ্যে এলাকাতেই ঘোরাফেরা করছেন। আমার আত্মীয়-স্বজনেরা তাকে প্রকাশের ঘোরাফেরা করতে দেখে আমাকে জানিয়েছেন। আমরা আশংকা করছি যে কোনো সময় আসামি ভারতে পালিয়ে যেতে পারে। আর পালিয়ে গেলে আমার বোন, ভগ্নিপতি আর ভাগ্নি হত্যার ন্যায়বিচার পাবো না।  

তাড়াশ থানার ওসি মো. আসলাম আলী বলেন, আদালত জামিন দিলে আমাদের কিছু করার নাই। আসামি প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও আমরা গ্রেপ্তার করতে পারবো না। এই মুহূর্তে পালিয়ে গেলেও আমাদের কিছু করার থাকে না।  

গত ২০ জানুয়ারি তাড়াশ পৌর শহরের বারোয়ারী বটতলা মহল্লার একটি ভবন থেকে ওই তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে পরিদর্শক জুলহাজ আলীর নেতৃত্বে সিরাজগঞ্জ গোয়েন্দা পুলিশের একটি টিম তদন্ত শুরু করে। তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে মাত্র ১২ ঘণ্টার মধ্যেই হত্যার রহস্য উদঘাটন ও একমাত্র আসামি রাজীব কুমার ভৌমিককে গ্রেপ্তার করে ডিবি।  

জিজ্ঞাসাবাদে রাজীব হত্যার দায় স্বীকার করে বলেন, টাকা-পয়সা লেনদেনের জেরে বিকাশ সরকারকে সপরিবারে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রীর বড়ভাই সুকোমল চন্দ্র সাহা বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন। গ্রেপ্তার আসামি রাজীব ভৌমিক আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেন। মামলার তদন্ত শেষে রাজীব ভৌমিককে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা।  

ঘটনার ৯ মাস যেতে না যেতেই উচ্চ আদালত থেকে জামিনে মুক্ত হন রাজীব। মুক্ত হয়ে প্রথমদিকে আত্মগোপনে থাকলেও পরবর্তীতে প্রকাশ্যে আসেন। তখনই এলাকাবাসীর মাঝে শুরু হয় প্রতিক্রিয়া। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও সমালোচনার ঝড় ওঠে।

এক ফেসবুক পোস্টে মিঠুন সরকার নামের এক ব্যক্তি লিখেছেন, ট্রিপল মার্ডারের আসামি রাজীবকে জামিনে মুক্তি দেওয়া মানে বিকাশ ও তার পরিবারের প্রতি অবিচার করা এবং তাড়াশবাসীর প্রতি রসিকতা করা।

আরিফুল ইসলাম চিশতী নামে এক ব্যক্তি লিখেছেন লিখেছেন, এ দেশে মুরগি চুরি করলে জামিন হয় না, অথচ মানুষ মারলে জামিন হয়, দুঃখজনক।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৯, ২০২৪
এমএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।