ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ পৌষ ১৪৩১, ০২ জানুয়ারি ২০২৫, ০১ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

শাক-সবজি ও ফলে কীটনাশক বেশি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩০, ২০২৪
শাক-সবজি ও ফলে কীটনাশক বেশি

ঢাকা: দেশে উৎপাদিত খাদ্যদ্রব্যগুলোর মধ্যে শাক-সবজি ও ফলে সবচেয়ে বেশি কীটনাশক ব্যবহৃত হয় বলে জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) খাদ্য ও পুষ্টি বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. রুহুল আমিন।

সোমবার (৩০) রাজধানীর শাহবাগে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের (বিএফএসএ) কার্যালয়ে কর্তৃপক্ষের সার্বিক কার্যক্রম নিয়ে আয়োজিত মিট দ্য প্রেস শীর্ষক সেমিনারে কি-নোট স্পিকারের বক্তব্য তিনি এ তথ্য জানান।

অধ্যাপক রুহুল আমিন বলেন, দেশে উৎপাদিত কোন খাদ্য কতটুকু নিরাপদ, তা জানা যায় না। তবে আমাদের প্রত্যাশা সব ধরনের খাবারই নিরাপদ থাকতে হবে। আমাদের কৃষকরা কীটনাশক ব্যবহারের নিয়ম-কানুন অনুসরণ করেন না। ফলে দেখা যায়, খাদ্যপণ্যের মধ্যে শাক-সবজি ও ফলে কীটনাশকের উপস্থিতি বেশি পাওয়া যাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, জাতিসংঘের এসডিজি গোল ২-এ খাদ্য নিরাপত্তা ও নিরাপদ খাবারের ব্যাপারে বলা হয়েছে। গ্রামের মানুষ ২৩.৮ ও শহরে ৩৮ শতাংশ ফল খেয়ে থাকে। এটি বিভাগীয়ভাবে গ্রহণের ক্ষেত্রে বরিশালে ৪০.২, চট্টগ্রামে ১৭.৩, ঢাকায় ২৬.৫, খুলনায় ২৬.২, ময়মনসিংহে ৩৫.৮, রাজশাহী ৪৮.৯, রংপুরে ৬০.১ ও সিলেটে ৪৫.৭ শতাংশ।

এদিকে গরুর মাংস ও পোলট্রি মাংস গ্রহণের ক্ষেত্রে গ্রামের মানুষ ১৫.৭, শহুরে ৩৩.১ শতাংশ, ডিম গ্রহণে গ্রামের মানুষ ১০.১, শহুরে ১৮.৯ শতাংশ। এ ছাড়া দেশে ডিম, দুধ ও মাংসের উৎপাদন বেড়েছে। সেখানে ধনীদের এটি গ্রহণের হার ৭ শতাংশ ও গরিব মানুষের খাদ্য গ্রহণের হার মাত্র ২ শতাংশ।

ফুড সেফটি ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম সম্পর্কে অধ্যাপক রুহুল আমিন বলেন, বিদেশে রপ্তানি করতে হলে নিরাপদ খাদ্য রপ্তানি করতে হবে। তা না হলে বিদেশিরা আমাদের পণ্য কিনবে না।

তিনি বলেন, তিন ভাগে খাদ্য নিরাপত্তা নির্ভর করে। এর মধ্যে রয়েছে পাবলিক ফুড সেফটিং, থার্ড পার্টি ও ন্যাশনাল পর্যায়ে।

দেশে নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনের হার কতটুকু, এমন প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক রুহুল আমিন বলেন, কোন খাদ্য কতটুকু নিরাপদ, তা জানা যায় না। তবে ফল ও শাক-সবজিতে কীটনাশকের ব্যবহার বেশি।

সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের (বিএফএসএ) চেয়ারম্যান জাকারিয়া বলেন, সবজিতে কীটনাশক সরাতে ১৫ মিনিট ভিজিয়ে রাখলে কিছুটা কমে। বেশি অনিরাপদ বা ক্ষতিকারক খাদ্য এড়িয়ে চলতে হবে। যেমন কলিজা জাতীয় খাবার। এ খাবার পরিমাণে কম খেতে হবে।

নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের কার্যক্রম সম্পর্কে তিনি বলেন, সারা দেশে ২৪৮ জনবল নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। এটি বাড়ানোর ব্যাপারে কাজ করা হচ্ছে। তা ছাড়া খাদ্যের নিরাপত্তা পরীক্ষায় বৈদেশিক অনুদানের মাধ্যমে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও খুলনায় আরও ৩টি ল্যাব প্রতিষ্ঠা করা হবে। এতে ৩১৮টি পদে লোকবল নিয়োগের জন্য সরকারের কাছে আবেদন করা হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে বক্তব্যে বিএফএসএ’র চেয়ারম্যান বলেন, খাদ্য নমুনা পরীক্ষা করা নিয়মিত কাজ। প্রতিটি জেলা অফিসকে মাসে কমপক্ষে ২টি নমুনা পাঠানোর নিয়ম রয়েছে।

নিরাপদ শাক-সবজি এলেও বাজারের পরিবেশের কারণে তা দূষণের কবলে পড়ে। বাজারগুলোর পরিবেশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ রয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটি স্থানীয় সরকার ও পৌরসভার দায়িত্ব। সেখানে আমাদের কাজ করার সুযোগ কম।

অপর প্রশ্নের জবাবে বক্তব্যে বিএফএসএ’র চেয়ারম্যান বলেন, খোলাবাজারে পণ্যের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা কঠিন। কেননা এটা তারা উৎপাদন করে না। তবে রেস্টুরেন্টে ভেজাল খাবার দেয় কি না, তা আমরা ধরে থাকি। আর ভেজাল পাওয়া গেলে কর্তৃপক্ষ কাউকে ছাড় দেয় না। তা ছাড়া রেস্টুরেন্ট বন্ধ করার ক্ষমতা আমাদের নেই, তা আদালতের ওপর নির্ভর করতে হয়।

কুষ্টিয়ায় মসলায় চক পাউডারের উপস্থিতি পাওয়া গেছে জানিয়ে তিনি বলেন, কয়েক মাস আগে একটা কোমল পানীয়ের মধ্যে ক্ষতিকর উপাদান পাওয়া গেছে। তা নিয়ে আমরা ব্যবস্থা নিলে তারা আদালতের দ্বারস্থ হয়ে অনুমোদন নিয়ে নিয়েছে। এটা আমাদের সীমাবদ্ধতা।

সেমিনারে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএফএসএ’র সদস্য মাহমুদুল কবির মুরাদ ও মো. ওয়াহিদুজ্জামান প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩০, ২০২৪
এসসি/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।