ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৪ পৌষ ১৪৩১, ০৯ জানুয়ারি ২০২৫, ০৮ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

ময়লার ভাগাড় ‘স্বাগত’ জানায় রায়পুর-ফরিদগঞ্জ সীমানায়

মো. নিজাম উদ্দিন, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৫৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৮, ২০২৫
ময়লার ভাগাড় ‘স্বাগত’ জানায় রায়পুর-ফরিদগঞ্জ সীমানায়

লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার বর্ডার বাজার। এটি পার্শ্ববর্তী জেলা চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলা ও লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার সীমান্ত এলাকা।

রায়পুর-ফরিদগঞ্জ সড়কের বর্ডার বাজারের উত্তর অংশে দুই জেলার সীমানায় একটি তোরণ আছে। ফরিদগঞ্জ থেকে রায়পুরে ঢুকতে তোরণে যে লেখা চোখে পড়বে তা হলো- ‘স্বাগত রায়পুর উপজেলা’। আবার রায়পুর থেকে ফরিদগঞ্জের দিকে যাওয়ার সময় ‘ধন্যবাদ রায়পুর উপজেলা’ লেখা চোখে পড়বে।  

কিন্তু এ ‘ধন্যবাদ ও স্বাগত’ জানানো হচ্ছে ময়লা-আবর্জনার ভাগাড় দিয়ে। স্বাগত তোরণের নিচে বর্জ্যের স্তূপ। গত পাঁচ থেকে ছয় বছর ধরে রায়পুর পৌরসভা ও হাটবাজারের ময়লা-আবর্জনা এখানে ফেলা হচ্ছে। ময়লার কারণে ভরাট হয়ে গেছে সড়কের পাশে থাকা জলাশয়।  

ময়লার স্তূপের কারণে ছাড়াচ্ছে দুর্গন্ধ। দূষিত হচ্ছে পরিবেশ। দীর্ঘদিন ধরে এমন পরিস্থিতি হয়ে এলেও বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেয় না উপজেলা প্রশাসন। ওই স্থানটিকে দূষিত করার পেছনে রায়পুর পৌরসভাকে দায়ী করছে স্থানীয় লোকজন।  

তবে পৌরসভা বলছে- বর্জ্য রাখার জন্য নির্দিষ্ট ডাম্পিং স্টেশন না থাকায় বাধ্য হয়ে ওই স্থানে ফেলতে হচ্ছে।  

রায়পুর পৌরসভা সূত্র জানায়, প্রতিদিন রায়পুর পৌর এলাকা ও বিভিন্ন হাটবাজার থেকে ৮০ থেকে ১০০ টন বর্জ্য সংগ্রহ করে পৌরসভা। আর এসব বর্জ্য ব্যবস্থাপনার নির্দিষ্ট কোনো স্থান না থাকায় সেগুলো ফেলা হচ্ছে রায়পুর-ফরিদগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের বর্ডার বাজারের উত্তরপূর্ব পাশে।  

স্থানীয় বাসিন্দা মো. সোহাগ বলেন, এ স্থানটি দুটি জেলার সীমান্ত এলাকা। একটি জেলাকে স্বাগত ও আরেকটি জেলাকে বিদায় জানানো হয় এখান থেকে। কিন্তু এ স্থানটিকে বর্জ্য দিয়ে দূষিত করে রাখা হয়েছে। এতে আমরা ফরিদগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দাদের বর্জ্য দিয়ে স্বাগত জানাচ্ছি। আবার বর্জ্য দিয়ে বিদায় দিচ্ছি। দায়িত্বশীল লোকজনের কাছ থেকে এমনটি আশা করে না এলাকাবাসী।  

আরেক বাসিন্দা আলামিন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এখানে ময়লার স্তূপের কারণে নিচু জলাশয় ভরাট হয়ে গেছে। পাশেই একটি খাল রয়েছে। এখানকার ময়লা-আর্বজনা বিশেষ করে প্লাস্টিক বর্জ্য খাল হয়ে বিভিন্ন দিকে ছড়িয়ে পড়ছে। এতে এখানকার পরিবেশ দূষিত হওয়ার পাশাপাশি দূরদূরান্তের পরিবেশও দূষিত হচ্ছে।  

রিপন নামে আরেক ব্যক্তি বলেন, বর্জ্যের দুর্গন্ধে এ স্থান দিয়ে হাঁটা যায় না। শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। যানবাহনে যারা চলাফেরা করেন তারাও দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েন।  

রুমি নামে এক নারী বলেন, প্রতিনিয়ত আমার বাচ্চাদের নিয়ে গাড়িতে করে এ স্থান দিয়ে ফরিদগঞ্জে আসা-যাওয়া করি। এখান দিয়ে যেতে চরম দুর্গন্ধ অনুভব হয়। নাক চেপে ধরে রাখতে হয়।

রায়পুর পৌরসভার কঞ্জারভেন্সী পরিদর্শক রোমান পাঠান বাংলানিউজকে বলেন, পৌরসভার কোনো ডাম্পিং স্টেশন নেই। ডাম্পিং স্টেশনের জন্য পৌরসভার মালিকানাধীন জমি প্রয়োজন, সেটি নেই। আর বর্জ্য ফেলার জন্যও পৌরসভার নির্দিষ্ট স্থান নেই। তাই উপজেলার বর্ডার বাজার এলাকায় সড়কের পাশে বর্জ্য ফেলতে হচ্ছে।  

তিনি আরও বলেন, পাঁচ থেকে ছয় বছর ধরে সেখানে বর্জ্য ফেলা হচ্ছে। সাবেক পৌর মেয়র ইসমাঈল খোকন ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মামুনুর রশিদ সেখানে বর্জ্য ফেলার জন্য জায়গাটি নির্ধারণ করে দিয়েছেন।  

বাংলাদেশ সময়: ০৮৫৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৮, ২০২৫
আরবি
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।