ঝালকাঠি: পাঁচ বয়সী এক নবজাতককে দপদপিয়া সেতুর ওপর থেকে কীর্তনখোলা নদীতে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক শিক্ষিকা মায়ের বিরুদ্ধে।
বুধবার (১৫ জানুয়ারি) দুপুরে এ ঘটনার পর থেকে এখনো নবজাতকটিকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
এদিকে শারীরিক অসুস্থতা ও বিষণ্নতার কারণ দেখিয়ে মা ঐশী আক্তারকে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে ভর্তি করেছেন তার স্বজনরা। যদিও ভর্তি রেজিস্ট্রারে কৌশলে তার নাম রাবেয়া লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। বর্তমানে সেখানেই আছেন তিনি। খবর পেয়ে কোতোয়ালি থানা পুলিশের একটি টিম বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে হাসপাতালে ওই নারী ও তার স্বজনদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন।
নবজাতকের মা ঐশী আক্তারের বাড়ি ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার মগড় ইউনিয়নের আমিরাবাদ গ্রামে। তিনি একই উপজেলার হয়বৎপুর তৌকাঠি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। ঐশী আক্তারের স্বামীর নাম সোহেল আহমেদ। তিনি পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া ফায়ার স্টেশনের স্টেশন অফিসার হিসেবে কর্মরত আছেন।
নবজাতকের বাবা সোহেল আহমেদ জানান, গত ১০ জানুয়ারি ভোরে শেবাচিম হাসপাতালে আমার স্ত্রী একটি মেয়ে সন্তানের জন্ম দেন। এর দুই দিন পর স্ত্রী-সন্তানকে নগরীর বাংলাবাজার এলাকায় স্ত্রীর বড় বোনের বাসায় রেখে যাই। সেখান থেকে বুধবার দুপুরে সন্তানকে নিয়ে বের হন আমার স্ত্রী। পরে তিনি অটোরিকশায় করে দপদপিয়া সেতুতে গিয়ে সন্তানকে কীর্তনখোলা নদীতে ফেলে দেন। এ ঘটনার পর থেকে সন্তানের হদিস মিলছে না। এ ঘটনায় আমার স্ত্রী ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেব।
নবজাতকের মামা মো. মাসুদ জানান, তার বোন শারীরিকভাবে অসুস্থ ও বিষণ্নতায় ভুগছেন। এ জন্য তাকে বুধবার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে নবজাতকটি কোথায় আছে এ প্রশ্নের জবাবে তার বোন কিছুই বলতে পারছে না। হাসপাতালে দ্বিতীয়বার ভর্তির ক্ষেত্রে ভিন্ন নাম ব্যবহারের কারণ জানতে চাইলে তিনি জানান, তার বোনের নাম রাবেয়া আক্তার ঐশী। তাই রাবেয়া লেখা হয়েছে।
শেবাচিম হাসপাতালে কর্মরত নার্সরা জানান, গত শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) এই হাসপাতালেই শিশুটি ভূমিষ্ঠ হয়। সোমবার স্বজনরা শিশুসহ তার মাকে বাসায় নিয়ে যান। বুধবার বিকেলে ওই শিশুর মাকে ফের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। কিন্তু শিশুটি তার সঙ্গে দেখা যায়নি। পরে লোকমুখে জানতে পেরেছি, শিশুটিকে নদীতে ফেলে দিয়েছেন তার মা। খবর পেয়ে পুলিশও হাসপাতালে খোঁজখবর নিয়েছে।
নলছিটি থানার ওসি আব্দুস সালাম বলেন, আমাদের কাছে এখনো কোনো অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বরিশাল মেট্রোপলিটন কোতোয়ালি থানার ওসি মিজানুর রহমান জানান, বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধান অব্যাহত রয়েছে। ওই নবজাতকের মা অসুস্থ থাকায় তার কাছ থেকে পরিষ্কারভাবে কিছুই জানা যাচ্ছে না।
বাংলাদেশ সময়: ১১৪০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৮, ২০২৫
আরএ