ঢাকা, সোমবার, ১৩ মাঘ ১৪৩১, ২৭ জানুয়ারি ২০২৫, ২৬ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

বিজয় সরণিতে রশি দিয়ে যানজট নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা, বিড়ম্বনায় চালকরা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৬, ২০২৫
বিজয় সরণিতে রশি দিয়ে যানজট নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা, বিড়ম্বনায় চালকরা

ঢাকা: রাজধানীর অন্যতম ব্যস্ততম মোড় বিজয় সরণিতে যানজট নিরসনে নতুন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ।  

নতুন নিয়ম অনুযায়ী, জাহাঙ্গীর গেট থেকে বিজয় সরণিতে আসা যানবাহনকে ডানে মোড় নিতে দেওয়া হচ্ছে না।

প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে রাস্তার মাঝে টানিয়ে দেওয়া হচ্ছে রশি। এতে সহজে গন্তব্যে যেতে না পেরে বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে নিয়ম না জানা যানবাহন চালকদের।

রোববার (২৬ জানুয়ারি) দুপুরে সরেজমিনে বিজয় সরণি মোড়ে গিয়ে দেখা যায়, বিজয় সরণি মোড় হয়ে চলাচল করা অন্য সব সড়কের যানবাহন স্বাভাবিকভাবেই চলাচল করছে। তবে জাহাঙ্গীর গেট থেকে বিজয় সরণি আসা যানবাহনের সিগনাল ছাড়ার পরপরই রাস্তার মাঝে টানিয়ে দেওয়া হচ্ছে রশি। যাতে কোনো যানবাহন ডানে যেতে না পারে।

শনিবার (২৫ জানুয়ারি) থেকে শুরু হওয়া নতুন এই নিয়ম যারা জানেন, তারা প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের সামনের ক্রসিং দিয়ে আগারগাঁও লিংক রোডে চলে যাচ্ছেন। তবে মোহাম্মদপুর, ধানমন্ডি, খেজুর বাগান, মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ অভিমুখী যানবাহনের যেসব চালক এই নিয়ম জানেন না তাদের পড়তে হচ্ছে বিড়ম্বনায়। সিগনালে আটকে থেকে যখনই তারা ডানে মোড় নিতে যাচ্ছেন, তখনই পড়ছেন প্রতিবন্ধকতার মুখে। গাড়ির গতি ধীর করে অনেকেই ডানে যাওয়ার জন্য ট্রাফিক পুলিশের কাছে আকুতি-মিনতি করছেন। কেউ কেউ আবার কেন যেতে দেওয়া হচ্ছে না সেই কৈফিয়ত চাচ্ছেন দায়িত্ব পালনকারীদের কাছে। এ নিয়ে বাগবিতণ্ডয়ও জড়াচ্ছেন কেউ কেউ।

যানবাহন চালকরা বলছেন, বিজয় সরণিতে ডানে যেতে না দেওয়ার নতুন এই উদ্যোগটি হটকারী সিদ্ধান্ত হয়েছে। কোনো ধরনের সিগনাল, সাইন না দিয়ে হঠাৎ রাস্তা বন্ধ করে দিলে তাদের গন্তব্যে যেতে দীর্ঘ পথ ঘুরতে হচ্ছে। এতে সময় ও জ্বালানি বেশি নষ্ট হচ্ছে। তবে ট্রাফিক পুলিশ বলছে, নতুন কোনো অভ্যাসে অভ্যস্ত হতে কিছুটা সময়ের প্রয়োজন। নতুন এই উদ্যোগের সুফল দ্রুতই নগরবাসী পাবে। শুরুতে কিছুটা সমস্যার তৈরি হলেও দ্রুতই সেটি ঠিক হয়ে যাবে।

বনানী থেকে ধানমন্ডি যাত্রী নিয়ে যাচ্ছিলেন ফয়সাল নামের এক রাইড শেয়ারকারী। তিনি প্রায় ১০ মিনিট বিজয় সরণি সিগনালে দাঁড়িয়ে ছিলেন। সিগনাল যখনই ছেড়েছে, তখনই রাস্তার মাঝে রশি টানিয়ে দেওয়া হয়। এতে তিনি আর ডানে যেতে পারেননি। কেন যেতে দেওয়া হচ্ছে না সেই প্রশ্নও তিনি ট্রাফিক পুলিশকে করেছেন। ট্রাফিক পুলিশও যেতে না দেওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করেছে।

ফয়সাল বাংলানিউজকে বলেন, আমি আগে থেকে এ সম্পর্কে জানতাম না। প্রায় ১০ মিনিট ধরে এই সিগনালে দাঁড়িয়ে আছি। এখন আমাকে যেতে হলে আবার কারওয়ান বাজার ঘুরে আসতে হবে। এটা আমাদের জন্য ভোগান্তির।

হায়দার নামের আরেক সিএনজিচালক বলেন, এটা একটা বিবেকহীন ও হটকারী সিদ্ধান্ত হয়েছে। এতে যানজট তো কমবেই না বরং আরো বাড়বে। আর আমাদের কষ্ট হবে।

এদিকে, সাধারণ যানবাহনকে ডানে মোড় নিতে দেওয়া না হলেও, বিভিন্ন বাহিনীর গাড়িকে ডানে যেতে দেওয়া হচ্ছে। এজন্য ট্রাফিক পুলিশ নিজেই রশি উঁচু করে ধরছেন।

এই বিষয়ে সেখানে দায়িত্বপালনকারী এক সার্জেন্টের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাহিনীর গাড়িকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাই তারা বাহিনীর গাড়ি যেতে দিচ্ছেন। তবে অন্য কোনো গাড়ি তারা আর যেতে দিচ্ছেন না।

এই বিষয়ে তেজগাঁও ট্রাফিক বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, উদ্যোগটি নতুন হওয়ার কারণে অনেকে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে ডানে না গিয়ে সোজা চলে আসছেন। সেজন্য একটু ভোগান্তি হচ্ছে। যখন নতুন এই নিয়মের সঙ্গে সবাই অভ্যস্ত হয়ে যাবে, তখন আর ভোগান্তি হবে না। বরং দ্রুত সময়ের মধ্যে যানবাহনগুলো বিজয় সরণি মোড় পার হতে পারবে আর এর সুফল নগরবাসী পাবে।

বাহিনীর গাড়ি যেতে দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, জাহাঙ্গীর গেট ও বিজয় সরণির মাঝে বিমান বাহিনীর কিছু কোয়ার্টার আছে। তারা আমাদের অনুরোধ করেছেন, তাদের গাড়িগুলো বিশেষ ব্যবস্থায় যেতে দেওয়ার। তারা যেহেতু রাষ্ট্রের দায়িত্বশীল কাজে নিয়োজিত তাই তাদের আমরা বিজয় সরণি থেকে ইউটার্ন নেওয়ার ব্যবস্থা করে দিচ্ছি।

বাংলাদেশ সময়: ১৯২৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৬, ২০২৫
এসসি/এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।