নীলফামারী: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় সাভারে পুলিশের গুলিতে নিহত শহীদ সাজ্জাদ হোসেনের মরদেহ আদালতের নির্দেশে উত্তোলনের উদ্যোগ নেওয়া হলেও এতে বাধা দিয়েছে তার পরিবার।
মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে নীলফামারীর সৈয়দপুরে স্থানীয় প্রশাসন ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তারা কবরস্থানে উপস্থিত হলে মরদেহ উত্তোলনে আপত্তি জানান নিহত ব্যক্তির বাবা আলমগীর হোসেন ও পরিবারের সদস্যরা।
সৈয়দপুর উপজেলার হাতিখানা কবরস্থানে যান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নুর-ই আলম সিদ্দিকী।
এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন সাভার মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাহবুব উল্লাহ সরকার, নিহত সাজ্জাদের বাবা, স্থানীয় ছাত্র প্রতিনিধি ও পুলিশের একটি দল।
নিহত ব্যক্তির বাবা আলমগীর হোসেন কবর থেকে ছেলের মরদেহ উত্তোলনে অনীহা প্রকাশ করেন এবং আনুষ্ঠানিকভাবে আবেদন জমা দেন।
তিনি বলেন, ‘সাজ্জাদ শহীদি মর্যাদা পেয়েছেন, তাই আমরা মরদেহ উত্তোলন করতে চাই না। ’
পরিবারের অনুরোধের ভিত্তিতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের নির্দেশ স্থগিত করেন এবং মরদেহ উত্তোলন ছাড়া ফিরে আসেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মাহবুব উল্লাহ সরকার বলেন, ‘আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী আমরা মরদেহ উত্তোলনের জন্য গিয়েছিলাম। তবে নিহতের বাবা ও পরিবারের সদস্যদের আপত্তির কারণে মরদেহ উত্তোলন সম্ভব হয়নি। বিষয়টি আদালতকে জানানো হবে। ’
সাজ্জাদ হোসেন নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার লক্ষণপুরের বাসিন্দা। তিনি নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যাপারেল ম্যানুফ্যাকচারিং টেকনোলজি (এএমটি) ডিপার্টমেন্টের শিক্ষার্থী ছিলেন। পাশাপাশি গাজীপুরের মাওনায় একটি কোম্পানিতে খণ্ডকালীন চাকরি করতেন।
গত বছরের ০৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় সাভারে পুলিশের গুলিতে আহত হন সাজ্জাদ। পরে তাকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৬ আগস্ট সকালে তার মৃত্যু হয়। সাভারে প্রথম জানাজা শেষে মরদেহ নেওয়া হয় গ্রামের বাড়ি সৈয়দপুরে, যেখানে দ্বিতীয় জানাজার পর হাতিখানা কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
এ ঘটনায় তার পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করা হয়, যার তদন্তের অংশ হিসেবে আদালত মরদেহ উত্তোলনের নির্দেশ দিয়েছিলেন। তবে পরিবারের আপত্তির কারণে এই প্রক্রিয়া আপাতত স্থগিত করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৫, ২০২৫
এসআরএস