ঢাকা, সোমবার, ২৭ মাঘ ১৪৩১, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

বরিশালের বিপিএল উৎসবে ভাঙচুর, হুড়োহুড়ি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৫৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৯, ২০২৫
বরিশালের বিপিএল উৎসবে ভাঙচুর, হুড়োহুড়ি

বরিশাল: বরিশালে বিপিএলের শিরোপা উদযাপন অনুষ্ঠানে ভাঙচুর-হুড়োহুড়ির ঘটনা ঘটেছে। রোববার (০৯ ফেব্রুয়ারি) নগরের বেলস পার্কে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

এদিন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতিতেই মঞ্চের সামনের নিরাপত্তা বেষ্টনী ভেঙে ফেলেন বিশৃঙ্খলাকারীরা। এ সময় তাদের কারণে দর্শকদের পাশাপাশি কয়েকজন সাংবাদিক হেনস্তার শিকার হন। পাশাপাশি সাংবাদিকদের বিভিন্ন সরঞ্জাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

নির্ধারিত সময়ের আগেই ট্রফি প্রদর্শনী দেখতে ভিড় করতে থাকেন বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা ক্রিকেটপ্রেমীরা। বিকেল ৪টার দিকে বিশৃঙ্খলাকারীরা নিরাপত্তা বেষ্টনী ভেঙে মঞ্চের কাছাকাছি চলে যান।  

মুশফিকুর রহিম, তামিম ইকবাল, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদসহ খেলোয়াড়েরা মঞ্চে উঠলে তারা আরও কাছে যেতে চান। এতে হুড়োহুড়ির দৃশ্য দেখা যায়।

এ সময় বিশৃঙ্খলাকারীদের কারণে সাংবাদিকদের ট্রাইপডসহ বিভিন্ন সরঞ্জামের ক্ষয়ক্ষতি হয়। কয়েকজন সাংবাদিকসহ অনেকে আহত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দ্রুত মঞ্চ ছাড়েন সবাই।

মাই টিভির বরিশাল প্রতি‌নি‌ধি পারভেজ রাসেল জানান, তার বুম ছিনতাই হয়েছে এবং ট্রাইপড ভেঙে গেছে। তিনি বলেন, এক শিশুকে বাঁচাতে গিয়ে ‍আমি মারধরের শিকার হই। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ‍এখন বাসায় ‍আছি। নিরাপত্তা ছাড়া ‍এমন অনুষ্ঠান ‍এর ‍আগে বরিশালে দেখিনি।

এখন টেলিভিশনের ফটো সাংবাদিক ‍আমিনুল ‍ইসলাম বলেন, ‍আমার ট্রাইপড ভেঙে গেছে। আমি ও রিপোর্টার অমিত হাসান কোনোমতে নিজেদের রক্ষা করতে পেরেছি। জানি না হয়তো ‍আরেকটু হলে মৃত্যু নিশ্চিত ছিল।

এখন টেলিভিশনের রিপোর্টার অমিত হাসান বলেন, ‍আমি হাতে-পায়ে গুরুতর ‍আঘাত পেয়েছি। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ‍এখন বাসায় বিশ্রাম নিচ্ছি। ‍এত বড় অনুষ্ঠানে ‍এমন ‍আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি দুঃখজনক।

দেশ টিভির ফটো সাংবাদিক শাহীন সুমন বলেন, কোনোমতে জীবন নিয়ে ফিরেছি। ‍আর ‍একট‍ু হলেই হাত ভেঙে যেত। নিরাপত্তার বিষয়টি লক্ষ রাখা জরুরি ছিল।

যমুনা টেলিভিশনের বরিশাল ব্যুরো প্রধান কাওছার হোসেন বলেন, ট্রাইপড ও ক্যামেরা বাঁচাতে গিয়ে ‍আমি পড়ে যাই। ‍‍একটুর জন্য গুরুতর ‍আহত হইনি। নিরাপত্তার বিষয়টি জোরদার করা ‍উচিত ছিল।

চ্যানেল ২৪ ‍এর ব্যুরো প্রধান কাওছার হোসেন রানা বলেন, ‍আমার ট্রাইপড ভেঙেছে। ক্যামের‍া সেভ করতে গিয়ে ‍আহত হয়েছি। ‍এত বড় অনুষ্ঠানে  নিরাপত্তার বিষয়টি জোরদার করা ‍উচিত ছিল।

তবে বিশৃঙ্খলার মধ্যেও বরিশালের বিপিএল ট্রফি ও খেলোয়াড়দের দেখতে পেরে খুশি ক্রিকেটপ্রেমীরা। তাদের দাবি, আগামীতে যেন বিপিএলের ম্যাচ বরিশালে অনুষ্ঠিত হয়।

সাব্বির নামে ‍এক দর্শক বলেন, বড় অনুষ্ঠানে কিছুটা বিশৃঙ্খলা হয়েছে। নারী দর্শকদের হেনস্তা করা হয়েছে। ‍আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ‍আরও কঠোর হওয়া ‍উচিত ছিল।

নাবিলা নামে এক নারী দর্শক জানান, যা হয়েছে তা দুঃখজনক। তবে আগামীতে বিপিএল খেলা যেন বরিশালের স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়, সেই দাবি থাকবে।

ফরচুর বরিশালের স্বত্বাধিকারী মিজানুর রহমান জানান, জাতীয় দল, বিদেশি খেলোয়াড়সহ ২২ জন এবং টিম ম্যানেজার, কোচসহ আরও ৪০ জনের একটি দল বরিশালে এসেছে।

তবে বিশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা ঘাটতির বিষয়ে জানতে চাইলে কল কেটে দেন তিনি। পরে ‍আবারও কল দিলে আর ধরেননি।

কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, প্রত‌্যাশার চেয়ে দর্শক বে‌শি হয়েছে এবং দর্শকদের উৎসাহে আমাদের আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে বেগ পেতে হয়েছে। পু‌লিশের পক্ষ থেকে আইনশৃঙ্খলা স্বাভা‌বিক রাখতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হয়েছে, তারপরও কিছু ঘটনা ঘটতে পারে।

বাংলাদেশ সময়: ২৩৫৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৯, ২০২৫
এমএস/আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।