ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৭ মাঘ ১৪৩১, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১১ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

ভারতীয় আগ্রাসনের প্রতিবাদে লং মার্চ, গরু জবাই করে জেয়াফত

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩০৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২৫
ভারতীয় আগ্রাসনের প্রতিবাদে লং মার্চ, গরু জবাই করে জেয়াফত

চাঁপাইনবাবগঞ্জ: ফেলানীসহ সীমান্তে ভারতীয় বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে নিহত সকল শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা ও ফারাক্কার ন্যায্য পানির হিস্যার দাবিতে ঢাকা-রাজশাহী চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্ত অভিমুখে লং মার্চ ও সামাজিক জেয়াফত অনুষ্ঠিত হয়েছে।

রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ সরকারি মডেল হাই স্কুল মাঠে জেয়াফত উপলক্ষে গরু জবাই করে ভোজের আয়োজন করা হয় এবং এক সংক্ষিপ্ত প্রতিবাদ সভার আয়োজন করা হয়।

 

‘বাংলাদেশের জনগণ’ সংগঠনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত সভায় ভারতের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে এবং ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগ ও তাদের দোসরদের প্রতিহত করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানানো হয়। সেই সঙ্গে চাঁপাইনবাবগঞ্জসহ বিভিন্ন সীমান্তে ভারতের আগ্রাসী ভূমিকা পালন এবং বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ভারতের হস্তক্ষেপের চেষ্টার প্রতিবাদে সভায় বক্তব্য দেওয়া হয়।  

এ সময় বিভিন্ন ব্যানার ও ফেস্টুনে ভারত ও ফ্যাসিস্টবিরোধী লেখা প্রদর্শন করা হয়। সামাজিক জেয়াফত  ও লং মার্চে অংশগ্রহণকারীরা বিভিন্ন স্লোগান দেন।  

শেষে মডেল হাই স্কুল মাঠ থেকে কিরণগঞ্জ বর্ডার অভিমুখে একটি লং মার্চ শুরু হলে পৌর এলাকার পাইলিং মোড়ে বিজিবি ও পুলিশ তাদের আটকে দেয়। সেখানেই দুটি গরু জবাই করে ভারত ও ফ্যাসিবাদবিরোধী স্লোগান দেন তারা। লাল গরু জবাইয়ের মধ্য দিয়ে ভারতের আগ্রাসনের প্রতিবাদ জানানো হয় এবং বিভিন্ন স্লোগানে ওই এলাকা থেকে পুনরায় মডেল স্কুল মাঠে ফিরে এসে লং মার্চের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।

লং মার্চে অংশগ্রহণকারীরা ফেলানীসহ সকল সীমান্ত হত্যার প্রতিবাদে ও তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে এবং ভারতীয় আগ্রাসনের প্রতিবাদে গরু জবাই করেন। ভারত এদেশে আর দাদাগিরি করতে পারবে না বলেও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।

বাংলাদেশের জনগণ সংগঠনের প্রতিনিধি ওয়ারেছুল ইসলাম নাসির বলেন, ফারাক্কার ন্যায্য পানির হিস্যা এবং ভারতীয় আগ্রাসন প্রতিরোধে সীমান্তের নাগরিকদের সচেতন, সজাগ ও উদ্বুদ্ধ করতেই এই লংমার্চের আয়োজন করা হয়েছে। সীমান্তের সকল নাগরিকদের সচেতন করা হচ্ছে। আমরা পুরো দেশের নাগরিকরা সীমান্তবাসীর সাথে রয়েছি। পাশাপাশি সীমান্তে সকল ধরনের আগ্রাসন ও হত্যা বন্ধের হুঁশিয়ারি দেন তারা।

বাংলাদেশের জনগণের মুখপাত্র আবু মোস্তাফিজ বলেন, ১৯৭১ সাল থেকে ভারত বাংলাদেশকে শোষণ করে এসেছে। সীমান্তে বড় ভাইয়ের মতো আচরণ করেছে। ফ্যাসিস্ট হাসিনা জিরো লাইনে ভারতকে বেড়া নির্মাণের অনুমতি দিয়ে দেশকে ভারতের করদরাজ্যে পরিণত করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু আর এসব মেনে নেওয়া হবে না। চাঁপাইনবাবগঞ্জের মানুষ যেভাবে বিএসএফকে বন্দুকের নলের সামনে কাস্তে হাতে তাদের প্রতিহত করেছে একইভাবে দেশের সকল মানুষকে প্রতিবাদমুখর হয়ে উঠতে হবে।

আম জনতার দলের সদস্য সচিব ও বাংলাদেশের জনগণের অন্যতম মুখপাত্র তারেক রহমান বলেন, মোদি সরকার যেভাবে ভারতে আগ্রাসন চালিয়েছে এবং ভারতে গরুর মাংসের নামে নিরীহ মুসলমান ভাইদের হত্যা করেছে, সেই আগ্রাসন ও হত্যার বদলা নিতেই ২টি লাল গরু জবাইয়ের মাধ্যমে প্রতীকী প্রতিবাদ করা হলো।

স্থানীয় কলেজশিক্ষক আবদুল্লাহ আল মামুন জানান,  দেশের জন্য যারা কাজ করছে, ভারতের অন্যায়ের প্রতিবাদে যারা সোচ্চার হয়েছে তাদের উৎসাহ দিতেই তিনি এ কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছেন।

এর আগে ঢাকা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এবং রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা থেকে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে এ জেয়াফত সভায় ও লংমার্চে যোগ দেন এবং সবাইকে সোচ্চার হয়ে নিজ নিজ অবস্থান থেকে প্রতিবাদ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের আহ্বান জানানো হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১২৫০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২১
এসএএইচ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।