ঢাকা: চার দফা দাবি আদায়ে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে পুলিশি হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন মেডিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুলের (ম্যাটস) শিক্ষার্থীরা। পাশাপাশি তারা দাবি আদায়ে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন।
সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টা থেকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সাধারণ ম্যাটস শিক্ষার্থী ঐক্য পরিষদের ব্যানারে তারা অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। এ সময় তাদের দাবি আদায়ে বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দিতে দেখা যায়।
অবস্থান কর্মসূচিতে সাধারণ ম্যাটস শিক্ষার্থী ঐক্য পরিষদের অন্যতম সমন্বয়ক আহমদ উল্লাহ মনসুর বলেন, ম্যাটস শিক্ষার্থীদের চার দফা দাবি পূরণে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আশ্বাস দিলেও কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। এজন্য আমরা রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছিলাম। কিন্তু তাতে হামলা চালায় পুলিশ। এতে আমাদের অনেক শিক্ষার্থী আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। রোববার পুলিশের হামলার শিকার হয়েছেন অনেক সাংবাদিকও।
তিনি আরও বলেন, গত ৫ আগস্টের মতো রোববার আমার ভাই-বোনদের হামলা চালিয়েছে পুলিশ। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। পাশাপাশি এ হামলায় জড়িত পুলিশ সদস্যদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানাই।
আহমদ উল্লাহ মনসুর বলেন, আমাদের যৌক্তিক দাবি পূরণে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আশ্বাস দিয়েছে। কিন্তু মন্ত্রণালয়ে ফ্যাসিস্টদের দোসররা থাকায় আমাদের দাবি মেনে নেওয়া হচ্ছে না। আমরা অধিদপ্তরে গেলে আমাদের আন্দোলন করার উসকানি দেওয়া হয়। আমাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করা হয়। আমরা জীবন দিয়ে হলেও আমাদের প্রাণের দাবি বাস্তবায়ন করবো।
এ সময় তিনি জানান, চার দফা দাবির বিষয়ে কথা বলতে শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধিদল মন্ত্রণালয়ে গেছে। তারা ফিরে আসার পর বিকেলে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করবেন তারা।
এর আগে রোববার সকাল থেকে চার দফা দাবি আদায়ে শাহবাগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়মুখী রাস্তা অবরোধ করে রাখেন ম্যাটস শিক্ষার্থীরা। বিকেলে তাদের পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল কথা বলতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে যায়। কিন্তু সেই প্রতিনিধিদল ফিরে আসার আগেই বিকেল ৪টায় চার দফা দাবিতে লংমার্চ নিয়ে সচিবালয় অভিমুখে রওনা হন ম্যাটস শিক্ষার্থী। পরে বিকাল পৌনে ৫টায় মিছিলটি শিক্ষা ভবনের সামনে এলে পুলিশ তাতে বাধা দেয় এবং লাঠিচার্জ করে। এতে এক সাংবাদিক ও ১৮ শিক্ষার্থী আহত হন বলে জানা যায়।
তাদের চার দাবি হলো-
১. এক যুগের (১২ বছরের) বেশি সময় ধরে নানা অজুহাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের শূন্য পদে বন্ধকৃত নিয়োগ অভিযুক্ত সচল করতে হবে এবং কমিউনিটি ক্লিনিকে চিকিৎসা দেওয়ার লক্ষ্যে উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার পদ সৃষ্টি করতে হবে। (কারণ ওখানে চিকিৎসা দেওয়ার জন্য চিকিৎসা শিক্ষায় শিক্ষিতদের এখন পর্যন্ত নিয়োগ দেওয়া হয়নি। কিন্তু অ্যান্টিবায়োটিকসহ অন্যান্য ওষুধের মাধ্যমে সেবা দেওয়া হয়, যা জনগণের সঙ্গে এক ধরনের প্রতারণা)।
২. প্রতিষ্ঠানের নাম পরিবর্তন, কোর্সের নাম পরিবর্তন (১৯৮৫ সালের সিদ্ধান্ত)সহ ২০২১ এর কোর্স কারিকুলামের ত্রুটি ও অসংগতি সমাধান করে নতুন ইন্টার্ন লগবুক প্রণয়ন করতে হবে।
৩. উচ্চশিক্ষা বঞ্চিত, বিএমএন্ডডিসি স্বীকৃত ক্লিনিক্যাল বিষয়ে উচ্চশিক্ষা প্রদান করতে হবে।
৪. প্রস্তাবিত এলাইড হেলথ প্রফেশনাল বোর্ড খসড়া আইনের নাম পরিবর্তনসহ সব ধারায় সংশোধনীসহ বাস্তবায়ন করতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪২৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২৫
এসসি/আরবি