ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৩০ মাঘ ১৪৩১, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৩ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

আওয়ামী আনুগত্য ছাড়া চাকরি হয়নি নিরাপত্তা বাহিনীতে: জাতিসংঘ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২৫
আওয়ামী আনুগত্য ছাড়া চাকরি হয়নি নিরাপত্তা বাহিনীতে: জাতিসংঘ

দেড় দশকের আওয়ামী শাসনের ধারাবাহিকতায় রাষ্ট্রীয় পুলিশ বাহিনীকে শেখ হাসিনা কীভাবে একটি দলীয় বাহিনীতে পরিণত করেছিলেন, তার বিবরণ উঠে এসেছে জাতিসংঘের প্রতিবেদনে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, একক রাজনৈতিক দলের পনেরো বছরের শাসনকাল ধীরে ধীরে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর রাজনীতিকরণকে ত্বরান্বিত করেছে, যা পুরো নিরাপত্তা খাতকে প্রভাবিত করেছে।

 

আওয়ামী লীগ এবং তার সমর্থিত সরকারের প্রতি আনুগত্য বা সম্পৃক্ততার ভিত্তিতে অনেক পুলিশ কর্মকর্তা নিয়োগ ও পদোন্নতি পেয়েছেন। তাদের পেশাদারিত্ব, সততা বা যোগ্যতার বিচার করা হয়নি।

সিনিয়র কর্মকর্তাদের মতে, ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স (ডিজিএফআই), ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স (এনএসআই) এবং স্পেশাল ব্রাঞ্চ মধ্য-স্তর এবং উচ্চ পর্যায়ের পদগুলোর জন্য প্রার্থী ও তার আত্মীয়দের রাজনৈতিক পরিচয় যাচাই করা হয়েছে। অর্থাৎ আওয়ামী লীগের অনুগত না হলে এসব পদে চাকরি মেলেনি কারো।

তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বয়ং পুলিশের উচ্চ পদগুলোতে নিয়োগ অনুমোদন করতেন। আর পুলিশে চাকরিরতদের মধ্যে যারা আওয়ামী লীগের অনুগত, তাদের মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার মতো গুরুত্বপূর্ণ ইউনিটগুলোতে নিয়োগ করা হয়েছিল।

প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, পুলিশের নিয়োগে রাজনৈতিক দলীয় সম্পৃক্ততার গুরুত্ব আগের সরকারগুলোর আমলেও ছিল এবং এটি স্বাধীন পুলিশ নিয়োগ ও পদোন্নতি ব্যবস্থার অভাব থেকেই উদ্ভূত।

প্রতিবেদনে সেনাবাহিনী সম্পর্কে বলা হয়, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীরও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার ইতিহাস রয়েছে, যার মধ্যে সামরিক অভ্যুত্থান এবং অভ্যুত্থান প্রচেষ্টাও অন্তর্ভুক্ত। যদিও সেনাবাহিনী অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনীর তুলনায় কম রাজনীতিসম্পৃক্ত বলে বিবেচিত হয়। তবে সক্রিয় সেনা কর্মকর্তারা এবং অন্যদের মতে, বিশেষ করে উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের মধ্যে সেনাবাহিনীর ভেতরে দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক দলীয় প্রভাব বিদ্যমান। রাজনৈতিক আনুগত্যের ভিত্তিতে সিনিয়র কর্মকর্তাদের পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে বা ঢাকা ও সেনা সদর দপ্তরে গুরুত্বপূর্ণ পদে পদায়ন করা হয়েছে। আর যারা ‘অবিশ্বস্ত’ হিসেবে বিবেচিত হয়েছেন, তাদের পদোন্নতি থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে, প্রত্যন্ত এলাকায় বদলি করা হয়েছে বা কখনও কখনও অবৈধভাবে চাকরি ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছে।

এই ব্যবস্থার ফলে শুধু সেনাবাহিনীকেই নয়, বরং প্যারামিলিটারি বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকেও শাসক দলের রাজনীতির স্বার্থে ব্যবহার করার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে, যেগুলো সেনা কর্মকর্তাদের নেতৃত্বে পরিচালিত এবং সরাসরি প্রধানমন্ত্রী বা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর অধীনে ছিল।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২৫
এমএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।