ঢাকা, বুধবার, ২৯ মাঘ ১৪৩১, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

আয়নাঘরের দেয়ালে লেখা, ‘আই লাভ মাই ফ্যামিলি’

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২৫
আয়নাঘরের দেয়ালে লেখা, ‘আই লাভ মাই ফ্যামিলি’ আয়নাঘরের দেয়ালে লেখা, ‘আই লাভ মাই ফ্যামিলি’

ঢাকা: কুখ্যাত ‘আয়নাঘর’ নামে পরিচিত শেখ হাসিনা সরকারের টর্চার সেল হিসেবে ব্যবহৃত তিনটি গোপন বন্দিশালা পরিদর্শন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।  

বুধবার (ফেব্রুয়ারি ১২) রাজধানীর কচুক্ষেত, উত্তরা, আগারগাঁও এলাকায় বিগত সরকারের তিনটি গোপন কারাগার পরিদর্শন করেন তিনি।

তার সঙ্গে ছিলেন উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, গুম তদন্ত কমিশনের সদস্য, গণমাধ্যমের প্রতিনিধি, বিভিন্ন সময় আয়নাঘরে আটকে রাখা কয়েকজন ভুক্তভোগী।  

এসব ‘আয়নাঘরে’ তারা ইলেকট্রিক শক দেওয়ার চেয়ারসহ নির্যাতনের নির্যাতনের নানা উপকরণ দেখতে পান। এছাড়া ‘আয়নাঘর’-এর দেয়ালে লেখা নির্যাতিতদের নানা কথা ও সাংকেতিক চিহ্ন দেখতে পান।

‘আয়নাঘর’-এর একটি সেলের কালো রঙের দেয়ালে লেখা রয়েছে অনেক কথা, যার অধিকাংশই অস্পষ্ট। এ দেয়ালে ইংরেজি অক্ষরে লেখা রয়েছে, ‘আই লাভ মাই ফ্যামিলি’। এ ছাড়া ইংরেজিতে ‘১২৩০ দিন’ লেখা রয়েছে। এর নিচে বাংলায় ওপর-নিচ করে দুটি নাম লেখা রয়েছে। একটি নাম মাসুদ, আরেকটি ইব্রাহিম।

আরেক টর্চার সেলের দেয়ালে লেখা রয়েছে, ‘লা ইলাহ ইল্লাহ আন্তা সোবহানাকা ইন্নি কুন্তু মিনহাশ জোয়ালেমিন’। অপর এক সেলের দেয়ালে ওপর-নিচ করে রোমান হরফে তিনটি নম্বর লেখা রয়েছে। এগুলো হলো ‘১৬৩, ১৫০, ১১৩’।

এছাড়া বিভিন্ন সময় বন্দিদের আটকে রাখা ও নির্যাতনের প্রমাণ মুছে দিতে কক্ষের দেয়াল ভাঙা, নতুন করে রং করা, অবকাঠামোগত পরিবর্তন করার চিহ্ন দেখা যায়।

আয়নাঘরে খাঁচার মতো জায়গায় যেখানে বন্দিদের আটকে রাখা হতো সেসব জায়গা ঘুরে দেখেন প্রধান উপদেষ্টা। পরিদর্শন শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, গত সরকার আইয়ামে জাহেলিয়াত যুগ প্রতিষ্ঠা করে গেছে, যার একটা নমুনা আয়নাঘর।  

তিনি বলেন, ‘আপনারা সবাই সঙ্গে ছিলেন, কাজেই আমার আর নতুন করে কিছু বলতে হবে না। আপনারা সবই দেখেছেন। এক কথায় যদি এর বর্ণনা দিতে হয় তবে বলতে হয় এক বীভৎস দৃশ্য। মানুষের মনুষ্যত্ব বোধ বলে যেটা আছে সেটাকে বহু গভীরে নিয়ে গেছে নিশ্চিহ্ন করার জন্য। নৃশংস প্রতিটি জিনিসই। ’

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘ভুক্তভোগীদের বিনা কারণে, বিনা দোষে উঠিয়ে আনা হতো। সন্ত্রাসী, জঙ্গি বলে এখানে ঢুকিয়ে রাখা হতো। ’

তিনি বলেন, ‘এই রকম টর্চারসেল (নির্যাতনকেন্দ্র) দেশেজুড়ে আছে। ধারণা ছিল এখানে কয়েকটা আছে। এখন শুনছি বিভিন্ন ভার্সনে (সংস্করণে) দেশজুড়ে আছে। সংখ্যাও নিরূপণ করা যায়নি। ’

আরও পড়ুন>>

যে চেয়ারে বসিয়ে আয়নাঘরের বন্দিদের ইলেকট্রিক শক দেওয়া হতো

আয়নাঘরেই আটকে রাখা হয়েছিল, চিনতে পারলেন আসিফ-নাহিদ

 

শেখ হাসিনা আইয়ামে জাহেলিয়াতের নমুনা প্রতিষ্ঠা করে গেছেন: ড. ইউনূস

বাংলাদেশ সময়: ১৭১৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২৫
এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।