ঢাকা, সোমবার, ১৫ বৈশাখ ১৪৩২, ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ০০ জিলকদ ১৪৪৬

জাতীয়

৮ বছর পর নাফ নদীতে মাছ ধরার অনুমতি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০:১৩ এএম, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২৫
৮ বছর পর নাফ নদীতে মাছ ধরার অনুমতি

কক্সবাজার: দীর্ঘ প্রায় আট বছর পর কক্সবাজারের টেকনাফে নাফ নদীতে মাছ ধরার অনুমতি পেয়েছেন জেলেরা। একটি রিট পিটিশনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ায় এখন থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এ নদীতে মাছ ধরতে পারবেন তারা।

তবে এজন্য মানতে হবে পাঁচটি শর্ত।

শর্তগুলো মেনে চলা হচ্ছে কিনা এবং বাংলাদেশ-মিয়ানমারের সীমান্ত পরিস্থিতি আগামী তিন মাস পর্যন্ত পর্যালোচনা করে অনুমতি নবায়ন বা স্থগিত করা হবে বলেও আদেশে বলা হয়েছে। তারপরও এ নিয়ে টেকনাফের জেলেপল্লীতে চলছে খুশির জোয়ার।  

বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) কক্সবাজার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার মো. কামরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ তথ্য জানা যায়।
  

কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের কার্যালয় থেকে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর পাঠানো এক চিঠির সূত্রে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।  

কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের কার্যালয়ের সিভিল স্যুট শাখার সহকারী কমিশনার মো. কামরুল ইসলামের স্বাক্ষর করা চিঠিতে বলা হয়েছে, হাইকোর্টের রিট পিটিশনের রুলনিশির (ল্যাটিন নিসি থেকে ‘যদি না’- হলো একটি আদালতের আদেশ, যা কোনো নির্দিষ্ট শর্ত পূরণ হওয়া সাপেক্ষে ভবিষ্যতে কার্যকর হবে) আলোকে নাফ নদীতে জেলেদের বৈধভাবে মাছ ধরা চালু করতে কক্সবাজার জেলা প্রশাসককে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়। এ কার্যালয়ে গত ২০২৪ সালের ১৫ আগস্ট পিটিশনারের দাখিল করা আবেদন যথাযথভাবে নিষ্পত্তি করতে বলা হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে নিম্নোক্ত শর্তসাপেক্ষে নাফ নদীতে মাছ ধরার অনুমতি দেওয়া হলো।

শর্তগুলো হলো-১. সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বাংলাদেশ সীমানার মধ্যে নাফ নদীতে শাহপরীর দ্বীপ থেকে টেকনাফ জেটিঘাট পর্যন্ত মাছ ধরা যাবে।  
 
২. জেলেরা মাছ ধরতে যাওয়ার সময় বিজিবির পাঁচটি নির্ধারিত পোস্টে টোকেন/পরিচয়পত্র দেখাবেন এবং মাছ-ধরা-শেষে-ফেরত আসার পর বিজিবির পোস্টে তল্লাশি করার ব্যাপারে বিজিবি সদস্যকে সর্বাত্মক সহায়তা করবেন। কোনো জেলে চেকপোস্টে না জানিয়ে মাছ ধরতে পারবেন না।  

৩. কোনোভাবেই বাংলাদেশের সীমানা অতিক্রম করা যাবে না।  

৪. মৎস্য অধিদপ্তরের হালনাগাদ করা নিবন্ধিত জেলেদের তালিকা বিজিবি, কোস্টগার্ড ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দেওয়া যেতে পারে। যাতে কোনোভাবে নিবন্ধিত জেলে ছাড়া কেউ নাফ নদীতে মাছ ধরতে না পারেন।
৫. এ অনুমোদন সম্পূর্ণ সাময়িক। তিন মাস পর সীমান্তের পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে এ অনুমতি নবায়নের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

প্রায় আট বছর পর নাফ নদীতে মাছ আহরণের সুযোগ পেয়ে মহাখুশি জেলে সম্প্রদায়। এনিয়ে জেলেদের ঘরে ঘরে চলছে আনন্দ উৎসব।  

জেলে শফিক আহমেদ বলেন, দীর্ঘদিন পর উন্মুক্তভাবে মাছ শিকার করতে পারব বলে অনেক ভালো লাগছে। আমার মতো আরও শতশত জেলেদের ঘরে ঈদ আনন্দ উপভোগ করছেন। দীর্ঘদিন পর আমাদের মাছ ধরার সুযোগ তৈরি করে দেওয়ায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।  

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন।  

তিনি বলেন, নাফ নদীতে মাছ ধরার অনুমতি পত্রটি হাতে পেয়েছি৷ এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয়ে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

টেকনাফ উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, ২০১৭ সালের এপ্রিল মাসে নাফ নদীতে মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল। দীর্ঘ প্রায় সাত বছর নয় মাস পর জেলেরা নাফ নদীতে মাছ ধরতে পারবেন।

বাংলাদেশ সময়: ১১০৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২৫
এসআই


 

বাংলাদেশ সময়: ১০:১৩ এএম, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২৫ /

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।