গত ৫ আগস্টের পর শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের নেতাদের ভারতে অবস্থান ইস্যুতে মন্তব্য করেছেন ‘ইনস্ক্রিপ্ট ডটমি’ অনলাইন গণমাধ্যমের সম্পাদক ভারতীয় সাংবাদিক অর্ক দেব।
এ সাংবাদিকের বক্তব্য, বাংলাদেশের মাটিতে আওয়ামী লীগের জায়গা নেই।
শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সাংবাদিক অর্ক দেবের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া সেই দীর্ঘ পোস্টটি পাঠকের উদ্দেশে হুবহু তুলে ধরা হলো -
‘আগামী দিনে টালিগঞ্জ আওয়ামী লিগ, নদিয়া জেলা আওয়ামী লীগ, সিপিএম সমর্থিত আওয়ামী লীগ, বিজেপি আশ্রিত আওয়ামী লীগ, বজরং আওয়ামী লীগ, আওয়ামী লীগ আদিত্যনাথ শাখা, তৃণমূল অনুকম্পাপ্রার্থী আওয়ামী ক্লাব দেখতে হবে। এটাই আওয়ামী লীগের অস্তিত্ব রক্ষার পথ, অসীমের সঙ্গে নিজেকে মিলিয়ে নেওয়া। বাংলাদেশের মাটিতে আওয়ামী লীগের জায়গা নেই। ’
‘এটা সবচেয়ে ভালো বোঝা যায় রিকশাওয়ালা, অটোচালকের সঙ্গে কথা বললে। রিকশাওয়ালারা আপনাকে বলবে, মামা আর আর ভয় নাই। তার মানে ভয় ছিল। কীসের ভয়? মারের ভয়, উল্টোকথা বললেই মারের ভয়। সমাজের সব স্তরে মারের ভয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতা মানে মারের ভয় থেকে মুক্তি। সাময়িক হয়তো, কিন্তু ওরা আনন্দে বাঁচছে প্রথমবার, ঢাকার রাস্তায় শৌচালয় নেই। রিকশাওয়ালারা জানে আওয়ামী অফিসের নিচতলা আছে। ’
‘তারপরেও কি সংকট নেই? আছে। অনেক সংকট আছে। হেফাজতে মৃত্যু, গণপিটুনি, ম্যুরাল ভাঙা, কৃষকমূর্তি ভাঙা- অক্ষমতা, অসহায়তা, ধর্মোন্মাদের আস্ফালন স্পষ্ট। কিন্তু, ধর্মোন্মাদকে দুধকলা দিয়ে পুষেছেন শেখ হাসিনা। নতুন বাংলাদেশকে জোঁকের মুখে নুন দিতে শিখতে হবে। কিন্তু এ কথাও মাথায় রাখার, এ জ্ঞান দেওয়ার আমরা কেউ নই, বড়দারা জ্ঞান দেয়, কলোনি স্থাপনকারীরা জ্ঞান দেয়, আমরা আখলাখকে বাঁচাতে পারিনি, তাবরেজদের বাঁচাতে পারিনি। ফলে শিখতে হবে আমাদের সবাইকে। গোটা উপমহাদেশকে। যারা মাজার ভাঙা নিয়ে উদ্বিগ্ন তারা দেখে নিন না গোরভাঙার ফকিরের দিন কীভাবে কাটে, পড়ে নিন বাউল ফকির ধ্বংস আন্দোলনের ইতিবৃত্ত। কথা বলুন নদিয়ার আরমান, আক্কাশ, বাবুদের সঙ্গে। এ কথা কাউকে আড়াল করতে বলা নয়। বলা, সব শুভ শক্তিকে একত্রিত হওয়ার আবেদন জানাতে। রাষ্ট্রকে যেমন দায় নিতে হবে তেমন সব প্রান্তিককে বাঁচাতে জোট বাঁধতে হবে আমাকেই। অন্যায় শুধু বাংলাদেশে দেখলে আমি মায়োপিক, আমি ইসলামোফোব, আওয়ামী ক্ষুদকুঁড়ো ভিক্ষার্থী, চোখে আওয়ামী লেন্স। আর আওয়ামীর জায়গা? বড়িশা আওয়ামী ক্লাব। ’
‘হ্যাঁ, অবস্থাটার দায় সাধারণ আওয়ামী লীগারদের না। দায় যাদের তারা রক্তের দাগ ধুয়ে ফেলে দিল্লিতে, কলকাতার নিউটাউনের হোটেলে বিশ্রাম নিচ্ছে। অথবা মোদিকে সওগাত জানাচ্ছে ইউএস-এ। এতটুকুও অনুতাপ তাদের নাই। আছে ট্রোলের সময় আর অফুরান এনার্জি। এদিকে আবার তাদের কুলচূড়ামণি বিবেকানন্ডমুন্ডম ডোনাল্ড ট্রাম্প বলছে এইসব ডিপ স্টেট ফেট কিছু নাই। অতএব, আগামী দিন আচ্ছে দিন, তাস খেলো, ক্যারাম পেটো, বেলঘড়িয়া আওয়ামী লীগ বনাম খড়দহ আওয়ামী লীগ রাতভর ক্রিকেট টুর্নামেন্ট শুরু হবে অবিলম্বে। ’
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে গত ৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার কচুক্ষেতে ডিজিএফআই এবং উত্তরা ও আগারগাঁওয়ে র্যাবের ‘আয়নাঘর’ পরিদর্শন করেন ভারতীয় সাংবাদিক অর্ক দেব।
‘আয়নাঘর’ পরিদর্শন করে গত ১৫ বছরে শেখ হাসিনা সরকারের নিষ্ঠুরতার নমুনার ধারণা নিয়ে গেছেন এ সাংবাদিক।
আয়নাঘরে ‘হাই ভ্যালু’ বন্দিদের নির্যাতনে ব্যবহার করা ফ্যাসিস্টদের বানানো চেয়ার ও নির্যাতিত মাইকেল চাকমাসহ বন্দিদের বেশ কয়েকটি বন্দিশালার বিষয়ে সামাজিকমাধ্যমে পোস্ট দেন তিনি।
‘ইনস্ক্রিপ্ট ডটমি’র এ সম্পাদক আনন্দবাজার ও নিউজ এইটিন সংবাদমাধ্যমেও কাজ করেছেন।
বাংলাদেশ সময়: ০১৪৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০২৫
এসএএইচ