ঢাকা: ইনক্লুসিভ, কালচারালি অ্যাকটিভ বাংলাদেশ দেখতে চান সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। এটাই সরকারের রাজনৈতিক সামাজিক সাংস্কৃতিক দর্শন।
মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলনের শেষ দিনের কার্য-অধিবেশন শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।
উপদেষ্টা বলেন, গত ৫ আগস্ট থেকে আমাদের যাত্রা পথে কি কি কাজ করতে পেরেছি, কি কি সীমাবদ্ধতা ছিল সেগুলো আলোচনা করেছি। সামনের দিনগুলোয় কীভাবে অগ্রসর হবো, সেসব আলোচনা হয়েছে। আমাদের মূল উদ্দেশ্য একটাই ছিল, ইনক্লুসিভ, কালচারালি অ্যাকটিভ বাংলাদেশ দেখতে চাই। এটাই সরকারের রাজনৈতিক সামাজিক সাংস্কৃতিক দর্শন। এসব বিষয়ে আমরা আলোচনা করেছি।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে ফারুকী বলেন, সারা দেশে প্রচুর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হচ্ছে। শিল্প সাহিত্য বন্ধ হয়ে যাচ্ছে- এই প্রোপাগান্ডা ঠিক না। তার মানে এই নয়, কোথাও কোথাও কোনো ঘটনা ঘটছে না; নিশ্চয়ই ঘটেছে। আমরা টাঙ্গাইলের লালন মেলার কথা জানি। স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপে এটা আবার হচ্ছে। যেখানে ঝামেলা হচ্ছে, আমরা সঙ্গে সঙ্গে সেটা চিহ্নিত করার চেষ্টা করছি।
আরেক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ঢাকা মহানগর নাট্য উৎসবে যে ঘটনা ঘটেছে, তার পেছনের কারণ জানতে হবে। নাট্যকর্মীদের মধ্যেই একটা অংশ মহিলা সমিতিকে বলেছে, এই উৎসবের আড়ালে একদল ফ্যাসিস্টের দোসর এক হচ্ছে; যারা জুলাই-আগস্টে ছাত্র হত্যার পক্ষে বিবৃতি ও উসকানি দিয়েছে। ওই নাট্যকর্মীরা দাবি জানিয়েছেন, শিল্প স্বাধীনতার আড়ালে বিচারের আগে এরা যেন এখানে না আসে। এটার সঙ্গে সরকার কিংবা বিশেষ কোনো সম্প্রদায়ের গোষ্ঠী জড়িত নয়। নাট্যকর্মীদের একটা অংশ এদের বিচার চেয়েছে। মহিলা সমিতির বরাদ্দ দেওয়া বা বাতিল করা কোনোটির সঙ্গে সরকার জড়িত নয়।
তিনি আরও বলেন, কবি সোহেল হাসান গালিবের বিষয়ে আমরা ব্যথিত। এই বিষয়ে কথা বলার ঠিক লোক আমি না। এটা নিয়ে কথা বলার উপযুক্ত মানুষ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। আমি আমার সব কাজ ফেসবুকে ঘোষণা করে করবো না। অনেক কাজ আমি আড়ালে করি। এই ক্ষেত্রেও আমি আমার কাজটা আড়ালে থেকে করছি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকে অনেক কথা বলে। সব কথার উত্তর সরকারের দায়িত্বপূর্ণ জায়গা থেকে দিতে পারি না। পয়লা বৈশাখ বাঙালির বড় একটা উৎসব। এই উৎসব প্রতিবার যেভাবে পালিত হয়, এবারও সেভাবে পালিত হবে। গত ১৫ বছরে যে পরিমাণ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়েছে শিল্পকলার অধীনে, তার চেয়ে বেশি এখন হচ্ছে সংখ্যা ও পরিমাণে।
তিনি আরও বলেন, কোনো ন্যারেটিভ প্রতিষ্ঠার জন্য যদি বলা হয়, ফ্যাসিস্টের পলায়নের মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশ থেকে সংস্কৃতির স্বাধীনতা চলে গেছে- তাহলে আমি স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, ফ্যাসিস্ট সরকার ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় কত বাউলের চুল কেটেছে, কত বাউল মেলা বন্ধ করা হয়েছে, কত সিনেমা আটকানো হয়েছে, কত নাটকের শো বন্ধ করা হয়েছে, এরকম শত শত উদাহরণ আছে। এখন দুয়েকটা ঘটনা ঘটছে, সেটাকে কেউ কেউ বাড়িয়ে বলার চেষ্টা করছে। আমি তাদের উদ্দেশ্যে বলবো খেয়াল করে দেখুন কি পরিমাণ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯১৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২৫
আরকেআর/এমজে