যশোর: সাড়ে ছয় ঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকার পর আটক হয়েছেন ঝিনাইদহ-৩ (মহেশপুর-কোটচাঁদপুর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) মেজর জেনারেল (অব.) সালাহউদ্দিন মিয়াজী।
মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) রাতে যশোর শহর থেকে প্রায় আট কিলোমিটার দূরে চাঁচড়া ইউনিয়নের নিভৃতপল্লী রুদ্রপুরের নিজের মালিকানাধীন পার্ক শ্যামল ছায়া থেকে মিয়াজীকে কড়া পাহারায় নিয়ে যায় সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা।
যশোর কোতোয়ালি থানা পুলিশ মিয়াজীকে আটক দেখানোর পর তাকে নেওয়া হয়েছে ডিবি কার্যালয়ে। তার নামে মামলা রয়েছে। ইতোমধ্যে ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি যশোরে এসেছেন তাকে হেফাজতে নিতে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যশোরের কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী বাবুল ও ডিবির ওসি মঞ্জুরুল হক ভূঁইয়া ।
এদিকে সাবেক এমপি সালাহউদ্দিন মিয়াজীকে পার্ক থেকে বের করে ডিবির মাইক্রোবাসে উঠানোর সময় তার বিচার দাবিতে স্লোগান দেয় ছাত্র-জনতা। এর পরপরই মিয়াজীর ফাঁকা গাড়ি নিয়ে চালক বের হতে গেলে আটকে দেয় ছত্র-জনতা। তারা গাড়ি ঘিরে ব্যাপক হৈচৈ করতে থাকেন। তখন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের পাশাপাছি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারাও উত্তেজিত জনতাকে শান্ত করার চেষ্টা করেন।
একপর্যায়ে সাবেক এমপি মিয়াজীর গাড়িচালক বের হয়ে ফের পার্কের দিকে চলে যেতে চান। তখন ছাত্র আন্দোলন, নাগরিক কমিটির সদস্য ও সেনা সদস্যরা তাকে আবার গাড়িতে উঠিয়ে স্থান ত্যাগ করতে সহযোগিতা করেন। দীর্ঘ সময় এভাবে চলার পর চালক গাড়ি দ্রুত চালিয়ে স্থান ত্যাগ করেন।
যশোরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীসহ সাধারণ এলাকাবাসী সাবেক এমপি সালাহউদ্দিন মিয়াজীকে মঙ্গলবার বিকেল পাঁচটার দিক থেকে অবরুদ্ধ করে রাখেন তার পার্কে। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে যান।
সালাহউদ্দিন মিয়াজী ফ্যাসিস্ট সরকারের সর্বশেষ পাতানো নির্বাচনে ঝিনাইদহ-৩ (মহেশপুর-কোটচাঁদপুর) আসন থেকে নির্বাচিত হলেও তার বাড়ি যশোর শহরের রেলগেটে।
নাগরিক কমিটির সদস্য আমানুল্লাহ জানান, আটজন মঙ্গলবার বিকেলে শ্যামল ছায়ায় খোঁজ নিতে যান সালাহউদ্দিন মিয়াজী পার্কে অবস্থান করছেন কি না। ওই সময় আমানুল্লাহ নামে তাদের একজন সদস্যকে চাঁদাবাজ আখ্যায়িত করে মারধর করেন মিয়াজীর লোকজন। এরপর তাদের আটকে রাখা হয়।
খবর পেয়ে ছাত্র-জনতা সেখানে হাজির হয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন। তাদের সাথে যোগ দেয় এলাকাবাসীও।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক রাশেদ খান এবং নাগরিক কমিটির প্রতিনিধি নুরুজ্জামান বলেন, যশোরে বিএনপির বড় সমাবেশের সুযোগে সালাহউদ্দিন মিয়াজী ‘সেফ এক্সিটের’ চেষ্টা করছিলেন। ওই সময় ছাত্র প্রতিনিধি ও গ্রামবাসী তার গাড়ি অবরোধ করে। এরপর সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা এসে গাড়িটি তার পার্কে নিয়ে যায়।
বাংলাদেশ সময়: ০১১৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২৫
এএটি