ঢাকা, বুধবার, ১২ ফাল্গুন ১৪৩১, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৬ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

প্রতিরোধ গড়ুন, তবে আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না: ডিএমপি কমিশনার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২২৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২৫
প্রতিরোধ গড়ুন, তবে আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না: ডিএমপি কমিশনার ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মো. সাজ্জাত আলী

ঢাকা: রাজধানীতে ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধ দমনে ঢাকাবাসীকে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মো. সাজ্জাত আলী। পাশাপাশি আইন নিজের হাতে তুলে না নেওয়ারও পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর বিজয় সরণীতে জননিরাপত্তা জোরদারে চলমান বিশেষ কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে তিনি এই আহ্বান জানান।

অপরাধ দমনের সব ক্ষেত্রে ঢাকাবাসীর সহযোগিতা কামনা করে ডিএমপি কমিশনার মো. সাজ্জাত আলী বলেন, এখন একটি ঘটনা ঘটলে পাঁচ মিনিটের মধ্যে সেটি ভাইরাল হয়ে যায়। আগে একটি ঘটনা ঘটলে ১০ জন মানুষ এগিয়ে আসতো, প্রতিরোধের চেষ্টা করত। কিন্তু এখন মোবাইলে ভিডিও করায় ব্যস্ত থাকে। তাই সবাইকে অনুরোধ করি, আসেন সবাই প্রতিরোধ গড়ে তুলি এবং একটি মানুষ বিপদে পড়লে এগিয়ে যাই। সমাজকে অপরাধমুক্ত রাখার জন্য সবাইকেই কাজ করতে হবে।

এ সময় বনশ্রীতে ব্যবসায়ীকে গুলি করে ছিনতাইয়ের ঘটনায় আগামীকালের মধ্যে ভালো খবর দিতে পারবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

উত্তরায় ছিনতাইকারী সন্দেহে দুইজনকে ঝুলিয়ে পেটানোর বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি কোনোভাবেই ঢাকাবাসীকে আইন নিজের হাতে তুলে নিতে বলছি না। আমি বলছি, সবাই মিলে প্রতিরোধ করি এবং অপরাধীকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তুলে দিন। আপনারা কেউ আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না।

এর আগে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ঢাকা শহরে ছিনতাইয়ের প্রবণতা বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং দুই একটি ঘটনা ভাইরাল হওয়ায় আমরা ছিনতাইকারী এবং চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে ব্যাপক অভিযান শুরু করেছি। এই ছিনতাইকারীদের ধরা ও দমন করার জন্য ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, র‍্যাব, এপিবিএন, এটিইউসহ সব সংস্থা একযোগে যৌথভাবে অভিযান পরিচালনা করছে। এক সপ্তাহ আগে আমরা যৌথভাবে অপারেশন ডেভিল হান্ট শুরু করি। সেখানেও আমরা অনেক চিহ্নিত অপরাধীদের ধরে আদালতে সোপর্দ করেছি।

তিনি আরও বলেন, আজকে থেকে সব সংস্থা মিলে যে অভিযান পরিচালিত হচ্ছে এটার প্রধান উদ্দেশ্য ছিনতাইকারীদের দমন করা। এই ছিনতাইকারীদের অধিকাংশই ১৫-২২ বছর বয়সী। সেজন্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ বিভিন্ন জায়গায় ব্লক রেইড করছে। আজকেও মোহাম্মদপুর, আদাবর এলাকায় ব্লক রেইড করা হয়েছে এবং আগামীতেও আমরা ব্লক রেইড অব্যাহত রাখবো।

তিনি বলেন, আমরা চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের তালিকা করে সেই তালিকা মোতাবেক অভিযান পরিচালনা করছি। এক্ষেত্রে কোনোভাবেই ভুল বুঝাবুঝির সুযোগ নেই, যে আমরা যেকোনো মানুষকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে আদালতে সোপর্দ করে দিচ্ছি। আমরা শুধু চিহ্নিত ছিনতাইকারীদেরই গ্রেপ্তার করবো। তাদের ধরতে আমরা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় ঢাকা শহরে ৬৫টি চেকপোস্ট পরিচালনা করছি।

মো. সাজ্জাত আলী আরও বলেন, আজকেও র‌্যাব এবং সেনাবাহিনী যৌথভাবে অভিযান পরিচালনা করে ঢাকা উদ্যান থেকে চিহ্নিত সন্ত্রাসী বাবুকে গ্রেপ্তার করেছে। সে মোহাম্মদপুর থানায় আছে। এর আগে কবজি কাটা আনোয়ারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। চিহ্নিত যেসব সন্ত্রাসী আছে, তাদের আমরা এই অভিযানের মাধ্যমে আটক করবো।

গত কয়েকদিন পাড়া-মহল্লায় ছিনতাই ও চাঁদাবাজির ঘটনা বেড়েছে। পুলিশ সেগুলো কতটুকু নজরে রেখেছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিভিন্ন ধরনের অপরাধের মধ্যে ঢাকা শহরে সবচেয়ে সহজ কাজ হলো ছিনতাই করা। একটা চাপাতি নিয়ে দুই-তিনজন মিলে অলিগলিতে ছিনতাই করে। কিন্তু ডাকাতি বা চুরির মতো ঘটনা নেই। কারণ, মাদকাসক্তরা সহসাই ছিনতাই করতে পারে। ফলে সব অপরাধীরা ছিনতাইয়ে জড়িত হচ্ছে। পরিস্থিতি গত দুই তিন দিন একটু খারাপ। তার আগে মাস খানেক ছিনতাইয়ের ঘটনা কম ছিল।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মো. খোদা বখস চৌধুরী।

বাংলাদেশ সময়: ০২১৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২৫
এসসি/আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।