ঢাকা: রাজধানীর ধানমন্ডিতে রিকশার যাত্রীকে এক তরুণের ঘুসি মারার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। পাশাপাশি ঘুসি মারা সেই তরুণকে ধরে মারধর করে শার্ট খুলে নেওয়ার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
সূত্র দাবি করছে, রিকশাকে ধাক্কা দেওয়ার ঘটনা নিয়ে ওই যাত্রীকে ঘুসি মারেন অভিযুক্ত তরুণ। পরে লোকজন অভিযুক্তকে ধরে উত্তম-মধ্যম দেয় এবং শার্ট খুলে ফেলে। পাশাপাশি ওই তরুণের থেকে জরিমানাও আদায় করা হয়।
আরেকটি সূত্র বলছে, তরুণের গায়ের জামা খুলে ফেলার ঘটনাটি পুরোনো। পুলিশ প্রথম ঘটনাটি সম্পর্কে শুনলেও এ বিষয়ে কোনো লিখিত অভিযোগ পায়নি বলে জানিয়েছে। আর তরুণকে অর্ধনগ্ন করার ঘটনা সম্পর্কে জানে না বলে জানিয়েছে ধানমন্ডি থানা পুলিশ।
তানিন হক নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে শনিবার (৮ মার্চ) দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে প্রথম ভিডিওটি আপলোড করা হয়। 'লজ্জিত জাতি' ক্যাপশন দেওয়া সেই ভিডিওতে দেখা যায়, এক মধ্য বয়সী ব্যক্তিকে আরেকজন মধ্য বয়সী ব্যক্তি পায়ের জুতা দিয়ে মারতে যাচ্ছেন এবং একবার গলায় ধাক্কা দেন। পাশাপাশি কালো শার্ট পরিধান করা এক তরুণও ওই ব্যক্তিকে বাগবিতণ্ডার মাঝে মুখে পরপর দুইটি ঘুসি মারেন।
তানিন হকের সেই ভিডিওতে নুর শিকদার নামের এক ব্যক্তি কমেন্ট করে জানান, ঘটনাটি গত ৮ মার্চ বিকেলে ধানমন্ডি-৭ বায়তুল আমান জামে-ই-মসজিদের সামনে ঘটেছে।
তানিন হক তার ভিডিওর এক কমেন্টে দাবি করেন, একটি প্রাইভেটকার এসে রিকশাকে পেছন থেকে ধাক্কা দেয়। এতে ওই রিকশায় থাকা যাত্রী পড়ে যান এবং আঘাত পান। এরপর ওই গাড়ির চালক এসে রিকশাচালককে মারধর করছিলেন এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করছিলেন। তখন ওই রিকশার যাত্রী এর প্রতিবাদ করেন। প্রাইভেটকারের চালক ও যাত্রী গিয়ে রিকশার যাত্রীকে মারধর করেন। এতে ওই রিকশার যাত্রীর চোখের চশমা ভেঙে যায় এবং ওই ব্যক্তির চোখে সেলাই লেগেছে বলেও ওই কমেন্টে দাবি করা হয়।
তানিন আরেক কমেন্টে দাবি করেন, পরে ওই তরুণকে আশপাশের মানুষ মারধর করে এবং তার কাছ থেকে জরিমানা আদায় করে।
পরদিন রোববার (৯ মার্চ) রাত পৌনে ৮টায় তানিন হকের আইডি থেকে আরেকটি ভিডিও পোস্ট করা হয়। 'ভাইটাকে ওড়না পরানোর অনুরোধ করা হচ্ছে' ক্যাপশনের সেই ভিডিওতে দেখা যায়, রিকশার যাত্রীকে ঘুসি মারা ওই তরুণকে পেছন থেকে ধরে গায়ের শার্ট খুলছে আরেক যুবক। শার্ট খোলা যুবকটি একটি প্রাইভেটকারের সামনে বসে আছে। আর এই ঘটনাটি মোবাইলে ভিডিও ধারণ করছে সামনে দাঁড়িয়ে থাকা আরেক ব্যক্তি।
এই দুইটি ভিডিওর ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করেন বীর সাহাবী নামের একজন। সেখানে তিনি লেখেন, রিকশায় প্রাইভেটকার ধাক্কা দেওয়ার প্রতিবাদ করায় এই ছেলে আজ তার এক বাবার বয়সী ব্যক্তিকে ঘুসি দিয়েছে, এসময় আঘাতে ওই ব্যক্তির চশমা ভেঙে যায়। এরপর সেই ভিডিও ভাইরাল হলে তাকে খুঁজে বের করে উদোম করে দাঁড় করিয়ে রাখে কয়েকজন।
তবে বীর সাহাবীর সেই পোস্টে সাখাওয়াত ফাহাদ নামের আরেকজন কমেন্ট করেন, খালি গায়ের ভিডিও আজকের না যতটুকু জানলাম। আগের ভিডিও।
এই দুই বিষয়ে জানতে চাইলে ধানমন্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী আহমেদ মাসুদ বলেন, প্রথম ঘটনাটি সম্পর্কে শুনেছি। রূপা নামের একজন কল দিয়ে বলেছেন, একটি প্রাইভেটকার পেছন থেকে একটি রিকশাকে ধাক্কা দেয়। এতে ওই রিকশায় থাকা তার স্বামী পড়ে যান। এর প্রতিবাদ করায় তার স্বামীকে মারা হয়েছে। তবে তারা কোনো লিখিত অভিযোগ দেননি। তাদের অভিযোগ দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। যতদূর জানি ঘটনাটি গতকালের। আর বিস্তারিত কিছু জানি না। অভিযোগ দিলে বিস্তারিত জানা যাবে। আর দ্বিতীয় ঘটনাটি সম্পর্কে আমার জানা নেই।
বাংলাদেশ সময়: ০০৪২ ঘণ্টা, মার্চ ১০, ২০২৫
এসসি/আরএ