ঢাকা, বুধবার, ১২ চৈত্র ১৪৩১, ২৬ মার্চ ২০২৫, ২৫ রমজান ১৪৪৬

জাতীয়

লংগদুতে চারদিন ধরে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হাজারো মানুষ!

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩৮ ঘণ্টা, মার্চ ২৪, ২০২৫
লংগদুতে চারদিন ধরে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হাজারো মানুষ!

রাঙামাটির লংগদু উপজেলার গুলশাখালী ইউনিয়নের আহসানপুর এলাকার হাজারো মানুষ গত চারদিন ধরে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ওই এলাকায় বিদ্যুৎ না থাকায় মানুষের স্বাভাবিক জনজীবন চরম ভাবে ব্যাহত হচ্ছে।

 

শিক্ষার্থীদের পাঠদান থেকে শুরু করে দাপ্তরিক কাজকর্ম সব গুরুত্বপূর্ণ কাজের সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সেবা প্রত্যাশীরা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চার বছর আগে উপজেলার আহসানপুরে বিদ্যুৎ সেবা প্রত্যাশীদের জন্য ১০০ কেবি ট্রান্সফরমার বসানো হয়েছিল। তবে স্থানীয়ভাবে বিদ্যুৎ সেবাপ্রত্যাশী বেড়ে যাওয়ায় বেশ কয়েক বছর পর ট্রান্সফরমারটি নষ্ট হয়েছে। বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগ ট্রান্সফরমারটি কয়েকবার মেরামত করে আবারো নির্ধারিত জায়গায় প্রতিস্থাপন করে।

চারদিন আগে ১০০ কেবির ট্রান্সফরমারটি আবারো নষ্ট হয়ে গেলে ওই এলাকার সহস্র মানুষ বিদ্যুৎ সেবা থেকে বঞ্চিত হয়ে পড়েছে। বিদ্যুৎ না থাকায় পুরো এলাকার জনজীবন স্থবির হয়ে পড়েছে। সরকারি-বেসরকারি দাপ্তরিক কাজকর্ম থেকে শিক্ষার্থীদের পাঠদান কাজে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে।


বিদ্যুৎ সেবাপ্রত্যাশীরা বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের কাছে বিষয়টি অবহিত করলে সরকারি এ প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে নিজেদের উদ্যোগে পরিবহন খরচ ব্যয় করে পুনরায় ১০০ কেবির একটি ট্রান্সফরমার নিয়ে যেতে হবে। লাগাতে সহযোগিতা করবে বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগ।

তবে স্থানীয়দের দাবি যেহেতু স্থানীয়ভাবে বিদ্যুৎ সেবাপ্রত্যশীর সংখ্যা দিনদিন বাড়ছে। সঙ্গত কারণে ১০০ কেবির ট্রান্সফরমার তারা নিতে অপরাগতা প্রকাশ করছেন।

স্থানীয়রা বলছেন, বর্তমানে এই এলাকায় ২৫০ কেবির একটি ট্রান্সফরমার প্রয়োজন। তাহলে বিদ্যুৎ সমস্যা থেকে তারা পরিত্রাণ পাবে। স্থানীয়দের এ দাবির ভিত্তিতে ২৫০ কেবির ট্রান্সফরমার প্রতি স্থাপনের জন্য বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে উৎকোচ হিসেবে দেড় লাখ টাকা দিতে হবে বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন।

আহসানপুরের স্থানীয় বাসিন্দা শিক্ষক শাহ আহমেদ জামাল বলেন, আমাদের এলাকায় তিনশোর অধিক বিদ্যুৎ গ্রাহক রয়েছে। কিন্তু এখানে একটি ১০০ কেবির ট্রান্সফরমার লাগানো আছে। অতিরিক্ত লোডের কারণে কয়েকবার এ ট্রান্সফরমারটি নষ্ট হয়ে যায়। এইবারও ট্রান্সফরমারটি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় পুরো এলাকায় গত চারদিন ধরে বিদ্যুৎ নেই। যে কারণে পুরো এলাকার জনজীবন স্থবির হয়ে পড়েছে।

ট্রান্সফরমার আবারো পুনঃস্থাপন করলে অতিরিক্ত লোডের কারণে নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই আমরা ২৫০ কেবির একটি ট্রান্সফরমার চাচ্ছি। এইজন্য বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগ তাদের দালালদের মাধ্যমে আমাদের কাছ থেকে দেড় লাখ টাকা উৎকোচ চাচ্ছে। আমরা উৎকোচ না দেওয়ায় গত চারদিন ধরে অন্ধকারে বসবাস করছি।

বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের পক্ষ হয়ে উৎকোচ চাওয়া আরেক স্থানীয় ব্যক্তি যিনি ইন্টারনেট ব্যবসা এবং মিটার স্থাপন কাজ করেন সেই সাইফুল ইসলাম বলেন, আমার ইন্টারনেট ব্যবসা আছে। বিদ্যুৎ না থাকায় আমার ব্যবসাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তবে আমি কাউকে কোনো টাকা-পয়সার বিষয়ে বলিনি।

লংগদু উপজেলা বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের উপ-সহকারী ইঞ্জিনিয়ার এরশাদ আলী বলেন, টাকা গ্রহণের বিষয়টি সত্য নয়। তবে আমরা বলেছিলাম ১০০ কেবির একটি ট্রান্সফরমার লাগানোর জন্য। এইজন্য স্থানীয়রা নিজেদের খরচে পরিবহন করে ট্রান্সফরমারটি নিয়ে গেলে আমরা ওই এলাকায় গিয়ে স্থাপন করে দেব।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, স্থানীয়রা ২৫০ কেবির ট্রান্সফরমার চাচ্ছে। এইজন্য আমি এ বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বলেছি, তারা ব্যবস্থা নেবেন।

খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলা বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের আবাসিক প্রকৌশলী (আরই) নজরুল ইসলাম বলেন, আশা করছি কয়েকদিনের মধ্যে এ সমস্যাটার সমাধান করা হবে। এলাকার মানুষ আগের মতো বিদ্যুৎ সেবা পাবে।

বাংলাদেশ সময়: ২০৩৪ ঘণ্টা, মার্চ ২৪, ২০২৫
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।