বরিশাল: এক সেনা সদস্যকে অপহরণ করে মারধর ও মূল্যবান মালামাল ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগে তিনজনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে সেনাবাহিনী।
মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) বিকেলে তাদের রবিশাল কোতোয়ালি মডেল থানায় সোপর্দ করা হয়েছে বলে ওসি মো. মিজানুর রহমান জানিয়েছেন।
তিনি জানান, সেনা সদস্যকে অপহরণ, মারধর ও মালামাল ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগে তার চাচা বাদী হয়ে একটি অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগটি এজাহার হিসেবে রুজু করা হয়েছে। পরে আসামিদের সেই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হবে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, বরিশালের হিজলা উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব দেওয়ান মনির হোসেন, বরিশাল জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি ও বর্তমানে যুবদল কর্মী নুর হোসেন সুজন ও হিজলা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য মো. ইমরান খন্দকার। মামলার বাদী আব্দুল মতিন কাজী চাঁদপুরের উত্তর মতলব থানার মহনপুর গ্রামের বাসিন্দা কাজী আবুল হোসেনের ছেলে।
অপহরণের শিকার সেনা সদস্য হলেন তার ভাতিজা একই এলাকার বাসিন্দা মো. শওকতের ছেলে মো. জাফর। তিনি রাজশাহী সেনানিবাসে ল্যান্স কর্পোরাল। বর্তমানে ছুটিতে রয়েছেন।
মামলার আসামিরা হলেন, বরিশাল জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মাহফুজ আলম মিঠু (৩৬), নূর হোসেন সুজন (৩৫), মো. ইমরান খন্দকার (৩৫), দেওয়ান মো. মনির হোসেন (৪২), মহানগর যুবদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাসুদ রাঢ়ি (৫২), রুবেল (৫১), বেলায়েত (৩২), মো. জাহিদ (৪৫), মহানগর মহিলা দল নেত্রী ফরিদা বেগম (৪৫), স্বেচ্ছাসেবক দলের জেলার সদস্য সচিব কামরুল ইসলাম (৫০), মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মশিউর রহমান মঞ্জু (৪৮) ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক মো. নিজাম।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, বাদী মতিন কাজী ও ভাতিজা জাফরসহ তিনজন বালু মহালের ইজারা নেওয়ার জন্য সোমবার (২৪ মার্চ) দুপুর একটার দিকে বরিশাল জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে আসেন। তার দরপত্র জমা দিয়ে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে এলে বেশ কয়েকজন লোক তাদের ঘিরে ধরে। কেন টেন্ডার জমা দিয়েছে জানতে চায়। একপর্যায়ে তাদের মারধর করার শুরু করেন। তখন দুইজন প্রাণের ভয়ে দৌড়ে পালিয়ে যায়। তখন সেনা সদস্য জাফরকে অপহরণ করে আসামিরা। তখন বিষয়টি বরিশাল সেনা ক্যাম্পে অবহিত করেন। সেনা সহায়তায় বিভিন্নস্থানে খুঁজে জানতে পারে, নগরের লঞ্চঘাট এলাকার আবাসিক হোটেল রিচমার্টের ৩১০ নম্বর কক্ষে তাকে আটকে রাখা হয়েছে। আটক সেনা সদস্য নিজেকে ল্যান্স কর্পোরাল পরিচয় দিলেও আসামিরা নিজেদের সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা হিসেবে ভুয়া পরিচয় দিয়ে জাফরের হাত ও পা বেঁধে তাকে মারধর করেন। এ ছাড়া তার সাথে থাকা সেনা পরিচয়পত্র ভেঙে ফেলেছে। পরে তার কাছ থেকে এক ভরি ওজনের স্বর্ণের চেইন, একটি আইফোন, নগদ ১৫ হাজার টাকা, জাতীয় পরিচয়পত্র, ড্রাইভিং লাইসেন্স ছিনিয়ে নিয়ে গেছে।
আদালতের জিআরও এনামুল হক জানান, আসামিদের বরিশাল জ্যেষ্ঠ মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হয়। জ্যেষ্ঠ মহানগর হাকিম নুরুল আমিন তিনজনকে জেলে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২০ ঘণ্টা, মার্চ ২৫, ২০২৫
এমএস/এএটি