ঢাকা, বুধবার, ৯ আশ্বিন ১৪৩২, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০১ রবিউস সানি ১৪৪৭

জাতীয়

লক্ষ্মীপুরে ‘চোর’ সন্দেহে চাচাকে পিটিয়ে হত্যা, আটক ২

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮:০৪, এপ্রিল ১, ২০২৫
লক্ষ্মীপুরে ‘চোর’ সন্দেহে চাচাকে পিটিয়ে হত্যা, আটক ২ মো. রাজু

লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরে মোবাইল ফোন চোর সন্দেহে মো. রাজু (৩৫) নামে সিএনজিচালিত এক অটোরিকশাচালককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে তার ভাতিজার বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় দুইজনকে আটক করেছে পুলিশ।

 

সোমবার (৩১ মার্চ) দুপুরে নিহত রাজুর মরদেহের ময়নাতদন্ত করা হয়৷ এর আগে রোববার (৩০ মার্চ) চাঁদরাতে সদর উপজেলার চররুহিতা ইউনিয়নের সবুজের গোজা নামক এলাকার একটি বাড়িতে তাকে নির্যাতন করা হয়েছে। ঈদের দিন সকালে সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে মারা যায় রাজু৷ 

তিনি ওই ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মৃত সফিক উল্লাহর ছেলে এবং ওয়ার্ড শ্রমিকদলের দপ্তর সম্পাদক ছিলেন।  

আটকরা হলেন- নিহত রাজুর ভাতিজা কবির হোসেন ও নিজাম উদ্দিনের স্ত্রী রেখা বেগম। এরা ওই এলাকার বাসিন্দা।  

স্থানীয়রা জানায়, রাজু রাত আড়াইটার দিকে তার ভাতিজা কবিরের বাড়িতে ঢোকেন। তাকে চোর আখ্যা দিয়ে কবির চিৎকার দিয়ে লোকজন জড়ো করে পিটুনি দেয়। রাতভর তাকে নির্যাতন করা হয়। সকালে পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালে নেওয়ার পর মারা যান রাজু।  

সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) অরুপ পাল বাংলানিউজকে বলেন, রাজুকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়৷ তার শরীরের বিভিন্নস্থানে আঘাতের চিহ্ন ছিল। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে ঢাকায় রেফার্ড করা হয়৷ অ্যাম্বুলেন্সে তোলার পরেই মারা যান তিনি।
 
নিহত রাজুর ভাই মো. ওহিদ বলেন, রাজু রাতে আমার ভাতিজা কবির হোসেনের ঘরে মোবাইল ফোন চার্জ দেওয়ার উদ্দেশ্যে যায়। কিন্তু কবির এবং ওই বাড়ির মিজানসহ ৮-৯ জন মিলে আমার ভাইকে আটক করে মোবাইল চোর আখ্যা দিয়ে বেদম মারধর করে। এতে আমার ভাইয়ের মৃত্যু হয়। আমরা জড়িতদের বিচার চাই।  

রাজুর মেয়ে রুবি আক্তার বলেন, চোরের অপবাদ দিয়ে আমার বাবাকে নির্যাতন করে মেরে ফেলা হয়েছে। আমার বাবার পায়ের তালুতে খেজুরের কাটা ঢুকানো হয়েছে, পা ভেঙে দিছে। মাথায় আঘাত করা হয়েছে। ইট দিয়ে থেতলে দিয়েছে। পুরো শরীরে আঘাতের দাগ ছিল। সারারাত তাকে ব্যাপক নির্যাতন করে নারিকেল গাছের গোড়ায় ফেলে রাখা হয়৷ সকালে খবর পেয়ে আমরা পুলিশকে জানালে পুলিশ আমার বাবাকে হাসপাতালে নিয়ে আসতে বলে। তখনো জ্ঞান ছিল। পানি পান করতে চেয়েছে, দিতে পারিনি। হাসপাতালের নেওয়ার পর মারা যায়।  

রাজুর বোন জেসমিন আক্তার বলেন, ভাতিজা কবিরের ঘরে মোবাইল চার্জ দিতে যায় আমার ভাই রাজু। এ কারণে কবির আশপাশের লোকজন জড়ো করে আমার ভাইকে নির্মমভাবে নির্যাতন করে হত্যা করেছে।  

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল মোন্নাফ বাংলানিউজকে বলেন, এ ঘটনায় ২ জনকে আটক করা হয়েছে। মামলার প্রস্তুতি চলছে।  

বাংলাদেশ সময়: ০৭৫৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ০১, ২০২৫
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয় এর সর্বশেষ