ঢাকা: রাজধানীর পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের একটি ভবনে আগুনের ঘটনায় ১৩ জন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে চিকিৎসাধীন রয়েছে। ১৩ জনের শ্বাসনালি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সোমবার (৭ এপ্রিল) ওই ইউনিটের আবাসিক সার্জন ডা. হারুনুর রশীদ এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, ভোরে ১৩ জনকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে। এদের মধ্যে ইকবাল হোসেন (৪৭) নামে একজনের দুই শতাংশ পুড়েছে। বাকিদের বাহ্যিক কোন দগ্ধ নেই। সবারই শ্বাসনালি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এদের মধ্যে মুশফিকা (২৫) ও রাহেলা বেগম (৬০) আইসিইউতে আছেন। অন্য ১১ জনকে জেনারেল বেডে রেখে ২৪ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। যেহেতু ১৩ জনেরই শ্বাসনালি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই কারণে ২৪ ঘণ্টা পার না হলে কিছুই বলা যাচ্ছে না।
হাসপাতালে যারা চিকিৎসাধীন, ইকবাল হোসেন ও তার স্ত্রী ইশরাত জাহান (৩৬), দুই মেয়ে ইশতিমাম (১২) ও ইশায়েত (১০), মুশফিকা আক্তার (২৫), ইকবালের মা মমতাজ বেগম (৬৫), ইউনুস মিয়া (৭৪) স্ত্রী লাহেলা বেগম (৬০) ও তার দুই ছেলে আমিন (২৭), বুলবুল (৩৭) মেয়ে শিল্পী আক্তার (৪০) শিল্পীর মেয়ে তালহা (৩) ও রিয়দ উড ফার্নিচার দোকানের কর্মচারী সাকিব (২২)।
অসুস্থ ইউনুস মিয়ার মেয়ে জামাই শফিকুল ইসলাম জানান, তার শ্বশুর পরিবার নিয়ে ওই ভবনের পাঁচতলায় থাকেন। ভোরে নিচতলায় আগুন লাগে। এতে পুরো ভবনে ধোঁয়ার সৃষ্টি হয়। এই কারণে কেউ বাইরে বেরোতে পারেননি। পরে তাদের চিৎকারে ফায়ার সার্ভিস সদস্যরা উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসেন।
এদিকে ইকবালের ভাগিনা সায়মন আহমেদ আলিফ জানিয়েছেন, তার মামা পরিবার নিয়ে ওই ভবনের চারতলায় ভাড়া থাকেন। তার মামা ব্যবসা করেন। সকালে জানতে পারেন তার মামা আগুনে দগ্ধ হয়েছেন এবং তার পরিবার আগুনের ধোঁয়ায় অসুস্থ হয়ে বার্ন ইউনিটে আছেন। পরে বার্ন ইউনিটে এসে তাদের দেখি। ভোরে ওই ভবনের নিচতলায় আগুন লাগে। এতে ওপরে সবাই আটকা পড়েন। পরে ফায়ার সার্ভিস সদস্যরা তাদের উদ্ধার করেন।
ভোরে নাজিমউদ্দিন রোডে মাক্কুশাহ মাজার সংলগ্ন একটি পাঁচতলা ভবনের নিচতলায় এ আগুনের ঘটনা ঘটে। এতে নিচতলায় রিয়দ উড ফার্নিচারের দোকানের ম্যানেজার আমিন উদ্দিন (৭৪) মারা যায়।
ফায়ার সার্ভিসের সদরদপ্তরের কন্ট্রোলরুমের ডিউটি অফিসার মো. শাহজাহান জানান, ভোর ৪টা ১০ মিনিটে পাঁচতলা ভবনটির নিচতলায় লেপ-তোষকের দোকানে আগুন লাগে। খবর পেয়ে সাতটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে ৫টা ১২ মিনিটে আগুন নির্বাপণ করে। এর মধ্যে ওই ভবনের বিভিন্ন ফ্লোর থেকে ১৮ জনকে দগ্ধ ও অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ছাড়া দোতলা থেকে এক বৃদ্ধের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
এদিকে দোকানটির পাশের ‘রিয়দ উড’ নামে ফার্নিচার দোকানের মালিক আতিকুর রহমান জানান, তার দোকানে দুইজন ম্যানেজার ও একজন কর্মচারী রাতে ঘুমিয়েছিলেন। তাদের মধ্যে ম্যানেজার আমিন উদ্দিন (৭৪) আগুনে ধোঁয়ায় অসুস্থ হয়ে মারা গেছে। অপর কর্মচারী সাকিব ধোঁয়ায় অসুস্থ হয়েছেন। তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
তিনি আরও জানান, আমিন উদ্দিনের বাড়ি যশোরের শার্শার উলসি গ্রামে। ওই দোকানে থাকতেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৭, ২০২৫
এজেডএস/এএটি