ঢাকা, মঙ্গলবার, ১ বৈশাখ ১৪৩২, ১৫ এপ্রিল ২০২৫, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

সিঙ্গাপুর থেকে আসবে ৫০ হাজার টন সেদ্ধ চাল

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩০৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ৮, ২০২৫
সিঙ্গাপুর থেকে আসবে ৫০ হাজার টন সেদ্ধ চাল ফাইল ছবি

ঢাকা: দেশের খাদ্য চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি সরকারি বিতরণ ব্যবস্থা সচল রাখতে সিঙ্গাপুর থেকে ৫০ হাজার মেট্রিক টন নন বাসমতি সেদ্ধ চাল আমদানির অনুমোদন দিয়েছে সরকার। প্রতি কেজি চালের দাম পড়বে ৫০ টাকা ৮১ পয়সা।

আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে এই চাল ক্রয়ে মোট ব্যয় হবে ২৫৪ কোটি ২ লাখ ৮৪ হাজার টাকা।

মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলনকক্ষে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে এ সংক্রান্ত প্রস্তাবের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

বৈঠক সূত্র জানা গেছে, চাল আমদানির নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে খাদ্য অধিদপ্তর থেকে চাল ক্রয়ের জন্য গত ১২ মার্চ আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বান করা হয়। এতে মোট ১২ সরবরাহকারী দরপত্র দলিল সংগ্রহ করলেও ৫টি প্রতিষ্ঠান দরপত্রে অংশ নেয়।

এর মধ্যে সিঙ্গাপুর ভিত্তিক মেসার্স অ্যাগ্রোকরপ ইন্টারন্যাশনাল প্রাইভেট লিমিটেড প্রতি টন চালের দাম ৪১৬.৪৪ ডলার উল্লেখ করায় দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে প্রতিষ্ঠানটির নাম সুপারিশ করে, যা উৎস দেশগুলোর গড় দর (৪৪৪.৯১ ডলার) অপেক্ষা ২৮.৪৭ ডলার কম।

এছাড়া মেসার্স অ্যাগ্রোকরপ ইন্টারন্যাশনাল প্রাইভেট লিমিটেডের দেওয়া দর বাংলাদেশের বন্দর পর্যন্ত প্রতি টন ৪১৬.৪৪ ডলার, যা বাজার দর যাচাই কমিটির প্রাক্কলিত দরের চেয়ে কম। এ কারণে এই দর গ্রহণের জন্য দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি সুপারিশ করে।  

এর পরিপ্রেক্ষিতে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে প্রস্তাবটি উপস্থাপন করা হয়। কমিটির সদস্যরা প্রস্তাবটি পর্যালোচনা করে অনুমোদন দিয়েছে।  

প্রতি টন ৪১৬.৪৪ ডলার হিসেবে ৫০ হাজার টন নন বাসমতি সেদ্ধ চাল ক্রয়ের জন্য প্রয়োজন হবে ২ কোটি ৮ লাখ ২২ হাজার ডলার। অর্থাৎ গত ২৭ মার্চ বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ডলারের বিনিময় হার প্রতি ডলার ১২২ টাকা (সম্ভাব্য) হিসাবে ২৫৪ কোটি ২ লাখ ৮৪ হাজার টাকার প্রয়োজন হবে। এক্ষেত্রে প্রতি কেজির দাম পড়বে ৫০ টাকা ৮১ পয়সা।

সূত্রটি জানিয়েছে, মেসার্স অ্যাগ্রোকরপ ইন্টারন্যাশনাল প্রাইভেট লিমিটেডের কাছ থেকে চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দরের জন্য ৬০:৪০ অনুপাতে কস্ট ইন্স্যুরেন্স ফ্রেইট-লাইনার আউট (সিআইএফ-এলও) টার্মে (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে সিডি ভ্যাট ব্যতীত) প্রতি টন ৪১৬.৪৪ ডলার হিসাবে ২ কোটি ৮ লাখ ২২ হাজার ডলারে এই ৫০ হাজার টন (৫ শতাংশ) নন বাসমতি সেদ্ধ চাল কেনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে রাষ্ট্রীয় জরুরি প্রয়োজনে ও জনস্বার্থে আন্তর্জাতিক উৎস থেকে ৯ লাখ টন চাল আমদানির জন্য ‘অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি’র অনুমোদন নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে ৪ লাখ ৫০ হাজার টন নন বাসমতি সেদ্ধ চাল এবং জি টু জি পদ্ধতিতে মিয়ানমার থেকে ১ লাখ টন, পাকিস্তান থেকে ৫০ হাজার টন ও ভিয়েতনাম থেকে ১ লাখ টন আতপ চালসহ মোট ৭ লাখ টন চাল ক্রয়ের চুক্তি সম্পাদিত হয়েছে।

এছাড়া আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে ৫০ হাজার টন চাল আমদানির লক্ষ্যে চুক্তির কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন। চুক্তির বিপরীতে আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে ৩ লাখ ৩৯ হাজার ৮০৬ টন এবং জি টু জি ভিত্তিতে ২ লাখ ২৯ হাজার ৫০০ টন চাল চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দরে পৌঁছেছে। এর মধ্যে আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে ২ লাখ ৪৩ হাজার ১৭৫ টন এবং জি টু জি ভিত্তিতে ২ লাখ ৭ হাজার ৫৩৯ টন চাল সরকারি সংরক্ষণাগারে পাওয়া গেছে। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে এবং জি টু জি পদ্ধতিতে আরও চাল আমদানির কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩০৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৮, ২০২৫
জিসিজি/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।