ঢাকা, রবিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩২, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ২১ শাওয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

সমন জারি করা যাবে টেলিফোন-এসএমএসের মাধ্যমে

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৪১ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৭, ২০২৫
সমন জারি করা যাবে টেলিফোন-এসএমএসের মাধ্যমে

ঢাকা: বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের সুপারিশের আলোকে সিভিল প্রসিডিউর কোড (সিপিসি) বা দেওয়ানি কার্যবিধি সংশোধনের নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এখন থেকে টেলিফোন ও এসএমএসসহ যোগাযোগের আধুনিক পদ্ধতিতে সমন জারি করা যাবে।

এছাড়া ভুয়া মামলার জরিমানা দ্বিগুণের বেশি বাড়ানো হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এসব নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়।

ঢাকা: এখন থেকে টেলিফোন, এসএমএস বা আধুনিক অন্য ডিভাইসের মাধ্যমে সমন জারি করা যাবে। সিভিল প্রসিডিউর কোড (সিপিসি) বা দেওয়ানি কার্যবিধিতে এ ধরনের বিধান যুক্ত করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।

বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) উপদেষ্টা পরিষদের সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভা শেষে বিকেলে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে পানিসম্পদ এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এ তথ্য জানিয়েছেন। প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম উপস্থিত ছিলেন।

সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন সিভিল প্রসিডিউর কোডে কিছু কিছু পরিবর্তন আনার জন্য সুপারিশ করেছিল। তারই আলোকে একটা আমরা সেই ব্রিটিশ সরকারের সময় প্রণীত সিপিসির কিছু কিছু সংশোধন আজকে নীতিগতভাবে অনুমোদন করতে পেরেছি।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে একটা কথা আছে, কারো সঙ্গে শত্রুতা করতে গেলে একটা ল্যান্ড মামলা জুড়ে দাও, তাহলে তিন জেনারেশনেও সেই মামলা আর শেষ হবে না। আজকে সেই তিন জেনারেশন যেন না লাগে, এক জেনারেশন এই মামলা শেষ করা যায়, তার জন্য সিপিসির কিছু সংশোধনী আনা হয়েছে, যাতে করে যারা বিচারপ্রার্থী তাদের সময় কম লাগে, তাদের টাকা কম লাগে। অনেক সময় আমরা যারা উকিল আছি, তারা নানান অজুহাতে বিভিন্ন সময়ে সময় নিয়ে মামলার প্রক্রিয়া বিলম্বিত করি। সেটা যেন না হয়, তার জন্য কতগুলো সিদ্ধান্ত হয়েছে।

সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান আরও বলেন, বিচার প্রক্রিয়াটা আমাদের এখনো অনেকাংশই সেকেলে রয়ে গেছে। বিচার কার্যক্রমকে আধুনিকায়ন করতে এটা বলা হচ্ছে যে, সমন জারিটা এখন থেকে টেলিফোনের মাধ্যমে, এসএমএসের মাধ্যমে বা অন্য মডার্ন যে ডিভাইসগুলো আছে, মর্ডান যে মেথডগুলো আছে, তার মাধ্যমেও করতে পারব।

তিনি বলেন, ফাঁসিয়ে দেওয়ার জন্য ভুয়া মামলা করা হয়। আগে সেটার শাস্তি ছিল বিশ হাজার টাকা, এখন সেটাকে বাড়িয়ে ৫০ হাজার করা হয়েছে। সিপিসির এই হচ্ছে বড় বড় যে সংশোধনীগুলোর কথা বলা হয়েছে, সেটা।

উপদেষ্টা আরও বলেন, আরেকটা বিষয়ে আমি খুশি মনে বলতে চাই, অভিন্ন পানি ভাগাভাগি নিয়ে, পানি ব্যবস্থাপনা নিয়ে বলি যে, আমরা আন্তর্জাতিক আইনগুলো কেন স্বাক্ষর করছি না। বিভিন্ন জলরাশির পানি ব্যবস্থাপনা নিয়ে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে দুটো আয়নাতে জাতিসংঘে। একটা হচ্ছে ১৯৯৭ কনভেনশন, আরেকটা হচ্ছে ১৯৯২ কনভেনশন। ১৯৯৭ কনভেনশনটা ২০১৪ সালে কার্যকর হয়। অর্থাৎ উজানের দেশগুলোর মাত্র ৩৬টা দেশের স্বাক্ষর লাগতো। সে স্বাক্ষর পেতে লেগে যায় ১৭ বছরেরও বেশি। আরেকটা যেটা আইন আছে, সেটা খুবই কার্যকর, সেটা হচ্ছে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নকে মূলত টার্গেট করে এই আইনটা। যদিও এটা ইউরোপিয়ান ইউনিয়নকে টার্গেট করে ১৯৯২ সালে করা। এটা কিন্তু ২০১৬ সালে সকল দেশের জন্যই উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। এ পর্যন্ত প্রায় ১১টি দেশ ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরে এটাতে স্বাক্ষর করেছে। তার মধ্যে বেশিরভাগ দেশই আফ্রিকার।

আজকে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এই কনভেনশনটা আমরা অনুস্বাক্ষর করব। এর আগে যত প্রক্রিয়া ছিল সংশ্লিষ্টজনদের সঙ্গে আলোচনা করা, আন্তঃমন্ত্রণালয় আলোচনা করা, তারপর ওই কনভেনশন সেক্রেটারিয়ার থেকে লোক আসে। সবই আমাদের হয়ে গেছে, ফলে বাংলাদেশ এখন সিদ্ধান্ত নিয়েছে কনভেনশন অন দ্য প্রটেকশন অ্যান্ড ইউজ অব ট্রান্স বাউন্ডারি ওয়াটার কোর্সেস অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল নেক্স ১৯৯২-এ বাংলাদেশ অনুস্বাক্ষর করবে এবং বাংলাদেশকে দিয়ে আসলে এশিয়ার দেশগুলোর স্বাক্ষর প্রক্রিয়াটা শুরু হচ্ছে, বলেন পানিসম্পদ উপদেষ্টা।

বাংলাদেশ সময়: ২০৪০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৭, ২০২৫
এসকে/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।