ঢাকা: বেশ কয়েকটি দাবিতে আজ মঙ্গলবার (২০ মে) মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন সিভিল সার্ভিসের ২৫ ক্যাডারের কর্মকর্তারা।
রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে তারা বৃষ্টির মধ্যে বিকেল ৫টা ১০ মিনিট থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এই কর্মসূচি পালন করেন।
মানববন্ধন থেকে জানানো হয়, আগামী ২৬ মে'র মধ্যে কর্মকর্তাদের সাময়িক বরখাস্তের আদেশ ও বিভাগীয় মামলা প্রত্যাহার করা না হলে আগামী ২৭ ও ২৮ মে অর্ধদিবস কলম বিরতি কর্মসূচি পালন করা হবে।
মানববন্ধনে কর্মকর্তারা দাবি করেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখালেখির জন্য ২৫ ক্যাডারের ১২ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। সরকারের বিভিন্ন মহল থেকে বিষয়টি সমাধানের জন্য আশ্বস্ত করা হয়েছিল। তবুও দীর্ঘদিন ধরে বিষয়টি ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। কয়েকজনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কার্যক্রম চলছে।
তারা বলেন, প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অত্যন্ত আপত্তিকর মন্তব্য করেছেন, সরকারি বিধি-বিধান ভঙ্গ করে মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরে মারামারি করেছেন, মিছিল করেছেন। তারপরও তাদের বিরুদ্ধে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
কয়েকদিন আগে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন উপ-সচিব পুলে প্রশাসন ক্যাডারের জন্য ৫০ শতাংশ কোটা রেখে অন্যান্য ২৫ ক্যাডারের জন্য ৫০ শতাংশ পরীক্ষার ভিত্তিতে নিয়োগের সুপারিশ করে। কোনো রকম আলোচনা ছাড়া এমন সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বিভিন্ন কর্মসূচি দিয়ে আসছে আন্তক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদ।
কর্মকর্তারা বলেন, একটি নির্দিষ্ট ক্যাডারের গোষ্ঠী-স্বার্থে উদ্দেশ্যমূলকভাবে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, পরিসংখ্যান, ডাক, পরিবার-পরিকল্পনা, কাস্টমস ও ট্যাক্স ক্যাডারের ক্ষেত্রে বিভিন্ন জটিলতা সৃষ্টি করা হয়েছে। একটি ক্ষুদ্র গোষ্ঠীর স্বার্থে ৫৫ হাজার ক্যাডার কর্মকর্তার দাবি উপেক্ষা করা হলে, তা প্রত্যাখ্যান করবে পরিষদ।
এ সময় পরিষদের পক্ষ থেকে কৃত্য পেশাভিত্তিক মন্ত্রণালয় (ক্যাডার যার, মন্ত্রণালয় তার) বাস্তবায়ন, উপ-সচিব পদে কোটা পদ্ধতি বাতিল করে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ, সব ক্যাডারের সমতা বিধান ও বিভিন্ন ক্যাডারে সৃষ্ট জটিলতা দ্রুত নিরসনের আহ্বান জানান কর্মকর্তারা।
তারা বলেন, ডিএস পুলের কোটা কোনভাবেই মেনে নেবে না পরিষদ। এটি জুলাই বিপ্লবের সাথে সাংঘর্ষিক। কোটা বজায় রাখার জন্য এ দেশের এত ছাত্র-জনতা জীবন দেয়নি। জুলাইয়ের পর সব কোটার অবসান হয়েছে, ডিএস পুলের কোটাও বাতিল করতে হবে।
আন্তক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদের সমন্বয়ক মোহাম্মদ ওমর ফারুক দেওয়ান জানান, জবাবদিহিমূলক জনবান্ধব সিভিল প্রশাসনের দাবিতে পরিষদের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। আগামী ২৬ মে'র মধ্যে সাময়িক বরখাস্ত ও বিভাগীয় মামলা প্রত্যাহার করা না হলে আগামী ২৭ ও ২৮ মে অর্ধদিবস (সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত) কলম বিরতি কর্মসূচি পালন করা হবে।
পরিষদের পক্ষ থেকে একই দাবিতে গত ২ মার্চ তারিখে পূর্ণ দিবস কর্মবিরতি পালন করা হয়। এ ছাড়া গত বছর ২৪ ডিসেম্বর সারা দেশে এক ঘণ্টার কলম বিরতি কর্মসূচি ও ২৬ ডিসেম্বর মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়।
এমআইএইচ/আরএইচ