ঢাকা: দুই দফা দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা সংলগ্ন কাকরাইল মসজিদ মোড়ে অবস্থান নেওয়া মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে ‘তথ্য আপা’ প্রকল্পের কর্মীদের সরিয়ে দিয়েছে পুলিশ। এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বেশ কয়েকজন আন্দোলনকারীকে পুলিশের প্রিজন ভ্যানেও তোলা হয়।
রোববার (০১ জুন) বিকেল ৪টার দিকে পুলিশ মৃদু লাঠি চার্জ করে আন্দোলনকারী ‘তথ্য আপাদের’ কাকরাইল মসজিদ মোড় থেকে সরিয়ে দেয়। পরে তারা প্রেসক্লাবের দিকে চলে যান।
এ সময় অন্তত ১৫ জন তথ্য আপাকে জোর করে পুলিশের প্রিজন ভ্যানে তুলতে দেখা যায়। যদিও পরে তাদের ছেড়ে দিয়েছে বলে জানিয়েছেন ডিএমপির রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মাসুদ আলম।
তিনি জানান, পরিস্থিতি হালকা করতে কয়েকজন আন্দোলনকারীকে নারী পুলিশ দিয়ে গাড়িতে তোলা হয়েছিল। পরে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
গত বুধবার (২৮ মে) থেকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে চার দফা দাবিতে অনশন কর্মসূচি পালন করছেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে ‘তথ্য আপা’ প্রকল্পের কর্মীরা। রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় তারা প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা অভিমুখে পদযাত্রা শুরু করেন। তবে তাদের দাবি কমিয়ে দুই দফা করা হয়। এ সময় প্রেসক্লাবের সামনে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। কিন্তু তখন নারী পুলিশ না থাকায় আন্দোলনকারীরা সেই বাধা অতিক্রম করে যমুনা অভিমুখে মিছিল নিয়ে যান। পর দ্বিতীয় দফায় কাকরাইল মসজিদ মোড়ে নারী পুলিশসহ পুলিশ সদস্যরা তাদের বাধা দেয়। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। পুলিশ মৃদু লাঠিচার্জও করে। পরে আন্দোলনকারীরা সেখানেই বসে পড়ে অবস্থান নেন।
পরে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ‘তথ্য আপাদের’ পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল যমুনা যায় কথা বলতে। কিন্তু তারা কারো সঙ্গেই কথা না বলেই এক পর্যায়ে ফিরে আসে। তাদের দাবি- উপদেষ্টাদের মিটিং চলায় কেউ তাদের সঙ্গে দেখা করেননি।
পরে বিকেল পৌনে ৪টার দিকে পুলিশ আন্দোলনকারীদের অবস্থান ছেড়ে দিতে ১৫ মিনিট সময় দেয়। সেই সময়ের মধ্যে আন্দোলনকারীরা অবস্থান না ছাড়ায় মৃদু লাঠিচার্জ করে সেখান থেকে তাদের সরিয়ে দেয় পুলিশ।
তাদের দুই দফা হলো- মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে ‘তথ্য আপা’ প্রকল্পে কর্মরত সব জনবলকে সমগ্রেডে পদসৃজন করে রাজস্ব খাতে স্থানান্তর এবং কর্তন করা বেতন ও ভাতা দ্রুত সময়ের মধ্যে পরিশোধ করা।
আন্দোলনকারীরা জানান, নারীর ক্ষমতায়নের জন্য গত কয়েক বছর ধরে তারা ‘তথ্য আপা’ প্রকল্পে মাঠ পর্যায়ে কাজ করে আসছেন। প্রায় দুই হাজার নারী কর্মী এ প্রকল্পে কাজ করছেন। এক মাস পর এ প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলে তারা সবাই বেকার হয়ে যাবেন। তাই তারা প্রকল্পের চাকরি রাজস্বখাতে স্থানান্তরসহ দুই দফা দাবিতে গত পাঁচদিন ধরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অনশন কর্মসূচি পালন করছেন। কিন্তু কোনো সারা না পেয়ে আজ যমুনা অভিমুখে গিয়ে কাকরাইলে অবস্থান নিয়েছিলেন।
এসসি/আরআইএস