ঢাকা: ব্যক্তিগত কারণে গত রোজার ঈদে বাড়ি যেতে পারেননি ব্যবসায়ী নাজমুল হাসান। তাই এবার কোরবানির ঈদে পরিবার নিয়ে বেশ কয়েকদিনের জন্য গ্রামের বাড়ি দিনাজপুর থাকার পরিকল্পনা করেছেন তিনি।
নাজমুল হাসান বলেন, ঈদে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বাড়ি যাবো। সেখানে বাবা-মা আছেন। সবাই খুশি। কিন্তু ঈদের সময় যেভাবে চুরি হয়, ফাঁকা বাসা কীভাবে রেখে যাবো সেই চিন্তায় আছি।
ঈদের ছুটিতে অনেকটাই জনশূন্য হয়ে যায় রাজধানী ঢাকা। এ সুযোগে বেড়ে যায় চুরি-ছিনতাইয়ের মতো অপরাধ। বিশেষ করে ঈদে লাখ লাখ মানুষ ঢাকা ছাড়ায় ফাঁকা পড়ে থাকে তাদের ফ্ল্যাট-বাসা। আর সেই সুযোগে হাত সাফাইয়ের কাজ করে চোরেরা। তবে এসব অপরাধ ঠেকাতে প্রতিবারই বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি।
পবিত্র ঈদুল আজহার ছুটি শুরু হয়েছে বৃহস্পতিবার (৫ জুন)। ১০ দিনের টানা এ ছুটি শেষ হবে আগামী শনিবার (১৪ জুন)। দীর্ঘ এ ছুটিতে রাজধানীকে আগলে রাখতে সচেষ্ট ভূমিকায় রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। নগরীর নিরাপত্তা জোরদার করতে টহল কার্যক্রমের পাশাপাশি বাড়ানো হয়েছে চেকপোস্ট ও গোয়েন্দা নজরদারি।
সরেজমিনে দেখা যায়, রাজধানীর ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, তেজগাঁও, মহাখালী, বিজয় সরণি, খামারবাড়ী এলাকার বিভিন্ন রাস্তায় পুলিশ ও র্যাবের গাড়ি টহল দিচ্ছে। তবে সেটি দীর্ঘ সময় পর পর। দিনের বেলায় তেমন চেকপোস্ট চোখে না পড়লেও রাতে বিভিন্ন সড়কে চেক পোস্ট বসায় বিভিন্ন বাহিনী। সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকেও চেকপোস্ট ও টহল কার্যক্রম দেখা যায়।
এ বিষয়ে ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, রাজধানীতে চুরি, ছিনতাই ঠেকাতে আমাদের নিয়মিত টহল কার্যক্রম বাড়ানো হয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় চেকপোস্ট কার্যক্রম চলমান আছে। পাশাপাশি আমাদের গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত রয়েছে।
কোরবানির ঈদে পশুরহাটগুলোতে অনেক টাকার লেনদেন হওয়ায় সেখানেও বেড়ে যায় চুরি, ছিনতাইয়ের মতো অপরাধ। জাল টাকার উপদ্রবও দেখা যায়। এসব অপরাধ ঠেকাতে পশুরহাটগুলোতেও বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে ডিএমপি, র্যাবসহ
বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
এ বিষয়ে ডিসি মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বলেন, পশুর হাটগুলোতে ডিএমপির পক্ষ থেকে নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। পশুর হাটে পুলিশ কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা হয়েছে। সেখানে জাল টাকা শনাক্ত করার ব্যবস্থা রয়েছে।
ঈদের সময় জাতীয় ঈদগাহসহ বিভিন্ন ঈদ জামাতে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলো। ডিএমপির পক্ষে থেকে ঈদ জামাত কেন্দ্রিক বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানান ডিসি মুহাম্মদ তালেবুর রহমান।
ঈদে র্যাবের বাড়তি নিরাপত্তা
র্যাব সদর দপ্তরের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের সহকারী পরিচালক সিনিয়র এএসপি মুত্তাজুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, জনগণের নিরাপত্তায় সব সময় সজাগ থাকে র্যাব। আসন্ন ঈদুল আজহায় র্যাবের পক্ষ থেকেও পর্যাপ্ত নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ঢাকার সবগুলো পশুর হাটের পাশাপাশি দেশের সব হাটের নিরাপত্তার কাজ করছে র্যাব।
ঈদে মানুষের নিরাপত্তায় গোয়েন্দা কার্যক্রম ও টহল জোরদার করা হয়েছে। এ সময় ইউনিফর্মের পাশাপাশি সাদা পোশাকে গোয়েন্দা বিভাগের সদস্যরা তৎপর আছেন। র্যাব জানিয়েছে, ঈদে নিরাপত্তায় গোয়েন্দা, ফুট প্যাট্রল, মোবাইল প্যাট্রল, সাইবার ওয়ার্ল্ডের নজরদারি থাকবে। সব ধরনের নিরাপত্তার পাশাপাশি নকল টাকার ব্যবহার প্রতিরোধে বরাবরের মতো সজাগ আছে র্যাব।
এসসি/আরআইএস