ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৬ আষাঢ় ১৪৩২, ১৯ জুন ২০২৫, ২২ জিলহজ ১৪৪৬

জাতীয়

আইএমও নির্বাচনে দেশের পক্ষে সমর্থন চাইলেন নৌ উপদেষ্টা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭:১৮, জুন ১৮, ২০২৫
আইএমও নির্বাচনে দেশের পক্ষে সমর্থন চাইলেন নৌ উপদেষ্টা

ঢাকা: বাংলাদেশ ২০২৬-২৭ মেয়াদের জন্য ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অর্গানাইজেশন (আইএমও) কাউন্সিলের ক্যাটাগরি ‘সি’-এর সদস্য হিসেবে প্রার্থিতা ঘোষণা করেছে। আসন্ন নির্বাচনে বাংলাদেশের পক্ষে নরওয়েসহ অন্যান্য সদস্য রাষ্ট্রের সমর্থন কামনা করেছেন নৌপরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন।

বুধবার (১৮ জুন) দুপুরে সচিবালয়ে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার নিজ দপ্তরে বাংলাদেশে নিযুক্ত নরওয়ের রাষ্ট্রদূত হকোন অ্যারাল্ড গুলব্র্যান্ডসেন সাক্ষাৎকালে উপদেষ্টা এ আহ্বান জানান।

উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম মেরিটাইম কান্ট্রি। আমাদের একটি গভীর সমুদ্র বন্দরসহ মোট চারটি সমুদ্র বন্দর রয়েছে। দেশের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ মানুষ মেরিটাইম সেক্টরের ওপর নির্ভরশীল। মাতারবাড়িতে একটি গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রায় ৫৪টি প্রধান নদীবন্দর রয়েছে। দেশে ১০ হাজার কিলোমিটারের অধিক বিস্তৃত অভ্যন্তরীণ নৌপথ রয়েছে। দেশের দক্ষিণে বিশাল বঙ্গোপসাগরের অবস্থান আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের ভূ-রাজনৈতিক গুরুত্বকে বৃদ্ধি করেছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের তৈরি জাহাজ বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে। ফলে মেরিটাইম সেক্টরকে আরও এগিয়ে নিতে এবং এ সেক্টরের বৈশ্বিক পর্যায়ে অবদান রাখতে বাংলাদেশ আইএমও কাউন্সিল নির্বাচনে  প্রতিদ্বন্দ্বিতা ঘোষণা করেছে। এ সময় উপদেষ্টা বাংলাদেশের সামুদ্রিক ঐতিহ্য, ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে কৌশলগত অবস্থান এবং বৈশ্বিক বাণিজ্যে ক্রমবর্ধমান অবদান তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, মেরিটাইম সেক্টরে বাংলাদেশের শক্তিশালী অংশগ্রহণ রয়েছে। মেরিটাইম সেক্টরের উন্নয়নে বাংলাদেশ সরকার আন্তর্জাতিক নৌসংস্থার (আইএমও) সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক মেরিটাইম সেক্টরের বিভিন্ন নীতি নির্ধারণী বিষয়ে বাংলাদেশের ভূমিকা রয়েছে। তিনি টেকসই সামুদ্রিক উন্নয়নের প্রতি দেশের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন এবং আইএমও’র কার্বনমুক্ত ভবিষ্যৎ লক্ষ্য বাস্তবায়নে বাংলাদেশের দৃঢ় সমর্থনের কথা জানান।

এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, জাহাজ পুনঃব্যবহার খাতে বাংলাদেশ বিশ্বে নেতৃত্ব দিচ্ছে এবং ২১ হাজার প্রশিক্ষিত নাবিক দেশের সামুদ্রিক নিরাপত্তা, নাবিক কল্যাণ ও জেন্ডার অন্তর্ভুক্তিতে অবদান রাখছে। উপদেষ্টা বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান জাহাজ শিল্পে নরওয়ে সরকারকে বিনিয়োগের আহ্বান জানান।

নরওয়ের রাষ্ট্রদূত বলেন, দুই দেশের পারস্পরিক সম্পর্ক, উন্নয়ন সহযোগিতা ও বাণিজ্যিক সম্পর্কের দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। জাহাজ নির্মাণ ও পুনঃব্যবহার খাতে নরওয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে একযোগে কাজ করছে। নরওয়ের বিভিন্ন কোম্পানি জাহাজ শিল্পসহ অন্যান্য সেক্টরে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী।  

এ সময় তিনি পরিবেশ সুরক্ষা, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা, আইএমও কনভেনশন বাস্তবায়ন, ডিজিটালাইজেশন এবং সমুদ্র দূষণ রোধে বাংলাদেশের সতর্ক অবস্থানের প্রশংসা করেন। তিনি বাংলাদেশের জাহাজ ভাঙা শিল্পে পরিবেশ সুরক্ষার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

রাষ্ট্রদূত আসন্ন আইএমও নির্বাচনে বাংলাদেশের প্রার্থীতার পক্ষে নরওয়ে সরকারের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি বাংলাদেশ সরকারকেও ওই নির্বাচনে নরওয়েকে সমর্থন জানানোর অনুরোধ জানান।

বাংলাদেশ আইএমও এক্সিকিউটিভ কাউন্সিলের ‘সি’ ক্যাটাগরিতে কাউন্সিলর হিসেবে ২০২৪-২০২৫ মেয়াদে সফলভাবে দায়িত্ব পালন করে আসছে।

জিসিজি/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।