ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১০ আশ্বিন ১৪৩২, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০২ রবিউস সানি ১৪৪৭

জাতীয়

তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনে তামাক কোম্পানি স্টেক হোল্ডার হতে পারবে না: প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা 

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০:১৬, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২৫
তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনে তামাক কোম্পানি স্টেক হোল্ডার হতে পারবে না: প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা  সিরডাপ মিলনায়তনে ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন অব দ্য রুরাল পুওর (ডর্প) আয়োজিত আরোচনা সভায় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। 

তামাক কোম্পানি কোনোভাবেই তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের স্টেকহোল্ডার হতে পারবে না বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।  

তিনি বলেন, সরকারও জনস্বার্থবিরোধী এমন কোনো কাজে কোনো অবস্থাতেই যুক্ত হবে না।

যদি দেশের মানুষের সুস্থতার কথা সত্যিকার অর্থে চিন্তা করতে হয়, তবে তামাক বন্ধ করতেই হবে।

বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সিরডাপ মিলনায়তনে ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন অব দ্য রুরাল পুওর (ডর্প) আয়োজিত ‘জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রস্তাবিত সংশোধনী দ্রুত পাশ’ -শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।  

‘ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৪’-এর খসড়া পরিমার্জনের লক্ষ্যে উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির সদস্য ফরিদা আখতার বলেন, দেশে বিদ্যমান ‘ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০০৫’ পরবর্তীতে ২০১৩ সালে সংশোধিত হলেও কার্যকর নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করতে ছয়টি গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ প্রণয়ন করা হয়েছে।  

তিনি আরও বলেন, জনসমাগমস্থল সম্পূর্ণভাবে ধূমপানমুক্ত করা জরুরি। ধূমপানের জন্য আলাদা স্থান নির্ধারণের কোনো সুযোগ রাখা যাবে না-এ বিষয়টি সংশোধনীতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, তামাক কোম্পানির নানা অপকৌশলের কারণেই তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনে দীর্ঘদিন দেরি হয়েছে। তামাক কোম্পানি যতই শক্তিশালী হোক না কেন, তাদের কোনো নৈতিক মনোবল নেই। ফলে যতই চেষ্টা করুক না কেন, তারা সফল হতে পারবে না।

ই-সিগারেট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সরকার শুরু থেকেই এর আমদানি নিষিদ্ধ করার বিষয়ে একমত হয়েছে। একইসঙ্গে তিনি বলেন, তামাক পণ্যের ক্ষতিকর দিক প্যাকেটের দৃশ্যমান স্থানে প্রকাশ করতে হবে। পরোক্ষ ধূমপানও ধূমপান সেবনের মতোই ক্ষতিকর বলে উল্লেখ করেন তিনি।

তরুণদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আপনারা যদি সচেতন হন, তবে শুধু নিজেরাই ধূমপান থেকে বিরত থাকবেন না, বরং অন্যদেরও এ অভ্যাস থেকে বিরত রাখতে পারবেন। কেবল আইন করলেই হবে না, তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নে তরুণদের সোচ্চার হতে হবে। ’

তিনি তরুণ সমাজকে তামাকমুক্ত ও সুস্থ বাংলাদেশ গড়ার আন্দোলনে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

সভায় তামাক নিয়ন্ত্রণের জন্য ডব্লিউএইচও ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোবাকো কন্ট্রোল (এফসিটিসি)-এর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের প্রণীত খসড়ার সংশোধনীগুলোর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ছয়টি প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয়।  

তার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাবনাগুলো হলো- পাবলিক প্লেসে ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান বা স্মোকিং জোন নিষিদ্ধ করা, সব ধরনের তামাকজাত পণ্যের প্রদর্শন ও বিজ্ঞাপন সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করা, ই-সিগারেটের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে তরুণ-তরুণীদের রক্ষা করা, বিড়ি-সিগারেটের খুচরা শলাকা বিক্রি বন্ধ করা, তামাক কোম্পানির সামাজিক দায়বদ্ধতা কর্মসূচি বা সিএসআর কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা এবং তামাকজাত দ্রব্যের মোড়কের সচিত্র সতর্কবার্তা বৃদ্ধি করে শতকরা ৯০ ভাগ করা।

বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশনের সদস্য সাবেক সচিব মুন্সী আলাউদ্দীন আল আজাদ, জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের মহাপরিচালক মো. আখতারউজ-জামান, বাংলাদেশ ক্যানসার সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. গোলাম মহিউদ্দিন ফারুক, তামাকবিরোধী যুব প্রতিনিধি আয়েশা আকতার শিল্পী এবং নাইমুর রহমান ইমন প্রমুখ।

সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য দেন ডর্‌প’র প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী এএইচএম নোমান এবং মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডর্‌প’র প্রকল্প সমন্বয়কারী জেবা আফরোজা।  

জিসিজি/আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।