ঢাকা, বুধবার, ১৬ আশ্বিন ১৪৩২, ০১ অক্টোবর ২০২৫, ০৮ রবিউস সানি ১৪৪৭

জাতীয়

যুক্তরাষ্ট্রের মানবপাচার প্রতিবেদনে বাংলাদেশের অবস্থান দ্বিতীয় স্তরে 

ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১:১৫, অক্টোবর ১, ২০২৫
যুক্তরাষ্ট্রের মানবপাচার প্রতিবেদনে বাংলাদেশের অবস্থান দ্বিতীয় স্তরে 

যুক্তরাষ্ট্রের বৈশ্বিক মানব পাচার প্রতিবেদন- ২০২৫-এ বাংলাদেশের অবস্থান অপরিবর্তিত রয়েছে। সার্বিক বিবেচনায় বাংলাদেশ আগের মতোই দ্বিতীয় স্তরে (টায়ার-২) অবস্থান করছে।

সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রকাশিত মানবপাচার সূচকে বাংলাদেশের এই অবস্থানের কথা জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিচারের ক্ষেত্রে সরকার সামগ্রিক আইন প্রয়োগের প্রচেষ্টা কমেছে, ভুক্তভোগীদের সুরক্ষা প্রচেষ্টা বাড়িয়েছে এবং পাচাররোধে চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। বাংলাদেশ সরকার পাচার নির্মূলের জন্য ন্যূনতম মান সম্পূর্ণরূপে পূরণ করেনি, তবে এটি করার জন্য উল্লেখযোগ্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সরকার পূর্ববর্তী প্রতিবেদনের সময়কালের তুলনায় কিছুটা বেশি প্রচেষ্টা দেখিয়েছে, তাই বাংলাদেশ টায়ার ২-এ থেকে গেছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, সরকার পাচারকারীদের বিষয়ে কম তদন্ত ও বিচার করেছে এবং দোষী সাব্যস্ত করেছে। যৌনকাজে পাচার এবং জোরপূর্বক শিশুশ্রমসহ অভ্যন্তরীণ পাচারের অপরাধ মোকাবিলায় পর্যাপ্ত পদক্ষেপ নেয়নি। শ্রম পরিদর্শকদের অনানুষ্ঠানিক খাতগুলো পর্যাপ্তভাবে পর্যবেক্ষণ করার এবং শ্রম আইন লঙ্ঘনের জন্য সংস্থাগুলোকে জবাবদিহি করার ক্ষমতার মারাত্মকভাবে অভাব ছিল।

বিশেষ করে রোহিঙ্গা শরণার্থী এবং ফেরত আসা বাংলাদেশি অভিবাসী শ্রমিকদের জন্য ভুক্তভোগীদের সুরক্ষা ও পুনরেকত্রীকরণ প্রচেষ্টা অপর্যাপ্ত রয়ে গেছে। সরকার অভিবাসন ব্যয় নির্ধারণ অব্যাহত রেখেছিল, যা অনেক অভিবাসী শ্রমিককে ঋণগ্রস্ত করেছিল, পাচারের প্রতি তাদের দুর্বলতা বাড়িয়ে তুলেছিল।

উল্লেখ‌্য, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রকাশিত মানবপাচার সূচকে ২০২০ সাল থেকে বাংলাদেশের অবস্থান এই স্তরেই আছে। এই অবস্থান থেকে উত্তরণে প্রতিবেদনে কয়েকটি সুপারিশ করা হয়েছে। যাতে বলা হয়েছে, জড়িত কর্মকর্তাসহ পাচারের অপরাধের তদন্ত ও বিচারের প্রচেষ্টা বাড়াতে হবে এবং দোষী সাব্যস্ত পাচারকারীদের জন্য পর্যাপ্ত শাস্তি চাওয়া, এর মধ্যে উল্লেখযোগ্যভাবে কারাদণ্ড হওয়া উচিত।

মানব পাচারের মামলার বিচার ও বিচার করার জন্য পাচারবিরোধী ট্রাইব্যুনালের কর্মীদের সক্ষমতা জোরদার এবং ট্রাইব্যুনালের সংখ্যা প্রয়োজনীয় হারে বাড়ানো উচিত।  

প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ ভুক্তভোগী, বিদেশি ভুক্তভোগী এবং বিদেশে শোষিত ভুক্তভোগীসহ সব পাচারের শিকারদের জন্য সুরক্ষা, পুনরেকত্রীকরণ পরিষেবাগুলোর প্রাপ্যতা, গুণমান বৃদ্ধি এবং সরকার পরিচালিত ও অর্থায়নে পরিচালিত আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে পাচারের শিকারদের চলাচলের স্বাধীনতার অনুমতি দেওয়া।

অভিবাসী শ্রমিকদের কাছ থেকে নেওয়া নিয়োগ ফি বাদ দেওয়া এবং প্রতারণামূলকভাবে কর্মী নিয়োগকারীদের জবাবদিহি করা। অনানুষ্ঠানিক খাত পর্যবেক্ষণ, শ্রম আদালতে মামলা দায়ের এবং ফৌজদারি আদালতের তদন্তের জন্য মামলা রেফারসহ পাচারের অপরাধ শনাক্তকরণের জন্য শ্রম পরিদর্শকদের ক্ষমতা বাড়ানো।

সুপা‌রিশে বাংলাদেশি পাচারের শিকারদের শনাক্ত ও প্রত্যাবাসন সহজতর করার জন্য ভারতের সঙ্গে ২০১৫ সালের সমঝোতা স্মারক বাস্তবায়ন করার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে।

টিআর/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।