ঢাকা, বুধবার, ২২ আশ্বিন ১৪৩২, ০৮ অক্টোবর ২০২৫, ১৫ রবিউস সানি ১৪৪৭

জাতীয়

তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনে তামাক কোম্পানির সঙ্গে বৈঠক বাতিলের দাবি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬:৩১, অক্টোবর ৭, ২০২৫
তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনে তামাক কোম্পানির সঙ্গে বৈঠক বাতিলের দাবি

ঢাকা: অধূমপায়ী ও তরুণ প্রজন্মকে তামাকের ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রস্তাবিত সংশোধনী দ্রুত পাস এবং আইন সংশোধন প্রক্রিয়ায় তামাক কোম্পানির সম্পৃক্ততা সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএইচআরএফ)।

মঙ্গলবার (০৭ অক্টোবর) সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির শফিকুল কবির মিলনায়তনে আয়োজিত ‘জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন: এফসিটিসি অনুচ্ছেদ ৫.৩ বাস্তবায়নে রাষ্ট্রের দায়বদ্ধতা’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।

ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের সহযোগিতায় বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামে (বিএইচআরএফ) সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।

সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন বিএইচআরএফের সভাপতি মো. রাশেদ রাব্বি।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে বর্তমানে প্রায় ৩ কোটি ৭৮ লাখ মানুষ (৩৫.৩ শতাংশ) তামাক ব্যবহার করেন এবং প্রতি ১০ জনের মধ্যে চারজন পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হন। এ পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহারের নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে। কিন্তু উপদেষ্টা কমিটি সম্প্রতি এফসিটিসি অনুচ্ছেদ ৫.৩ লঙ্ঘন করে তামাক কোম্পানির সঙ্গে বৈঠকের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যার ধারাবাহিকতায় বুধবার (০৮ অক্টোবর) এনবিআর কোম্পানিগুলোর সঙ্গে বৈঠকে বসার পরিকল্পনা করেছে।

তিনি আরও বলেন, এফসিটিসি অনুচ্ছেদ ৫.৩ অনুযায়ী, কোনো দেশের তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বা নীতি প্রণয়নে তামাক কোম্পানি বা তাদের সহযোগীদের মতামত গ্রহণযোগ্য নয়। বাংলাদেশ এ চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে এ প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে বাধ্য। তাই সরকারের সংশ্লিষ্টদের এফসিটিসি পুরোপুরি অনুসরণ করার আহ্বান জানাচ্ছি।

সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিক ও লেখক জান্নাতুল বাকেয়া কেকা বলেন, ধূমপান না করেও শিশু-কিশোরদের একটি বড় অংশ পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হচ্ছে পাবলিক প্লেসে ৫৯ শতাংশ এবং বাড়িতে ৩১ শতাংশ। পরোক্ষ ধূমপানের কারণে ১৫ বছরের নিচের ৬১ হাজারেরও বেশি শিশু নানা রোগে ভুগছে। তাই অধূমপায়ী ও শিশুদের সুরক্ষায় ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান (ডিএসএ) বাতিল করে সব পাবলিক স্থান ও পরিবহন শতভাগ ধূমপানমুক্ত করা জরুরি।

সভাপতির বক্তব্যে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের রোগতত্ত্ব ও গবেষণা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী বলেন, হৃদরোগ, স্ট্রোক ও শ্বাসতন্ত্রের দীর্ঘমেয়াদি রোগসহ নানা অসংক্রামক রোগের অন্যতম কারণ তামাক। এর কারণে প্রতিবছর দেশে এক লাখ ৬১ হাজারেরও বেশি মানুষ অকালে মারা যায়। তরুণ প্রজন্মকে এ বিপদ থেকে রক্ষায় দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রস্তাবিত সংশোধনী পাস করতে হবে।

এ ছাড়া সংবাদ সম্মেলনে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধনীতে এফসিটিসির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ছয়টি সুপারিশ তুলে ধরা হয়। সেগুলো হলো- অধূমপায়ীদের সুরক্ষায় সব পাবলিক স্থান ও গণপরিবহনে ধূমপানের নির্ধারিত স্থান বাতিল, বিক্রয়কেন্দ্রে তামাকপণ্যের প্রদর্শন নিষিদ্ধ, তামাক কোম্পানির সামাজিক দায়বদ্ধতা কার্যক্রম নিষিদ্ধ, ই-সিগারেটের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে শিশু-কিশোরদের সুরক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ, তামাকপণ্যের খুচরা ও খোলা বিক্রয় বন্ধ এবং সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবার্তার আকার ৫০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৯০ শতাংশ করা।

সংবাদ সম্মেলনে স্বাগত বক্তব্য দেন ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক মো. মাইনুল হাসান সোহেল।  

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএইচআরএফের সদস্য, তামাকবিরোধী সংগঠনের প্রতিনিধিসহ অন্যান্য অংশীজন।  

আরকেআর/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয় এর সর্বশেষ