ঢাকা: শেষবারের মতো বক্তব্য দিয়ে সংসদ সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করলেন আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী। সপ্তম অধিবেশনের প্রথম দিনে মঙ্গলবার (১ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় নিজের বক্তব্য শেষেই স্পিকারের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন তিনি।
১৫ মিনিটের বক্তব্যে তিনি নিজেকে সাচ্চা মুসলমান, বাঙালি ও আওয়ামী লীগার দাবি করে ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন বলে জানান।
দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চেয়ে লতিফ সিদ্দিকী বলেন, আমার কোনো আচরণে দেশবাসী দু:খ পেয়ে থাকলে দেশবাসীর কাছে নতমস্তকে ক্ষমা চাচ্ছি। আমি আমার আসন থেকে পদত্যাগ করছি।
জাতীয় সংসদ সচিবালয় সূত্রে জানা গেছে, ৭৫ কার্যদিবস পর বক্তৃতা করলেন হজ ও তাবলিগ জামায়াত নিয়ে বিরুপ মন্তব্য করে বিতর্কের মুখে থাকা লতিফ সিদ্দিকী।
অধিবেশন কক্ষে ছিলেন না সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিতসহ বেশ কিছু সিনিয়র মন্ত্রী ও এমপিরা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে বিরোধী দল জাতীয় পার্টি অধিবেশন থেকে ওয়াক আউট করেন। ফলে লতিফ সিদ্দিকীর বক্তৃতার সময় জাপার কোনো সদস্যও ছিলেন না।
সন্ধ্যা সাতটা ৭ মিনিটে সংসদ অধিবেশনকক্ষে এসে ট্রেজারি বেঞ্চের সামনের সারির ১৪ নম্বর আসনে বসেন। এ আসনটি মন্ত্রী থাকার সময় থেকেই তার জন্য নির্ধারিত। নিজের অবস্থান পরিষ্কার করতে স্পিকারের কাছে পয়েন্ট অব অর্ডারে বক্তব্য দানের সুযোগ চান লতিফ সিদ্দিকী। স্পিকার তাকে ফ্লোর দিলে ৭টা ২৪ মিনিটে বক্তব্য শুরু করে ৭টা ৩৯ মিনিটে শেষ করেন তিনি।
পদত্যাগের আগে সংসদ অধিবেশনে দাঁড়িয়ে বক্তব্য রাখা বাংলাদেশের ইতিহাসে এটাই প্রথম। এ সময় এমপি পদ থেকে তাকে অপসারণে নির্বাচন কমিশনের এখতিয়ার নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি।
বক্তৃতার শুরুতে লতিফ সিদ্দিকী বলেন, আমি এই সংসদে সাধারণত মৌখিক বক্তৃতা করেছি। আজ বিশেষ একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত বিধায় আমি একটি লিখিত বক্তৃতা নিয়ে এসেছি। মাননীয় স্পিকার, আপনি অনুমতি দিলে লিখিত বক্তব্য পাঠ করবো।
লতিফ সিদ্দিকী স্পিকারের অনুমতি নিয়ে বলেন, আমি মুসলমান, আমি বাঙালি, আমি আওয়ামী লীগার। এ পরিচয় মুছে দেওয়ার মতো শক্তি পৃথিবীতে আর কারো নেই। এই আমার চেতনা, আমার জীবনবোধ, চলার সুনির্দিষ্ট পথ। যে যাই বলুন, প্রচার করুন, সিদ্ধান্ত নেন, এর ব্যতিক্রম কিছু ঘটবে না। আমি মানুষ বলেই আমার ভুল ভ্রান্তি আছে, ত্রুটি আছে, কিন্তু মনুষ্যত্বের স্খলন নেই, মানবতার প্রতি বিশ্বাস হারায় না। যতো বড় আঘাতই আসুক, ধৈর্যহারা হয় না। আমি বিশ্বাস করি, আবার মানেই আলোর হাতছানি, রাষ্ট্র বিভ্রান্ত করলেও আমি ধৈর্য ও সহনশীলতার সঙ্গে মেনে নিয়ে তা মোকাবেলা করলাম।
আবদুল লতিফ সিদ্দিকী বলেন, আমি অভিযোগের টুপি মাথায় নিয়ে সংসদে বসিনি, আমি সংসদে বসেছি মানুষের ভালোবাসা ও মানুষের ফুলের মালা নিয়ে।
তিনি বলেন, আমার যতো আপত্তি সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদের ৪ দফা উল্লেখ করে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনে স্পিকারের চিঠির সম্পর্কে। ৬৬ অনুচ্ছেদের ৪ দফার বর্ণিত নির্দেশনা হল, কোনো ব্যক্তির প্রার্থী হওয়ার যোগ্যতা এবং থাকার বিষয়ে এক্ষেত্রে ৬৬ অনুচ্ছেদের দুই দফা। কারণ, সংসদের ৭০ অনুচ্ছেদের নির্দেশনার ব্যাপারটি স্পষ্ট। এ স্পষ্ট বিষয়টি আপনার বরাতে ধুসর হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, আমি বিবেচনা করি, এ চিঠির কারণে সংসদের সার্বভৌমত্ব ক্ষুন্ন হয়েছে এবং সংবিধানের অপব্যাখ্যা হয়েছে বলে আমি মনে করি। বিনা শুনানিতে কোনো সংসদের আসন সম্পর্কে সিদ্ধান্ত দেওয়া যথাযথ কি-না সে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। আমি আর কথা বাড়াতে চাই না। আপনি আমাকে সময় দিয়েছেন। বিদায় বেলা শুধু এ কথা বলতে চায়।
বহিস্কৃত এই নেতা বলেন, আমি মানুষের জন্য রাজনীতি করেছি, মানুষকে ভালোবেসেছি, বঙ্গবন্ধুকে অনুসরণ করে মানবকল্যাণে শপথ নিয়েছিলাম। বঙ্গবন্ধু কন্যার নেতৃত্বে আমি অনেক চড়াই-উৎরাই পেরিয়েছি। আজকে আমার সমাপ্তির দিন।
দলীয় প্রধান শেখ হাসিনার ইচ্ছার প্রতি সম্মান দেখিয়ে সংসদ সদস্যপদ ছাড়লাম। এ দিনে আমার কারো বিরুদ্ধে কোনো ধরনের বিদ্বেষ, অভিমান এবং অভিযোগ আনছি না। দেশবাসী যদি আমার আচরণে কোনো দুঃখ পেয়ে থাকেন আমি নতমস্তকে তাদের কাছে ক্ষমা চাচ্ছি।
তিনি বলেন, আমি মানুষের ভালোবাসাকে আমার শ্রেষ্ঠ মূলধন মনে করি। সেই ওয়াদা করে সবশেষে আমি বলছি। উপরন্তু অনুমিত হয়েছি, আমার নেতার অভিপ্রায় আমি আর সংসদ সদস্য না থাকি। কর্মী হিসাবে নেতার একান্ত অনুগত ছিলাম। বহিষ্কৃত হওয়ার পর ব্যত্যয় কিংবা ব্যতিক্রম সমুচিত মনে করি না।
ইতিপূর্বে আমার প্রতিবাদ ছিল প্রতিকার পাওয়ার। এখন দ্বিধাহীন কণ্ঠে, ঘৃণা বিদ্বেষ উগড়ে না দিয়ে, কারো বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ না করে দৃঢ়চিত্তে বাংলাদেশ সংসদের আসন ১৩৩ টাঙ্গাইল-৪ আসনের সংসদ সদস্যের পদ থেকে পদত্যাগ করছি।
টাঙ্গাইল-৪ আসনের এই সংসদ সদস্য বলেন, আমি অভিযোগের টুকরি নিয়ে সংসদে দাঁড়াইনি। ভালোবাসার মহিমা বিতরণ করতে সৌহার্দ্য আর প্রীতি-ভালোবাসার মালা সাজিয়ে নিয়ে এসেছি। আমি সব সময়ই অস্পষ্টতা ও ধুসরতা বিরোধী। অস্পষ্টতা, ধুসরতা, কপটতা স্বার্থপরতা সুযোগ সুবিধার পথে হাটাকে অপছন্দ করি। জীবন উৎসর্গ করেছিলাম। মানুষ সমাজ রাষ্ট্র মানবতার সেবায়। নিজের জন্য ভারি ভারি পদ-পদবি করায়ত্ব করতে নয়। আর পদ-পদবির জন্য নিজের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য কালিমালিপ্ত করা আমার স্বভাব বিরুদ্ধ।
তিনি বলেন, অসাম্প্রদায়িক, ইহজাগতিক গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ দ্বারা আমার মনন গঠিত ও বিকশিত এবং প্রতিনিয়ত এর চর্চা ও অনুশীলন করি। অমানুষ নই, ব্রতমান মানুষ। মনুষ্যত্ব ও মানবতার চর্চা অনুশীলন করতে গিয়ে নিজের ভেতরে অনেকগুলো কুঠুরি নির্মাণ করেছি। মানুষ ও মনুষ্যত্বের অনুশীলনে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কুঠুরিতে প্রবেশ করি। সেই কুঠুরির একটা আমার ধর্ম কুঠুরি। সেখানে আমি সাচ্চা মুসলমান। ধর্র্মীয় জীবন একান্তই আমার জীবন। এই জীবন ধারণে।
জনবাহবা বা নিন্দা কোনোটাতেই আমি কুণ্ঠিত, বিব্রত ও ভীতসন্ত্রস্ত হই না। নিজের কাছে নিজেই জবাবদিহি করেই সন্তুষ্ট। জীবনের শেষ প্রান্তে এসে আমার ধর্ম কুঠুরির ভাবজগৎ নিয়ে সমষ্টিতে আলোড়ন-আন্দোলন দেখা দিয়েছে। সমষ্টি আমাকে ত্যাজ্য করেছে। যেভাবেই ভাবা যাক রাজনীতির সামষ্টিক কোনোক্রমেই ব্যষ্টিক বা স্বতন্ত্র অবস্থান স্বীকার করে না। কারণ, রাজনীতি মানবকল্যাণের একটি প্রকৃষ্ট উপায়, কোনো বিচ্ছিন্ন উপায় নয়। অন্যদিকে ব্যক্তি জীবন একান্তই ব্যক্তির। এখানে সমষ্টির প্রবেশ নিষিদ্ধ। ব্যক্তি এখানে সবকিছু।
লতিফ বলেন, আমাকে ষড়যন্ত্রকারী, প্রতিশোধপরায়ন ধর্মদ্রোহী, গণদুশমন, শয়তানের রিপ্রেজেন্টেটিভ বিভিন্ন ঘৃণার পাত্র সাজাতে সবশেষে ধর্মকে প্রতিপক্ষ হিসেবে দাঁড় করিয়ে দেয়। আমি ষ্পষ্ট করে দৃঢ়চিত্তে বলতে চাই, আমি ধর্মবিরোধী নই, আমি ধর্ম অনুরাগী, একনিষ্ঠ সাচ্চা মুসলমান। আমি বলতে সাহস পাই, ধর্মীয় অনুশাসন মানে যেসব করন্ত কাজ ধর্মান্ধ ও মৌলবাদী গোষ্ঠী স্বীয় স্বার্থ চরিতার্থ করতে তৎপর তাদের বিরুদ্ধে শান্তির ধর্ম, ন্যায়ের ধর্ম, সত্যের ধর্ম, অন্ধকার থেকে আলোর দিশারি ধর্ম ইসলামের সঠিক তাৎপর্যকে উর্ধ্বে তুলে ধরতে অম্লান থাকবে আমার পথচলা।
আওয়ামী লীগের সাবেক এই নেতা বলেন, আমার এ মনোভাবের প্রকাশ নিয়ে যতো ষড়যন্ত্র হোক, যতো মিথ্যাচার হোক, যতো আঘাত-প্রতিঘাত আসুক, রাজনৈতিক সংগ্রাম বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আস্থা রেখে যেমন মোকাবেলা করেছি বর্তমানেও এর ব্যত্যয় ঘটবে না। আমি মনে করি, হজ প্রতিপালন ধর্মীয় অনুশাসনের মধ্যে অন্যতম ফরজ। এ ফরজ পালনেও আরো কতোগুলো অবশ্য পালনীয় ধর্মীয় অনুশাসন প্রতিপালন করে, মাত্র একবারই করার কথা। যা নিজেও করেছি। ওয়াজিব সুন্নত পরিহার করে অবশ্য পালনীয় ফরজ তরক করা যারা এ ফরজটি পালনে প্রতি বছর ব্যস্ত তাদের মানসিকতা আর আমার বিবেচনা ভিন্ন। হজ যে একটি বিরাট অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড তা কিন্তু মানতে না চাইলে মিথ্যা হয়ে যায় না। রোজার মাসটি আমার প্রাত্যহিক জীবনের অবশ্য পালনীয় মাস। আমি এই ধর্মীয় আচারটি পালন করি।
তিনি বলেন, মহানবী আল্লাহর প্রেরিত প্রতিনিধি, বিশ্বের শ্রেষ্ঠ দার্শনিক। শূন্য থেকে একক প্রচেষ্টায় রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনে দক্ষ ও সফল রাষ্ট্রনায়ক। আমার চলার পথের আলোকবর্তিকা। আদর ভালোবাসা শ্রদ্ধা ও সম্মানে নিজের বুকে আগলে আব্দুল্লাহপুত্র মোহাম্মদ বলে আদর প্রকাশে কুণ্ঠিত, ভীত বা শঙ্কিত নই। এই দুর্লভ মানব জীবন সামনে মহানবীর আদর্শিক জীবন চলার নির্দেশনা থাকার পরও কি সুন্দরের আরাধনা মনে জাগবে না ?
সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, যতোবার বলতে বলা হবে ততোবার বলবো, তাবলিগ প্রচারকারীরা যদি ধর্মপ্রচারের সঙ্গে সমাজ রাষ্ট্র চেতনা বৃত্তির দিকে মনোযোগী হতেন তাহলে তাবলিগের যে প্রভাব আমাদের সমাজ জীবনে প্রতিফলিত তা আরো ফলবতী হতো, কার্যকর ভূমিকা রাখতো। নবী (স.) কখনো জীবনকে অস্বীকার করে ধর্ম পালন করতে বলেননি। জীবনের জন্য ধর্ম অপরিহার্য। ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করতে বিদায় হজের ভাষণে নিষেধ করে গেছেন। যারা অসাম্প্রদায়িক ও ইহজাগতিকতার কথা প্রচার করেও ধর্মানুগ নীতি নিয়ে শোরগোল তোলেন তাদের বিষয় নীরব থাকাই সমীচীন মনে করি।
তিনি বলেন, এমন বহিষ্কারের খড়গ এবারই প্রথম নয়। স্কুল, কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও চারবার বহিষ্কৃত হয়েছি। বাঙালির আত্মপরিচয়ের সরব ঘোষণার কারণেই। দল থেকে দুইবার বহিষ্কৃত হয়েছি দলীয় কর্মকাণ্ড, দুর্বল নেতৃত্বের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছি বলে। এবারও কিন্তু ধর্মনিরপেক্ষ, অসাম্প্রদায়িক ইহজাগতিক মনোভাব প্রকাশ করার কারণেই আমি দল থেকে বহিষ্কৃত, মন্ত্রিসভা থেকে অপসারিত হয়েছি। আমার প্রেসিডিয়াম সদস্য পদ হরণ করা হয়েছে। আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপন ও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ কতোখানি যৌক্তিক, সে বিষয়ে বলতে চাই, নিকট অতীতে মোহাম্মদ হানিফ যখন আওয়ামী লীগের ঘোষণাপত্র থেকে ধর্ম নিরপেক্ষ সাম্প্রদায়িক নীতি আদর্শ বাদ দিতে ওকালতি করেন তখন তার এ তৎপরতার বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলাম। তখন ধর্মানুভূতিতে আঘাতের অভিযোগ ওঠেনি। কারণ, দল তখন ক্ষমতায় ছিল না, দলের অবস্থা এমন রমরমা ছিল না।
বক্তৃতার শেষ পর্যায়ে টাঙ্গাইল-৪ আসন থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দেন লতিফ সিদ্দিকী। তিনি বলেন, আমার নেতার অভিপ্রায়, আমি যেন সংসদ সদস্য পদে না থাকি। কারো প্রতি কোনো ঘৃণা-বিদ্বেষ প্রকাশ করবো না, অভিযোগও নয়। আমি জাতীয় সংসদ ১২৩, টাঙ্গাইল-৪ আসন থেকে পদত্যাগ করছি।
স্পিকারকে তিনি বলেন, আপনি চাইলে পদত্যাগপত্র পাঠ করে শুনাতে পারি। এ সময় স্পিকার বলেন, তার প্রয়োজন হবে না।
এর পর তার বক্তৃতা শেষ করে অধিবেশনকক্ষ বের হয়ে যান লতিফ সিদ্দিকী।
এর আগে গত ২৩ আগস্ট নিজের সংসদ সদস্য পদ থাকা না থাকার বিতর্কের শুনানিতে পদত্যাগ করবেন বলে জানিয়েছিলেন পবিত্র হজ নিয়ে বিরুপ মন্তব্য করায় দলীয় পদ ও মন্ত্রিত্ব হারানো আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী। নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ওই শুনানিতে অংশ নিয়ে তিনি বলেন, আমি এমপি পদ থেকে পদত্যাগ করবো। এটি নিয়ে বিতর্কের কিছু নেই, শুনানির কিছু নেই।
তবে সেদিন শুনানি থেকে বের হয়েই পদত্যাগ করবেন এবং সেটি মাত্র পাঁচ মিনিটের বিষয় বলে জানান লতিফ সিদ্দিকী। তার এ বক্তব্য শুনে ৬ সেপ্টেম্বর পরবর্তী শুনানি ও আদেশের দিন ধার্য করেছে ইসি।
ধারণা করা হচ্ছে, পরে সংসদ ও জাতির কাছে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করে তারপর পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন তিনি। এ কারণেই সংসদে যোগ দিয়ে শেষবারের মতো বক্তব্য দিলেন তিনি।
নিউইয়র্কে একটি অনুষ্ঠানে লতিফ সিদ্দিকী পবিত্র হজ নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করার পর প্রথমেই মন্ত্রিসভা থেকে তাকে বাদ দেয় সরকার। এরপর আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম থেকে তাকে সরিয়ে দেওয়া হয়। আরও পরে তার প্রাথমিক সদস্যপদও বাতিল করে দলটি। আর সবশেষ তার সংসদ সদস্য পদ বাতিলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে দু’পক্ষকে নিয়ে শুনানির আয়োজন করে নির্বাচন কমিশন।
গত ১৩ জুলাই প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দীন আহমদকে চিঠি দেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এমপি। এতে লতিফ সিদ্দিকীর এমপি পদ থাকা না থাকার বিষয়ে সিদ্ধান্ত চাওয়া হয়। সে মোতাবেক বিরোধটি নিষ্পত্তির প্রক্রিয়া হাতে নেয় ইসি।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০১, ২০১৫
এসএম/এএসআর
** সংসদ অধিবেশনে লতিফ সিদ্দিকী
** আমি মুসলমান, আমি বাঙালি, আমি আওয়ামী লীগার