ঢাকা: শুধু ভাড়া আদায়টা যেন মুখ্য বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে বাস পরিবহন মালিকদের। যাত্রী সেবার দিকে তাদের কোন নজর নেই।
শুক্রবার আর এক বার তা হাড়ে হাড়ে টের পাওয়া গেলো হানিফ পরিবহনে। বাস চালক-সুপারভাইজরের খামখেয়ালির মাশুল গুণতে হল বেনাপোল থেকে ঢাকাগামী যাত্রীদের।
ঢাকার উদ্দেশ্যে বেলা সাড়ে ১২টার দিকে বেনাপোল থেকে হানিফ পরিবহনের বাস ছাড়ার কথা। এমনটাই জানিয়েছিলেন হানিফ পরিবহনের বেনাপোল টিকিট কাউন্টারের ম্যানেজার। কিন্তু বাস ছাড়ল ২০ মিনিট দেরিতে অর্থাৎ ১২টা ৫০ মিনিটে।
দূরপাল্লার বাস হলেও বেনাপোল থেকে ঢাকায় আসার পথে প্রত্যেক পরিবহন নাভারন, ঝিকরগাছা, যশোরের পালপাড়া ও খাজুরামোড় বাসস্ট্যান্ড, মাগুরা বাস টার্মিনাল ও আড়পাড়ায় কাউন্টার থেকে যাত্রী নিয়ে থাকে। এরপর কাউন্টার ছাড়াও পথে পথে যাত্রী তোলা কোনো ব্যাপার নয়।
যদিও ফরিদপুরের মধুখালীতে প্রত্যেক পরিবহনের নিজস্ব চেকার আছে। যেন পথে পথে যাত্রী তুলে দূরপাল্লার যাত্রীদের ভোগান্তিতে না ফেলে। তবে বাড়তি যাত্রীর ভাড়া থেকে একটি অংশ চেকারকে দিলে সব ঠিক।
পথের নির্ধারিত কাউন্টার থেকে যাত্রী তোলার পর হানিফ পরিবহনের বাসটি পৌনে পাঁচটার দিকে সটান ঢুকে গেল ফরিদপুরের বাঘাট-এর একটি রেস্টুরেন্টে। কেবল দূরপাল্লার যাত্রীদের টার্গেট করেই এ হোটেলটি খোলা হয়েছে। স্বভাবতই দাম অনেক বেশি।
অনেক যাত্রী আপত্তি তুললেন, দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে গিয়ে তো ফেরির জন্য লাইনে অপেক্ষা করতে হবে। সেখানেই না হয় খাবার খাওয়া যাবে। আর ফেরির ভেতর তো হোটেল আছেই। কিন্তু আপত্তি টিকল না।
বাস ঢুকে গেল। বাসের সুপারভাইজর জানালেন, খাবারের জন্য ২০ মিনিট সময় বরাদ্দ। একজন যাত্রী বলে উঠলেন, এই বিকেল পাঁচটায় কে খাবে। তোমরা ফ্রি খাবারটা সেরে নাও।
অবশ্য জনা পাঁচেক যাত্রীকে খাবার খেতেও দেখা গেল।
আধাঘণ্টা পর বাস রওনা হয় দৌলতদিয়া ফেরিঘাটের উদ্দেশ্যে। ঘাটে পৌছার দেড় ঘণ্টা পর ফেরি মিলল কপালে। পদ্মায় স্রোত থাকলেও বাতাস না থাকায় ঢেউ ছিল না। চল্লিশ মিনিটে পার হওয়া গেল পদ্মা। পাটুরিয়া ফেরিঘাট ও মানিকগঞ্জ থেকেও বেশ কিছু যাত্রী তোলা হল।
আমিনবাজারের মমতাজ ফিলিং স্টেশন থেকে শুরু হল তীব্র যানজট। গাবতলীর হানিফ পরিবহন টিকিট কাউন্টারে আসতে লেগে গেল একঘণ্টা। রাত ১০টায় গাবতলী হানিফ কাউন্টারে গিয়ে বাস পৌঁছুলো।
বাসটির যাত্রীরা কেউ নামবেন ফার্মগেট, কেউবা আবার সায়েন্সল্যাবরেটরি-শাহবাগ-গুলিস্তান-তাঁতীবাজার যাবেন।
কিন্তু গাবতলীর কাউন্টারের সামনে বাস থামার পর সুপারভাইজর সাফ বলে দিলেন, আপনারা সবাই নেমে যান। বাস আর যাবে না। আমরা যশোর ট্রিপে যাব।
যাত্রীদের কোন কথাই তারা পাত্তা দিলেন না। বেনাপোল কাউন্টার থেকে বার বার বলা হয়েছিল- বাস যাবে আসাদগেট-শুক্রাবাদ-বাংলামোটর-মিন্টোরোড়-কাকরাইল হয়ে ফকিরাপুল-আরামবাগে।
হানিফের সুপারভাইজর মনির বলেন, আমি তো ফকিরাপুল-আরামবাগে যেতে চেয়েছিলাম। কিন্তু ম্যানেজার রেজাউল জানিয়েছেন বাস গাবতলী থাকবে। কোথাও যাবে না। আমার ভাই করার কিছু নেই।
বাংলাদেশ সময়: ১০২৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১২, ২০১৫
এসএস/জেডএম